জয়পুর: এ মরসুমে ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha) গুজরাত টাইটান্সের হয়ে নিয়মিত ম্যাচ খেললেও, ব্যাট হাতে বড় রানের ইনিংস খেলতে পারছিলেন না। কিন্তু শুক্রবার, ৫ মে, রাজস্থান রয়্যালসের (Gujarat Titans vs Rajasthan Royals) বিরুদ্ধে সেই আক্ষেপ কিছুটা মিটল। মাত্র ১১৯ রান তাড়া করতে নেমে ঋদ্ধি একেবারে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে ম্যাচ জিতিয়েই সাজঘরে ফেরেন। তিনি ৩৪ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন।
চালিয়ে ব্যাটিং
ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকারে হর্ষ ভোগলে ঋদ্ধিকে তাঁর খবর জানতে চাইলে বাংলার ছেলে বাংলাতেই বলেন, 'সব ঠিকঠাক আছে। ম্যাচে ব্যাট হাতে সবসময় চালিয়ে খেলার চেষ্টা করছি।' এরপরেই দলে নিজের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি যোগ করেন, 'পাওয়ার প্লেতে চালিয়ে খেলে বড় রান তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাকে। আজ কয়েকটা শট ঠিকঠাক ব্যাটে বলে হওয়ার পরেই আত্মবিশ্বাস পাই।'
গুজরাত দলে দুই দুরন্ত স্পিনার রয়েছেন যাদের কব্জির মোচড়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা ঘোল করছেন। রশিদ খান তিন ও নূর আমেদ দুই উইকেট নিয়ে রাজস্থানের কোমড় ভেঙে দেয়। এই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি রাজস্থান। ফলত ১১৮ রানেই অল আউট হয়ে তাঁরা। কিন্তু ব্যাটাররা যে স্পিনারদের বুঝতে ঘোল খাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কিপিং করা ঠিক কতটা কঠিন? 'সবসময় যে গুগলি পড়তে না পারলেও, রশিদ ও নূরের বোলিং করার সময় আমি যতটা দেরি করে সম্ভব মুভ করার চেষ্টা করছি।' জানান ঋদ্ধি।
গত বারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স এ মরসুমেও কিন্তু দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন। দলের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ঋদ্ধি বলেন, 'গতবার আমরা যে স্তরটা তৈরি করেছিলাম, এ মরসুমেও সেইটা বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের দলের একজন কোনও বোলার নয়, বরং সকলেই একত্রতিভাবে দলের হয়ে অবদান রাখছেন। সেই কারণে তো পার্পল ক্যাপ বারবার আমাদের দলের বোলারদের মাথাতেই ঘোরাফেরা করছে।'
ম্যাচের বিবিরণ
ঘরের মাঠে খেলা। চেনা পরিবেশ, চেনা পিচ, চেনা সমর্থকদের সমর্থন। কিন্তু তারপরও গুজরাতের বোলিং লাইন আপের সামনে নিজেদের মেলে ধরতে পারলেন না গুজরাত বোলারদের সামনে। আরও একবার ব্যর্থ হলেন জস বাটলার। ফর্মে থাকা জয়সওয়ালের ব্য়াটও চলল না। ভাল শুরু করেও রান পেলেন না সঞ্জু স্যামসন। মাত্র ১১৭ রানে অল আউট হয়
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। ওপেনে নেমেছিলেন জয়সওয়াল ও বাটলার। ১১ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলেন জয়সওয়াল। নিজের ইনিংসে ১টি বাউন্ডারি ও ১টি ছক্কা হাঁকান তিনি। বাটলার ৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। সঞ্জু স্যামসন ২০ বলে ৩০ রান করে ভাল শুরু করেও প্যাভিলিয়নে ফেরেন। কিন্তু মিডল অর্ডার পুরো ব্যর্থ হয় এদিন। যার জন্য মাত্র ১১৭ রানে শেষ হয়ে যায় রাজস্থানের ইনিংস।
রাজস্থানের ১১৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে গুজরাত টাইটান্স শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং শুরু করে। ওপেনে ঋদ্ধিমান সাহা ও গিল নেমেছিলেন। দু জনে মিলেই ওপেনিংয়ে নেমে ভাল শুরু করেন। গিল ৩৬ রান করে আউট হন। ৩৪ বলে ৪১ রান করেন ঋদ্ধিমান সাহা। হার্দিক পাণ্ড্য আরও মারমুখি মেজাজে ব্যাটিং করেন। তিনি ১৫ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক পাণ্ড্য। তিনি নিজের ইনিংসে ৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা হাঁকান।
রাজস্থান বোলাররা কেউই এদিন সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি। ৩.৫ ওভারে ২২ রান খরচ করে ১ উইকেট নেন যুজবেন্দ্র চাহাল। এছাড়া আর কেউই কোনও উইকেট পাননি। রাজস্থানের ওপেনিং বোলার ট্রেন্ট বোল্ট কোনও উইকেন পাননি।