মেলবোর্ন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে (IND vs PAK) এবারের বিশ্বকাপে (T20 World Cup) নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারতীয় দল। জয়ের জন্য ভারতীয় দলের ১৬০ রানের প্রয়োজন ছিল। ভারতীয় টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় একসময় ৩১ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিরাট চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারতীয় দল। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya) ও বিরাট কোহলি (Virat Kohli) পঞ্চম উইকেটে শতাধিক রানের পার্টনারশিপ গড়েন। হার্দিক ৪০ রানে আউট হলেও, শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন কোহলি। তিনিই অপরাজিত অর্ধশতরানে ভারতকে ম্যাচ জেতালেন।


বিরাট-হার্দিকের শতাধিক 


মেলবোর্নের মতো বড় মাঠে ১৬০ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা একেবারেই সহজ ছিল না। ভারতীয় ওপেনারদের ভালভাবে শুরুটা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ১০ রানের মধ্যেই দুই ভারতীয় ওপেনার রাহুল (৪) ও রোহিত শর্মা (৪) সাজঘরে ফিরে যান। ৩১ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারতীয় দল। রানের গতিও ছিল খুবই কম। এখান থেকেই ভারতীয় ইনিংসের হাল ধরেন কোহলি ও হার্দিক পাণ্ড্য। প্রথমে একটু সামলে তারপর আক্রমণের পথ বেছে নেন দুইজন। বিশেষত পাক স্পিনার মহম্মদ নওয়াজের বিরুদ্ধে দারুণ আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করেন দুই ভারতীয় তারকাই। 


শাহিন আফ্রিদির বলে চার মেরে ৪৩ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন বিরাট কোহলি। হার্দিক অবশ্য ৪০ রানেই সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু কোহলি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন। ৮২ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। ইনিংসের শেষ বলে ভারতের হয়ে জয়সূচক শটটি মারেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চার উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় ভারতীয় দল। এই জয়ের ফলে গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারের ক্ষততে কিছুটা হলেও যে মলম লাগবে, তা বলাই বাহুল্য।


বল হাতে দুরন্ত অর্শদীপ


টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। তিন পেসার নিয়ে আজ খেলতে নেমেছিল ভারতীয় দল। ভুবনেশ্বর কুমার ও মহম্মদ শামির সঙ্গে তরুণ অর্শদীপ সিংহকেও দলে নেওয়া হয়েছিল দলে। এশিয়া কাপে গত ভারত-পাকিস্তান মোকাবিলায় অর্শদীপ আসিফ আলির ক্যাচ মিস করে রাতারাতি প্রবল সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। সেই অর্শদীপই আজ তিন উইকেট নিয়ে সব সমালোচনার জবাব দিলেন। তিনিই পাকিস্তানকে প্রথম ধাক্কাটা দেন। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম বলেই বাবর আজমকে শূন্য রানে ফেরত পাঠান বাঁ-হাতি ভারতীয় বোলার। 


বাবরের ওপেনিং পার্টনার মহম্মদ রিজওয়ানও মাত্র ৪ রান করেই সাজঘরে ফেরেন। তিনিও অর্শদীপেরই শিকার হন। তবে এরপরেই পাকিস্তানের হয়ে ইনিংসের হাল ধরেন শান মাসুদ ও ইফতিকার। তৃতীয় উইকেটে দুইজনে মিলে ৭৬ রান যোগ করেন। ১২তম ওভারে অক্ষর পটেলের বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন ইফতিকার। তবে অর্ধশতরান করার পর বেশিদূর এগোতে পারেননি ইফতিকার। তাঁকে ৫১ রানে ফেরান মহম্মদ শামি। ইফতিকার আউট হতেই পর পর উইকেট হারায় পাকিস্তান। শাদাব খান (৫), হায়দার আলি (২), মহম্মদ নওয়াজ (৯), আসিফ আলি (২) কেউই রান পাননি।


তবে শান মাসুদ এক দিকে টিকে থাকেন। তিনে শেষ পর্যন্ত ৫২ রানে অপরাজিত থেকে পাকিস্তানকে ১৫০ রানের গণ্ডি পার করান। শাহিন আফ্রিদিও আট বলে ১৬ রানের ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন। নির্ধারিত বিশ ওভারে আট উইকেটে ১৫৯ রান তোলে পাকিস্তান। অর্শদীপ ৩২ রানের বিনিময়ে ও হার্দিক ৩০ রানে তিন উইকেট নেন। শামি ও ভুবনেশ্বর কুমার একটি করে উইকেট নিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: এমন মুহূর্ত আর কখনও আসবে না, পাকিস্তান ইনিংসকে ভেঙে বললেন অর্শদীপ