কলকাতা: মাঝ নভেম্বর পেরিয়ে গিয়েছে। বাতাসে শীতের আমেজ। সূর্যাস্তের পর থেকেই শিশির পড়তে শুরু করছে। যা প্রভাব ফেলছে ক্রিকেট ম্যাচেও।


ভারত-নিউজিল্যান্ড (Ind vs NZ) টি-টোয়েন্টি সিরিজে শিশির ফ্যাক্টরকে লঘু করার জন্য ম্যাচের সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে এনেছিলেন ভারতীয় বোর্ডের কর্তারা। যাতে শিশিরে মাঠ ভিজে যাওয়ার আগে অন্তত একটা ইনিংস শেষ করে ফেলা যায়। কিন্তু, তাতে কি হিতে বিপরীত হয়েছে?


বিশেষজ্ঞরা অন্তত সেরকমই মনে করছেন। বলা হচ্ছে, ম্যাচ এগিয়ে এনে টসকে ম্যাচের নির্ণায়ক করে ফেলেছেন বোর্ড কর্তারা।


কিন্তু কীভাবে?


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের এক কর্তা জানালেন, ম্যাচের সময় এগিয়ে আনায় প্রবল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে টস। ওই কর্তার কথায়, 'বছরের এই সময় গোটা দেশেই শিশির পড়ে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার হেরফের যত বাড়বে, শিশিরের প্রভাব তত বাড়বে।' ম্যাচ এগিয়ে আনায় কি শিশির সমস্যা কিছুটা হলেও কমেছে? উড়িয়ে দিচ্ছেন ওই বোর্ড কর্তা। বলছেন, 'কী করে কমবে! বিজ্ঞান বলছে, দিন ও রাতের তাপমাত্রার সবচেয়ে বেশি হেরফের হয় যখন, তখনই সবচেয়ে বেশি শিশির পড়ে। অর্থাৎ সন্ধ্যার কিছুটা পরে। ম্যাচ আটটা থেকে শুরু হলে দুই দলকেই একইরকম শিশির সমস্যা সামলাতে হতো। কোনও দল বাড়তি সুবিধা পেত না। তাই টস ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারত না। কিন্তু ম্যাচ এগিয়ে আনায় সমস্যা বেড়েছে। কারণ, সাতটার সময় খুব বেশি শিশির পড়বে না। তাই টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করে নিলে বল গ্রিপ করতে বোলারদের অতটা সমস্যা হবে না। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংস যখন শুরু হবে, বেশ ভাল শিশির পড়বে। তাই পরে ব্যাটিং করা দল ম্যাচে এগিয়ে থাকবে। টস সেই কারণেই এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।'


ইডেনে (Eden Gardens) রবিবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। উইকেট তৈরির কাজ তত্ত্বাবধান করার জন্য কলকাতায় রয়েছেন বোর্ডের পিচ কমিটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান আশিস ভৌমিক। ম্যাচের ফাঁকে শিশির নিরোধক স্প্রে ব্যবহার করা হবে। যা ঘাসের ওপর একটা আস্তরণ তৈরি করে দেবে। তাই শিশির ঘাসের পাতায় জমা হবে না। গড়িয়ে পড়ে যাবে। অনেকটা কচু বা পদ্মপাতার মতো। ম্যাচের ফাঁকে বারবার দড়ি ব্যবহার করে ঘাসের নীচে জমে থাকা জল শুষে নেওয়ার চেষ্টা হবে। তাতে ভিজে বলের সমস্যা কিছুটা এড়ানো যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।


আর পিচ? ইডেনে গত কয়েক বছর ধরেই পিচের চরিত্র বদলে গিয়েছে। বাইশ গজ আর আগের মতো মন্থর নেই। বরং পিচে বল পড়ে দ্রুত ব্যাটে আসবে। পেসাররা বাড়তি বাউন্স পাবেন। বড় রানের ম্যাচ হবে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন ইডেনের কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ও।


রবিবাসরীয় ইডেনে তাই রোহিত শর্মা-মার্টিন গাপ্টিলদের ব্যাটে চার-ছক্কার বন্যা বইতে পারে।