মেলবোর্ন: বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিন ভারতের দুরন্ত পারফরম্যান্স স্বাভাবিকভাবেই তৃপ্তি দিয়েছে লিটল মাস্টার সুনীল গাওস্কর। সেইসঙ্গে গাওস্কর ভারতের অস্থায়ী অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানেরও প্রশংসা করেছেন। তবে কিছুটা সতর্কভাবে। এ ব্যাপারে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এত তাড়াতাড়ি কোনও উপসংহারে আসা উচিত নয়। আমি যদি বলি ও অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়েছে। তাহলে অভিযোগ উঠবে যে, আমি মুম্বইয়ের খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়াচ্ছি। এমনই সব ঘটনা তো ঘটে। তাই এত তাড়াতাড়ি আমি তা করব না।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে রাহানের নেতৃত্ব সবার প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর বেশ কিছু মুভ বিরাট কোহলির থেকে আলাদা দেখিয়েছে। ইনিংসের শুরুতেই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে আক্রমণে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত খেটে গিয়েছে। অজি ইনিংসের ১১ তম ওভারে অশ্বিনের হাতে বল তুলে দেন রাহানে। অভিজ্ঞ স্পিনার অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ধস নামানোর কাজ শুরু করেন। প্রথমেই তিনি তুলে নেন ম্যাথু ওয়েডকে। এরপরই সবচেয়ে বড় শিকার। স্টিভ স্মিথকে খাতা খুলতে না দিয়েই প্যাভিলিয়নের পথ দেখান অশ্বিন। এক্ষেত্রে রাহানের ফিল্ড প্লেসিংও নজর কেড়ে নিয়েছে। লেগ গালিতে স্মিথের ক্যাচ ধরেন চেতেশ্বর পূজারা। এরপর মারনাস লাবুশানের জন্যও বিশেষ ফিল্ড সাজিয়েছিলেন রাহানে। ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার গেলে শুভমন গিল তাঁর ক্যাচ ধরেন। এই ঘটনাগুলিই রাহানের বুদ্ধিদীপ্ত ফিল্ড প্লেসিংয়ের নজির সামনে এনেছে। আর এ জন্য গাওস্কর ৩২ বছরের মুম্বইকরের প্রশংসা করেছেন।
গাওস্কর বলেছেন, গত দুটি টেস্ট ও একটি একদিনের ম্যাচে ওর অধিনায়কত্বে যেটা দেখেছি, তা হল ফিল্ডারের কোথায় রাখা যায়, সে সম্পর্কে ওর দারুণ ধারনা রয়েছে। তবে একইসঙ্গে বলতে হয় যে, বোলারদেরও ফিল্ডিং অনুযায়ী বল করতে হবে। আজ যেমন হল, তেমনভাবে বোলাররা বল করলে অধিনায়ককেও খুব কার্যকরী দেখায়।
ভারতের প্রথম দিনের সাফল্যের কৃতিত্ব গাওস্কর শুধু রাহানেকেই দেননি। একইসঙ্গে জসপ্রিত বুমরাহ,অশ্বিন ও অভিষেককারী পেসার মহম্মদ সিরাজেরও প্রশংসা করেছেন। সিরাজ সাধারণত নতুন লাল বলে বোলিং করতে সিদ্ধহস্ত। কিন্তু এদিন তাঁকে লাঞ্চের পর আক্রমণে আনা হয়েছিল।
গাওস্কর বলেছেন, বস্কিং ডে টেস্টে শুধু অধিনায়ক রাহানেই নয়, উজ্জ্বল ছিলেন বোলাররাও। যেভাবে অশ্বিন ও বুমরাহ বোলিং করেছে, যেভাবে অভিষেকেই সিরাজ বল করেছে, তার প্রশংসা করতেই হয়। ভেবে দেখুন, নতুন বলের বোলার দ্বিতীয় সেশনের আগে হাত ঘোরানোর সুযোগই পায়নি। প্রথম বল করতে এল ২৭ তম ওভারে। তারপরও বল হাতে দারুণ স্পিরিট দেখাল। এই বিষয়গুলিই উপভোগ করার মতো।
উল্লেখ্য, প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ১৯৫ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে। দিনের শেষে ভারতের রান ১ উইকেটে ৩৬।