পারথ: চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) প্রথম হারের স্বাদ পেল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে হারিয়ে দিল টিম ইন্ডিয়াকে। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে সূর্যকুমার যাদবের মরিয়া লড়াইও ব্যর্থ হল। যদিও ম্যাচের পর দুটি সুযোগ নষ্ট নিয়ে আলোচনা শুরু হল ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। বলাবলি শুরু হল, এই দুই সুযোগ নষ্টের খেসারত হিসাবে কি ম্যাচ হারতে হল টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)?


দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের ১২তম ওভার। বোলার ছিলেন আর অশ্বিন। তাঁর ওভারের পঞ্চম বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুললেন এইডেন মারক্রাম। তিনি তখন ব্যক্তিগতভাবে ৩১ বলে ৩৫ রানে ব্যাট করছিলেন। ডিপ মিড উইকেটে ফিল্ডিং করছিলেন কোহলি। ফিটনেসের দিক থেকে যিনি ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা। ফিল্ডিংয়েও ক্ষিপ্র। অথচ কোহলি মারক্রামের লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দেন। বোলার অশ্বিন যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে, এরকম ক্যাচ নষ্ট হতে পারে। তাও আবার কোহলির হাত থেকে। কোহলি নিজেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাকিয়ে ছিলেন শূন্য দৃষ্টিতে। তখনও ৫০ বলে ৭১ রান প্রয়োজন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ও মারক্রাম ফিরলে তা বিরাট ধাক্কা হতো তেম্বা বাভুমাদের শিবিরে।


দ্বিতীয় সুযোগ নষ্ট ত্রয়োদশ ওভারে। বোলার মহম্মদ শামি। তাঁর দ্রুত গতির শর্ট বল কোনও মতে ব্যাটে ঠেকিয়েই সিঙ্গলস নিতে দৌড়েছিলেন ডেভিড মিলার। ২৪ বলে তখন তাঁর মাত্র ১৫ রান। কভার থেকে দৌড়ে গিয়ে বল ধরে আন্ডার আর্ম থ্রো করেন রোহিত। কিন্তু তা স্টাম্পে লাগেনি। রিপ্লেতে দেখা যায়, ফ্রেমেই ছিলেন না মিলার। এমনকী, রোহিত দৌড়ে গিয়েও স্টাম্প ভেঙে দিতে পারতেন।


শেষ পর্যন্ত মারক্রাম ৪১ বলে ৫২ রান করেন। মিলার ৪৬ বলে ৫৯ রান করে ম্যাচ জেতান প্রোটিয়াদের। দুই ফিল্ডিং ব্যর্থতাই কাঁটা হয়ে বিঁধল ভারতীয় শিবিরে।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম হার ভারতের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হেরে গেল রোহিত বাহিনী। পারথে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে হার রোহিতদের। সূর্যকুমার যাদবের লড়াকু অর্ধশতরানে সম্মানজনক স্কোর বোর্ডে তুলে নিয়েছিল ভারত। কিন্তু পাল্টা প্রত্যুত্তরে জোড়া অর্ধশতরান এল দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। ৫২ রানের ইনিংস খেললেন এইডেন মারক্রাম। অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেললেন ডেভিড মিলার। 


টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আগের ম্য়াচে অর্ধশতরান হাঁকিয়েছিলেন হিটম্যান। এদিন খাতাও খুলেছিলেন ছক্কা হাঁকিয়ে। কিন্তু এনগিডির বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান মাত্র ১৫ রান করে। অফফর্ম অব্য়াহত কে এল রাহুলের। একই ওভারে ৯ রান করে ফিরলেন রাহুলও। পরপর ২ টো বাউন্ডারি হাঁকালেও ১২ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় বিরাট কোহলিকে। এনগিডির শিকার হন তিনিও। একাদশে সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন দীপক হুডা। খাতা খোলার আগেই আনরিচ নোখিয়ার বলে ক্যাচ আউট হলেন। হার্দিক পাণ্ড্য ২ রান করে ফেরেন। ৮.৩ ওভারে ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল টিম ইন্ডিয়া। 


এরপরই ব্যাট হাতে কার্তিক, অশ্বিনকে সঙ্গে নিয়ে মারমুখি মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেন সূর্যকুমার। গিয়ার বদলে ৪০ বলে ৬৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। নিজের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা হাঁকান এই মুম্বইকর। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ বোর্ডে তুলে নেয় ভারত। যদিও সূর্যর সেই লড়াই কাজে লাগল না।