কলকাতা: দল বিপাকে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটা সময় ১০৩/৬ হয়ে গিয়েছিল ভারত। আর এক উইকেটের পতন মানে পরাজয়ের আশঙ্কা জাঁকিয়ে বসা গোটা শিবিরে।
ঠিক সেই সময়ই ব্যাট হাতে এক অনবদ্য লড়াই শুরু করেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। ঝকঝকে হাফসেঞ্চুরি করে ভারতীয় দলকে অক্সিজেন দিলেন বঙ্গ উইকেটকিপার-ব্যাটার। সোমবার, টেস্ট ম্যাচের শেষ দিন যে ভারতীয় দল জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপাতে পারল, তার নেপথ্যেও ঋদ্ধির অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস। যে ইনিংস দেখে ফের ঋদ্ধির নামে জয়জয়কার শুরু হয়ে গিয়েছে।
যদিও শুনলে চমকে উঠবেন যে, ঋদ্ধি যখন দেশের হয়ে মাঠে লড়াই করছেন, তখন একটি যুদ্ধে লড়তে হচ্ছে তাঁর স্ত্রী দেবারতিকেও। প্রতিপক্ষ যেখানে অদৃশ্য। কারণ, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ঋদ্ধির স্ত্রী। প্রত্যেক দিন চলছে প্লেটলেট কাউন্ট নিয়ে উদ্বেগ। স্ত্রীর অসুস্থতার খবর ভীষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে ঋদ্ধিমানকেও। কিন্তু দেশের প্রতি কর্তব্যে তিনি অবিচল। যাবতীয় উদ্বেগ মাঠের বাইরে রেখে অসমসাহসী ইনিংস খেলেছেন। পঞ্চম দিন উইকেটের পিছনে গ্লাভস হাতেও সাবলীল। ঋদ্ধির যে মানসিকতার হদিশ পেয়ে কুর্নিশ করছেন সকলে।
রবিবার তিনি যখন ব্যাট করতে নামলেন, ভারতের স্কোর ১০৩/৬। নিউজিল্যান্ডের চেয়ে মাত্র ১৫২ রানে এগিয়ে। কোনও কোনও মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়ে গিয়েছে যে, ভারতই না ম্য়াচ হেরে বসে!
আরও পড়ুন: ৩৬ অল আউটের পর বাদ পড়েছিল শুধু ঋদ্ধিই, ছাত্রের আলোয় ফেরার দিন ক্ষুব্ধ কোচ
পরের তিন ঘণ্টা সাত মিনিট কানপুরের গ্রিন পার্ক দেখল এক বাঙালির অসামান্য লড়াই। ১২৬ বলে ৬১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha) শুধু সমস্ত সমালোচনা ও অবসর-জল্পনাকে থামিয়েই দিলেন না, দলকে দিলেন অক্সিজেন। প্রথমে শ্রেয়স আইয়ারের সঙ্গে ৬৪ রান ও পরে অক্ষর পটেলের সঙ্গে ৬৭ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিতে শিবিরে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করেন বঙ্গ তারকা। ১১ মাস পরে দলে ফিরেই ঝকঝকে ইনিংস।
কানপুরে ঋদ্ধিকে লড়াই করতে হয়েছিল চার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। নিউজিল্যান্ডের বোলিং, ঘাড়ে অসহ্য যন্ত্রণা আর ফের দল থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কার পাশাপাশি ডেঙ্গি আক্রান্ত স্ত্রীকে নিয়ে উদ্বেগ। সব প্রতিকূলতাকে বাউন্ডারির বাইরে উড়িয়ে লড়াইয়ে জিতেছেন ঋদ্ধিই। মাঠ ছেড়েছেন মাঠা উঁচু করে। ব্যক্তিগত উদ্বেগকে পাশে সরিয়ে দেশের হয়ে পারফর্ম করে মন জিতে নিয়েছেন ঋদ্ধিমান।