ভুবনেশ্বর: ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে (Intercontinental Cup 2023) অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে ভারত। টানা ২ ম্যাচ জিতে ফাইনালে জায়গা কার্যত পাকা করে ফেলেছেন সুনীল ছেত্রীরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সবচেয়ে কড়া পরীক্ষা ব্লু টাইগার্সের। কারণ, সামনে লেবানন। ফিফা ব়্যাঙ্কিংয়ে যারা ভারতের চেয়েও এগিয়ে। 


এই ম্যাচ নিয়ে চাপে পড়ার যেমন কারণ রয়েছে ভারতীয় দলের, তেমনই রয়েছে ফিফা ক্রমতালিকায় দু’ধাপ ওপরে থাকা লেবাননেরও। ভারত পরপর দু’টি ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে গেলেও লেবানন প্রথম ম্যাচে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে কিছুটা হলেও চাপে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা মাঠে নামার আগে বিকেলে মুখোমুখি হবে মঙ্গোলিয়া ও ভানুয়াটু। সেই ম্যাচে মঙ্গোলিয়া যদি বড় ব্যবধানে জিতে যায়, তা হলে চাপ আরও বাড়বে তাদের। সেক্ষেত্রে তাদের ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করতে ভারতের বিরুদ্ধে অন্তত ড্র করতেই হবে। 


ভারতের ওপর চাপ থাকলেও সেটা অন্যরকমের। দেশের মাটিতে টানা সাতটি ম্যাচ জেতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গেলে এই ম্যাচে জিততেই হবে তাদের। ফিফা ক্রমতালিকায় একশোর মধ্যে আসতেও এই জয় অবশ্যই প্রয়োজন ভারতের। তা ছাড়া এই ম্যাচে জিতলে ফাইনালে আত্মবিশ্বাসের শিখরে থেকে মাঠে নামতে পারবে তারা। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 


কিন্তু গত ম্যাচে ভানুয়াটু যে ভাবে তাদের ৮০ মিনিট পর্যন্ত আটকে রেখে দিয়েছিল, তার পরে তাদের চিন্তা বাড়ার কথা। এই আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে গেলে বৃহস্পতিবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলতে হবে ব্লু টাইগার্সকে। নিজেদের রক্ষণ আঁটোসাঁটো রেখে শুরুতেই গোলের জন্য ঝাঁপাতে হবে। 


যাঁর একমাত্র গোলে গত ম্যাচে কষ্টার্জিত জয় পায় ভারত, সেই অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীও স্বীকার করে নিয়েছেন, “গত ম্যাচে আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করা সত্ত্বেও গোলের সামনে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছি বারবার। অনেক কিছুতেই আমাদের উন্নতি করতে হবে।" 


ভানুয়াটুর দুর্ভেদ্য ডিফেন্সের কাছে সে দিন যে ভাবে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলেন ভারতীয় দলের ফরওয়ার্ডরা, তাতে অধিনায়ক ও কোচ, দুজনেরই কপালে ভাঁজ দেখা দিয়েছে। একই ঘটনা ঘটতে পারে বৃহস্পতিবার লেবাননের বিরুদ্ধেও। এই প্রসঙ্গে সুনীল বলেন, “আমরা প্রতিপক্ষের দরজায় সে দিন বারবার কড়া নেড়েছি। দুই উইং দিয়ে বেশ কিছু ভাল আক্রমণ হয়েছে। কিন্তু ফাইনাল ডেলিভারি ঠিক মতো হয়নি। কোচের কাছ থেকে এই নিয়ে অনেক কিছু শিখতে হবে আমাদের। এ ছাড়া আমাদের বাকি সব ঠিকই আছে”। 


কোচ ইগর স্টিমাচকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দলের ছেলেরা ফাইনাল থার্ডে ভাল করছে না। প্রতিপক্ষের বক্সে যাওয়া পর্যন্ত ওরা অসাধারণ। কিন্তু বক্সে ঢোকার পরে ফিনিশিং হচ্ছে না। আমি তো ওখানে ওদের সাহায্য করতে পারব না। বক্সে যাওয়া পর্যন্ত ওদের সাহায্য করতে পারি। কিন্তু বক্সে ঢোকার পর যা করতে হবে, তা সম্পুর্ণ ফুটবলারদের ওপর”। 


তবে লেবাননের বিরুদ্ধে উন্নত ফুটবল খেলার ব্যাপারে আশাবাদী কোচ। বলেন, “সবে শুরু করেছি  আমরা। তা ছাড়া দুটো ম্যাচে দুটো সম্পুর্ণ আলাদা দল খেলেছে। আমি আগেই বলেছিলাম, প্রথম দুটো ম্যাচে এমন হতেই পারে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচের পর থেকে আমাদের ফুটবলের মান আরও উন্নত হওয়া উচিত। আমাদের এমন সাত-আটজন খেলোয়াড় হাতে নেই, যাদের প্রতি ম্যাচে প্রথম এগারোয় অনায়াসে রাখা যায়। যে রকম খেলোয়াড় হাতে রয়েছে, তাদের দিয়েই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে হচ্ছে। এ বার তাদের মধ্যে থেকেই সেরা এগারোজনকে বেছে নিয়ে পরের দুই ম্যাচে নামাতে হবে।" 



আরও পড়ুন: ABP Exclusive: তরুণদের সুযোগ দিতে সরে দাঁড়ালেন, নজির ঋদ্ধির, লড়াই করে দলে রাখা হল অনুষ্টুপকে