কলকাতা: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে (RCB) তাদের ডেরায় গিয়ে হারিয়ে শহরে ফিরছে কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। টানা চার ম্যাচে পরাজয়ের পর জয়ের সরণিতে ফিরেছেন শাহরুখ খান-জুহি চাওলার যোদ্ধারা। এখনও কি প্লে অফে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে নাইটদের?


চলতি আইপিএলে ৮ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছে কেকেআর। ৬ পয়েন্ট রয়েছে কেকেআরের ঝুলিতে। পয়েন্ট টেবিলে এই মুহূর্তে সাত নম্বরে রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও, রান রেটে সামান্য এগিয়ে কেকেআর। নাইটদের নেট রান রেট -০.০২৭। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নেট রান রেট -০.৬২০। অবশ্য রোহিত শর্মারা নাইটদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেছেন।


আইপিএলের নিয়ম বলছে, পয়েন্ট টেবিলের প্রথম চার দল প্লে অফে উঠবে। শীর্ষে থাকা দুই দল কোয়ালিফায়ার ওয়ান খেলবে। যে দল জিতবে, তারা সরাসরি পৌঁছে যাবে ফাইনালে। যে দল হেরে যাবে, তারা ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ পাবে। কোয়ালিফায়ার টু খেলবে তারা। পয়েন্ট টেবিলের তিন ও চার নম্বরে থাকা দুই দল নিজেদের মধ্যে এলিমিনেটর খেলবে। যে দল হারবে, তারা বিদায় নেবে। এলিমিনেটরের বিজয়ী দল কোয়ালিফায়ার ওয়ানের পরাজিত দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলবে। যে ম্যাচকে বলা হয় কোয়ালিফায়ার টু। সেই ম্যাচের বিজয়ী দল পৌঁছে যাবে ফাইনালে।



পয়েন্ট টেবিলে প্রথম চার দলের মধ্যে জায়গা পেতে লড়াই দশ দলের। ষোড়শ আইপিএল মাঝপর্বে এসে পৌঁছেছে। সব দলই অন্তত সাতটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তাই শুরু হয়ে গিয়েছে প্লে অফের অঙ্ক কষা।


প্লে অফে জায়গা পাওয়ার জন্য ১৬ পয়েন্টকে ম্যাজিক ফিগার ধরা হয়। ১৬ পয়েন্ট পেলে মোটামুটিভাবে প্রথম চার দলের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া যায়। আইপিএলের ইতিহাসে অবশ্য ব্যতিক্রমও রয়েছে। দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে মহার্ঘ ভূমিকা পালন করবে নেট রান রেট।


পয়েন্ট টেবিলে সব দলের ওপরে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। ৭ ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতেছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। ১০ পয়েন্ট-সহ শীর্ষে সিএসকে। বাকি ৭ ম্যাচের মধ্যে অন্তত তিনটি জিতলেই প্লে অফের দরজা খুলে যেতে পারে সিএসকের। তার বেশি সংখ্যক ম্যাচ জিতলে শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ার ওয়ানও খেলতে পারে ক্যাপ্টেন কুলের দল।


সিএসকে-র সঙ্গে সমান পয়েন্ট গুজরাত টাইটান্সের। ৭ ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতেছেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। শনিবার ইডেনে তাঁদের পরের ম্যাচ কেকেআরের বিরুদ্ধে। আপাতত দুই নম্বরে আছেন হার্দিকরা। বাকি ৭ ম্যাচের মধ্যে ৩টি জিতলেই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যাবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল।


৪টি করে ম্যাচ জিতেছে রাজস্থান রয়্যালস, লখনউ সুপার জায়ান্টস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও পাঞ্জাব কিংস। চার দলেরই ভাঁড়ারে রয়েছে ৮ পয়েন্ট করে। রান রেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে রয়েছে রাজস্থান। চারে রয়েছে লখনউ। একটি ম্যাচ বেশি খেলেছেন বিরাট কোহলিরা। রান রেটে সামান্য পিছিয়ে থাকায় পাঁচে রয়েছে আরসিবি। ছয়ে রয়েছে পাঞ্জাব কিংস। বাকি ম্যাচের মধ্যে ৪টি করে জিতলে চার দলই প্লে অফে ওঠার লড়াইতে থাকবে।


মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বেশ চাপে। কেকেআরের থেকে এক ম্যাচ কম খেলে ৬ পয়েন্ট রোহিত শর্মাদের। দিল্লি ক্যাপিটালস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, দুই দলই ৭টি করে ম্যাচ খেলে মাত্র ২টি করে জিতেছে। দুই দলের ঝুলিতেই রয়েছে ৪ পয়েন্ট করে। অলৌকিক কিছু না হলে দুই দলেরই প্লে ওঠে ওঠা সম্ভব নয়।


আরও পড়ুন: স্বপ্নে পূর্বপুরুষদের দেখছেন ? এর অর্থ কী ?


কেকেআরের বাকি রয়েছে আর ৬টি ম্যাচ। যার মধ্যে ৪টি ম্যাচ রয়েছে ঘরের মাঠে। গুজরাত টাইটান্স, পাঞ্জাব কিংস, রাজস্থান রয়্যালস ও লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে কেকেআর। ম্যাজিক ফিগার ১৬তে পৌঁছতে বাকি ৬ ম্যাচের মধ্যে  ৫টিতে জিততে হবে কেকেআরকে। কাজটি কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়।


২০২১ সালের আইপিএলে একটা সময় টানা ৪ ম্যাচ হেরেছিল কেকেআর। তারপর ১১টি ম্যাচের মধ্যে ৮টি জিতে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন নাইটরা। ফাইনালে ওঠার পথে টানা ৪ ম্যাচ জিতেছিল কেকেআর। সেবারও টুর্নামেন্টের মাঝপথে কেউই ভাবেননি যে, ফাইনালে যাবেন নাইটরা। শেষ পর্যন্ত সিএসকে-র কাছে ফাইনালে হেরেছিল কেকেআর। তবে ২ বছর আগের সেই পারফরম্যান্স এবারও নাইট শিবিরের সামনে উদাহরণ হতে পারে। বিশ্বাস জন্মাতে পারে, চেষ্টা করলে অসম্ভব কিছুই নয়।


শৃঙ্গ দুর্গম। কিন্তু অজেয় নয়।


আরও পড়ুন: রিঙ্কুর ৫ ছক্কার দুঃস্বপ্নের পর অসুস্থ যশ, কমে গিয়েছে ওজন, হার্দিকের মন্তব্যে চাঞ্চল্য