কলকাতা: মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন। গত এক দশকে প্রায় প্রত্যেকবার ফেভারিট হিসাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে আর তার মধ্যে পাঁচবার ট্রফি জিতেছে। অবিশ্বাস্য রেকর্ড।


ওদের দলের নিউক্লিয়াসটা গত দশ বছরে পাল্টায়নি। এমনকী সাপোর্ট স্টাফদেরও খুব একটা বদল হয়নি। এটা ওদের সাফল্যের নেপথ্যে অন্যতম প্রধান কারণ। ওপেনিংয়ে কুইন্টন ডি'কক-রোহিত শর্মা জুটির ধারাবাহিকতা থেকে শুরু করে মাঝের ওভারে পাণ্ড্য ব্রাদার্স - হার্দিক আর ক্রুণাল পাণ্ড্যর বিধ্বংসী ব্যাটিং, কায়রন পোলার্ডের ঝড়, সূর্যকুমার যাদব, ঈশাণ কিষাণদের চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলা একের পর এক ইনিংস, বল হাতে যশপ্রীত বুমরার অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা, ট্রেন্ট বোল্টের ম্যাজিক ৪ ওভার, গোটা দলটা যেন এক অদৃশ্য মন্ত্রে জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পরে প্রতিপক্ষের ওপর।


জেতাটা মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে। সেটা খুব স্বাস্থ্যকর ছবি। মুম্বইয়ের জার্সি পরে যে সমস্ত ভারতীয় ক্রিকেটারেরা খেলে, তারা প্রত্যেকে দলের সম্পদ। মুম্বই তাদের প্রতিষ্ঠার মঞ্চ দিয়েছে, মুম্বইয়ের হয়ে খেলেই অনেকে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছে। বুমরা, হার্দিক, ঈশান, সকলেই এই তালিকায় পড়ে। গত আইপিএলে মুম্বইকে চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে ঈশানের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবার ও আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নামবে। কারণ ইতিমধ্যেই ভারতের হয়ে খেলে ফেলেছে। ভাল খেলেছে। ক্রিকেট খেলাটা আত্মবিশ্বাসের খেলা। এই মুহূর্তে যেটা ঈশানের ভীষণরকমভাবে রয়েছে।


বিদেশিদের মধ্যে আমার মতে ট্রেন্ট বোল্টের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওর ৪ ওভারে অনেক কিছু পাল্টে যেতে পারে। নতুন বলে হোক বা পুরনো, ওর উইকেট নেওয়ার দক্ষতা অধিনায়ক রোহিত শর্মার তুরুপের অন্যতম সেরা তাস। পোলার্ডও ম্যাচ উইনার। তবে ওর বয়স হচ্ছে। ফিটনেস নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারে। উইকেটকিপিং হয়তো ডি'ককই করবে। ঈশানকে খেলানো হবে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসাবেই। সব মিলিয়ে আত্মতুষ্টি গ্রাস না করলে এবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারে রোহিতরা।


পুরো দল: রোহিত শর্মা, আনমোলপ্রীত সিংহ, ক্রিস লিন, সৌরভ তিওয়ারি, সূর্যকুমার যাদব, অ্যাডাম মিলনে, ধবল কুলকার্নি, যশপ্রীত বুমরা, জয়ন্ত যাদব, মহসিন খান, নাথান কুল্টার নাইল, পীযূষ চাওলা, রাহুল চাহার, ট্রেন্ট বোল্ট, যুদ্ধবীর সিংহ, অনুকূল রায়, অর্জুন তেন্ডুলকর, হার্দিক পাণ্ড্য, জেমস নিশাম, কায়রন পোলার্ড, ক্রুণাল পাণ্ড্য, মার্কো জানসেন, আদিত্য তারে, ঈশান কিষাণ ও কুইন্টন ডি'কক।


অধিনায়ক: রোহিত শর্মা


আইকন: সচিন তেন্ডুলকর 


হেড কোচ: মাহেলা জয়বর্ধনে


ডিরেক্টর: জাহির খান


বোলিং কোচ: শেন বন্ড


ব্যাটিং কোচ: রবিন সিংহ


ফিল্ডিং কোচ: জেমস প্যামেন্ট


আইপিএলে সেরা পারফরম্যান্স: চ্যাম্পিয়ন ৫ বার (২০১১, ২০১৩, ২০১৫, ২০১৯, ২০২০)


আইপিএল রেকর্ড: ম্যাচ ২০৪, জয় ১২০, হার ৮৩, অমীমাংসিত ১


গত আইপিএলের পারফরম্যান্স: ম্যাচ ১৬, জয় ১১, হার ৫


শক্তি: বছরের পর বছর এক দল ধরে রাখা। নিজের ভূমিকা নিয়ে সকলের পরিষ্কার ধারণা রয়েছে।


দুর্বলতা: পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন। এবারও খেতাব রক্ষার লড়াই। ক্রিকেটারদের আত্মতুষ্টি এসে গেলে সমস্যা।


এক্স ফ্যাক্টর: অধিনায়ক রোহিত শর্মা। একা হাতে বিপক্ষকে ধ্বংস করে দিতে পারে। সঙ্গে হার্দিক পাণ্ড্যর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স।


আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পূর্ণাঙ্গ সূচি:


৯ এপ্রিল    এমআই বনাম আরসিবি      চেন্নাই, রাত ৭.৩০


১৩ এপ্রিল  কেকেআর বনাম এমআই   চেন্নাই, রাত ৭.৩০


১৭ এপ্রিল  এমআই বনাম এসআরএইচ চেন্নাই, রাত ৭.৩০


২০ এপ্রিল  ডিসি বনাম এমআই    চেন্নাই, রাত ৭.৩০


২৩ এপ্রিল পিকে বনাম এমআই   চেন্নাই, রাত ৭.৩০


২৯ এপ্রিল  এমআই বনাম আরআর      দিল্লি, দুপুর ৩.৩০


১ মে এমআই বনাম সিএসকে      দিল্লি, রাত ৭.৩০


৪ মে এসআরএইচ বনাম এমআই দিল্লি, রাত ৭.৩০


৮ মে আরআর বনাম এমআই      দিল্লি, রাত ৭.৩০


১০ মে       এমআই বনাম কেকেআর   দিল্লি, রাত ৭.৩০


১৩ মে       এমআই বনাম পিকে   বেঙ্গালুরু, দুপুর ৩.৩০


১৬ মে      সিএসকে বনাম এমআই      বেঙ্গালুরু, রাত ৭.৩০


২০ মে      আরসিবি বনাম এমআই      কলকাতা, রাত ৭.৩০


২৩ মে      এমআই বনাম ডিসি    কলকাতা, দুপুর ৩.৩০


*অনুলিখন: সন্দীপ সরকার


সেরা অস্ত্র বোলিং, নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জ পন্থ কীভাবে সামলায় তার ওপর দাঁড়িয়ে দিল্লির পারফরম্যান্স