কলকাতা: ইডেনের ম্যাচ ছিল কার্যত নিয়মরক্ষার। কিন্তু সেই ম্যাচ যে এভাবে একপেশে হয়ে দাঁড়াবে, ভারতের অতি বড় সমর্থকও হয়তো তা ভাবতে পারেননি।


নিউজিল্যান্ডকে ৭৩ রানে দুমড়ে দিয়ে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল ভারত। দেখে কে বলবে, ১৫ দিন আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ভারতকে। আর নিউজিল্যান্ড খেলেছিল ফাইনালে। এই নিউজিল্যান্ডের কাছেই বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে সেমিফাইনাল সম্ভাবনাকে ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে দিয়েছিল ভারত!


১৫ দিনে যেন গোটা দলের শরীরী ভাষাটাই বদলে গিয়েছে। যার প্রতিফলন দেখা গেল মাঠে। নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের মধ্যে দিয়ে।


ইডেন (Eden Gardens) তাঁকে কোনওদিন খালি হাতে ফেরায়নি। টেস্ট অভিষেক এই মাঠে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে-তে বিশ্বরেকর্ডের ২৬৪ এই মাঠে। ইডেন আর রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) যেন সমার্থক হয়ে উঠেছেন।


রবিবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফের জ্বলে উঠল রোহিতের ব্যাট। ৩১ বলে ৫৬ রান করলেন তিনি। ইনিংস সাজানো ৫ চার ও ৩ ছক্কায়। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাট করে ভারত তুলল ১৮৪/৭।


কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও অধিনায়ক রোহিত শর্মার যুগলবন্দি দেখার অপেক্ষায় ছিল ইডেন জনতা। ইডেন অভিষেকে অন্তত সেই জুটি দেখিয়ে দিল যে, সাহসী ক্রিকেট খেলতে পিছপা হবে না। শিশির আতঙ্কের জন্য যেমন বছরের এই সময় উপমহাদেশে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যে কোনও দলের অঙ্ক হল, টস জেতো আর প্রথমে ফিল্ডিং করে নাও। যাতে করে পরের দিকে ভেজা বল গ্রিপ করতে গিয়ে বোলাররা সমস্যায় না পড়ে। বরং শুরুতে ফিল্ডিং করে নাও। আর পরের অর্ধে প্রতিপক্ষ বোলারদের শিশির-সমস্যাকে কাজে লাগাও। কারণ, শিশির পড়া মানে শুধু যে বলই পিচ্ছিল হবে তাই নয়, পিচে পড়ে ব্যাটে আসবেই দ্রুত গতিতে। ফলে শট খেলার সুবিধা হবে ব্যাটারদের।


কিন্তু রোহিত শর্মা টস জিতে ব্যাটিং নিলেন। এবং সাফ জানালেন, তিনি কঠিন পরিস্থিতিতে দল কেমন খেলে, তা দেখে নিতে চান। সিরিজ আগেই ২-০ জেতা হয়ে গিয়েছে। ইডেনে হারলেও ট্রফি উঠবে রোহিতের হাতেই। হোয়াইটওয়াশের চেয়েও রোহিত-দ্রাবিড় জুটির কাছে প্রাধান্য পেল শিশির আতঙ্ক কাটিয়ে ওঠা।


ঝোড়ো শুরু করে মাত্র ৬.২ ওভারে ৬৯ রান যোগ করলেন রোহিত ও ঈশান কিষাণ। যাঁকে কে এল রাহুলের পরিবর্তে এই ম্যাচে খেলানো হয়েছে। শেষের দিকে শ্রেয়স আইয়ার (২০ বলে ২৫ রান), বেঙ্কটেশ আইয়ার (১৫ বলে ২০), হর্ষল পটেল (১১ বলে ১৮ রান) ও দীপক চাহার (৮ বলে অপরাজিত ২১ রান) ভারতের রানকে দুশোর কাছাকাছি নিয়ে গেলেন।


জবাবে ব্যাট করতে নেমে কিউয়ি ব্যাটাররা কখনওই স্বস্তিতে ছিলেন না। একমাত্র মার্টিন গাপ্টিল (৩৬ বলে ৫১) ছাড়া আর কেউই রান পাননি। ৩ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট অক্ষর পটেলের। হর্ষল পটেলের ২ উইকেট। একটি করে উইকেট দীপক চাহার, বেঙ্কটেশ আইয়ার ও যুজবেন্দ্র চাহালের।