কলকাতা: কোচ হিসাবে প্রথম যখন রাহুল দ্রাবিড়কে পেয়েছিলেন, তাঁর নামের পাশের 'বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য' তকমা বসেনি। তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএলে শোরগোল ফেলেননি। সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে খেলা তখন তাঁর স্বপ্ন।


শুভমন গিল হয়তো ভাবতে পারেননি যে, তিনি যখন জাতীয় দলের হয়ে সত্যি সত্যি টেস্ট ম্যাচ খেলবেন, কোচ হিসাবে ফিরে পাবেন রাহুল দ্রাবিড়কে! নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কানপুরে প্রথম টেস্টে ভারতীয় দলের ইনিংস ওপেন করে হাফসেঞ্চুরি করার পর কোচ দ্রাবিড় নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা শোনালেন পঞ্জাবের তরুণ তুর্কি।


প্রথম দিনের খেলার শেষে শুভমনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে দ্রাবিড়ের প্রশিক্ষণে খেলার পর ফের কোচ হিসাবে দ্য ওয়ালকে পাওয়ার অনুভূতি কীরকম? এবিপি লাইভের প্রশ্নে শুভমন বলেন, 'আমাকে রাহুল স্যার সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। বয়সভিত্তিক দলে যাঁর প্রশিক্ষণে খেলেছি, সিনিয়র পর্যায়েও তাঁকে কোচ হিসাবে পাওয়াটা দুর্দান্ত ব্যাপার। আমার সঙ্গে ওঁর দারুণ বোঝাপড়া। তাতে তফাত তো হয়ই।' শুভমন আরও বলেন, 'শুধু অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে নয়, আমি অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট পুরোটাই খেলেছি রাহুল স্যারের প্রশিক্ষণে। ভারতীয় এ দলে ও বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতেও সময় কাটিয়েছি স্যারের সঙ্গে।'


আরও পড়ুন: ৭ বছর আগে গ্রিনপার্কেই বাঁচিয়েছিলেন কেরিয়ার, হতাশা কাটিয়ে আলোর পথে শ্রেয়স


কানপুরের গ্রিন পার্কে স্পিনারদের বল বনবন ঘুরছে। পেসারদের বল কোনওটা লাফাচ্ছে। তো কোনওটা আবার এমনিই নীচু হচ্ছে যে, উইকেটকিপারের কাছে পৌঁছচ্ছে ৩ ড্রপ পড়ে। দেখে কে বলবে যে, কানপুরের গ্রিন পার্কে (Green Park) প্রথম দিনের ম্যাচ চলছে। এ যেন পঞ্চম দিনের বাইশ গজ। যেখানে বোলারদের সামনে মাঝেমধ্যেই অসহায় দেখাচ্ছে ব্যাটারদের।


আর সেই কঠিন পিচে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের শেষে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতকে (Ind vs NZ) স্বস্তিতে রাখল ত্রয়ীর ব্যাট। শুভমন গিল (Shubhman Gill), শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) ও রবীন্দ্র জাডেজা (Ravindra Jadeja)। ইনিংস ওপেন করতে নেমে শুভমন করলেন ৯৩ বলে ৫২ রান। অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে শ্রেয়স ৭৫ রানে অপরাজিত। আর জাডেজা ঝকঝকে হাফসেঞ্চুরি করে ক্রিজে রয়েছেন। প্রথম দিনের শেষে ভারতের স্কোর ২৫৮/৪। প্রথম দিনের শেষে টিম ম্যানেজমেন্টকেও যা কিছুটা স্বস্তি দেবে।


বৃহস্পতিবার ভারতের উদ্ধারকর্তা ত্রয়ীর ব্যাটিং ঘরানার অমিল থাকলে, তাঁদের পথে সাদৃশ্যও নেহাত কম নেই। যেমন শুভমন। টেস্টে সাড়া জাগিয়ে শুরু করেও দলে নিয়মিত নন। এমনকী, কে এল রাহুল ফিট থাকলে শুভমনের নিউজিল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে খেলারই কথা নয়। ময়ঙ্ক অগ্রবালের সঙ্গে সেক্ষেত্রে ওপেন করতেন রাহুলই।


শুভমন সুযোগ পেলেন। আর চাপের মুখে হাফসেঞ্চুরি করে কিউয়ি শিবিরে পাল্টা লড়াই পৌঁছে দিলেন। সেই সঙ্গে পঞ্জাবের তরুণ তুর্কি দেখিয়ে দিলেন, সুযোগ পেলে নিজেকে মেলে ধরতে প্রস্তুত তিনি।