মুম্বই: তেন্ডুলকর পরিবারে প্রথম আইপিএল উইকেট! অর্জুন তেন্ডুলকরকে (Arjun Tendulkar) নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছে ক্রিকেটবিশ্ব। সুনীল গাওস্কর থেকে রবি শাস্ত্রী, অর্জুন তেন্ডুলকরকে প্রশংসায় ভরাচ্ছেন সকলে। ছেলেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকরও। আইপিএলের মঞ্চে পা রেখেই নজর কেড়ে নিয়েছেন কিংবদন্তি-পুত্র।


তাঁকে বলা হতো, ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন আর্ম। প্রতিপক্ষের কোনও পার্টনারশিপ ক্রিজে জমে গেলেই ডাক পড়তো তাঁর। হাত ঘুরিয়ে জুটি ভেঙেও দিতেন। মহম্মদ আজহারউদ্দিন হোক বা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অধিনায়কদের মুশকিল আসান হয়ে হাজির হতেন বোলার সচিন তেন্ডুলকর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০১ উইকেট নিয়েছিলেন। ভারতের হয়ে একটিমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। সেই ম্যাচেও এক উইকেট নিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। কিন্তু আইপিএলে কোনও উইকেট নেই সচিনের। সেই আক্ষেপ যেন দূর করে দিলেন পুত্র অর্জুন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে  নিলেন আইপিএল কেরিয়ারের প্রথম উইকেট। তাঁর বলে কভারে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ভুবনেশ্বর কুমার। হায়দরাবাদকে হারানোর পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ড্রেসিংরুমে চলল বিজয়োৎসব। সেখানে অর্জুনের জার্সিতে বিশেষ ব্যাজ পরিয়ে দেন সচিন। কিংবদন্তি মজা করে বলেন, যাক। অবশেষে তেন্ডুলকর পরিবারে আইপিএল উইকেট এল। সচিনের কথা শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন সকলে।


কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে আইপিএল অভিষেক হয় অর্জুনের। সেই ম্যাচে ২ ওভার বল করেছিলেন। তবে কোনও উইকেট পাননি। অপেক্ষার অবসান হল মঙ্গলবার। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে নিজের দ্বিতীয় আইপিএল ম্যাচে। ১৮ রানে এক উইকেট নিয়েছেন অর্জুন। সবচেয়ে বড় কথা, চাপের মুখে শেষ ওভার তাঁর হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা। হতাশ করেননি ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার। শেষ ওভারে জিততে গেলে হায়দরাবাদকে তুলতে হতো ২০ রান। কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়। রিঙ্কু সিংহের শেষ ওভারে পরপর ৫ বলে ৫ ছক্কা কেই বা ভুলতে পারে!


তবে অর্জুন নিশানায় ভুল করেননি। মাত্র ৫ রান ওঠে শেষ ওভারে। ১৪ রানে ম্যাচ জেতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ম্যাচের ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন রবি শাস্ত্রী। তিনি অনেক আগে থেকেই দাবি তুলছিলেন যে, অর্জুনকে ডেথ ওভারে বল দেওয়া উচিত। এতে তাঁর আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। শেষ পর্যন্ত ২০তম ওভার তাঁকে দেওয়ায় খুশি জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও কোচও।


আইপিএলে ধারাভাষ্য করছেন সুনীল গাওস্কর। স্নায়ুর চাপ সামলে অর্জুনের সাফল্য দেখে মুগ্ধ লিটল মাস্টার। গাওস্কর বলেছেন, সচিন যখন খেলা শুরু করেছিলেন, তখন সবাই তাঁর প্রতিভা নিয়ে বারবার আলোচনা করেছেন। কিন্তু এটা উল্লেখ করতেই হবে, যে মানসিক স্থিতিশীলতা সচিনের ছিল, তা এক কথায় অসাধারণ। অর্জুনও বাবার থেকে এই বিষয়টা পেয়েছে। মাঠে অর্জুনকে বেশ বুদ্ধিমান মনে হয়েছে।


 



শাহরুখ খান থেকে শুরু করে ইরফান পাঠান, অর্জুনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। শুরুটা ভাল করেছেন। বাঁহাতি পেসারের ব্যাটের হাতও বেশ ভাল। এখনও ব্যাট করার সুযোগ পাননি। তবে বড় শট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিংবদন্তি বাবার ছেলে হয়ে সাফল্য পাওয়া যে সহজ নয়, রোহন গাওস্কর, অভিষেক বচ্চনরা তা ভালই জানেন। স্রোতের বিপরীতে হেঁটে অর্জুন কি লক্ষ্যভেদ করতে পারবেন?


আরও পড়ুন: জেটের গতিতে উত্থান, ২০ বছরের তরুণই ফের স্বপ্ন দেখাচ্ছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে