কলকাতা: আইপিএলের অর্ধসমাপ্ত অংশ শুরু হতে আর ঠিক এক মাস বাকি। সব ফ্র্যাঞ্চাইজি দলেই নতুন করে সাজো সাজো রব। কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরও টুর্নামেন্টের পরবর্তী পর্বের জন্য নীল নকশা তৈরি করে ফেলেছে।
আইপিএলের পরবর্তী অংশ হবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। তিনটি শহরে হবে ম্যাচ। দুবাই, আবু ধাবি ও শারজা। কেকেআর তাদের শিবির করবে আবু ধাবিতে। তবে তারা দুবাই হয়ে মরুদেশে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন?
কারণ, নিভৃতবাসের নিয়ম। কেকেআর শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল যে, করোনা পরিস্থিতিতে আবু ধাবিতে কোয়ারেন্টিন নিয়ম নিয়ে বেশ কড়াকড় রয়েছে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে কেউ সরাসরি আবু ধাবি পৌঁছলে ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিন মেনে চলতেই হবে। কিন্তু দুবাইয়ে সেই তুলনায় কিছু ছাড় রয়েছে। ভিন দেশ থেকে কেউ দুবাই গেলে ৭ দিনের কোয়ারেন্টিন করলেই হবে। সেই কারণে নাইট শিবিরে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, মুম্বই থেকে প্রথমে দুবাই যাওয়া হবে। সেখানে সাত দিনের কোয়ারেন্টিন পর্ব কাটিয়ে অষ্টম দিন আবু ধাবি যাওয়া হবে। তাতে করোনার কড়াকড়ি থেকে কিছুটা হলেও ছাড় পাবেন ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফেরা।
এমনিতে নাইট শিবিরে বিশেষ কিছু সংস্কার রয়েছে। কয়েকটি ব্যাপারকে পয়মন্ত মনে করা হয়। ২০১২ সালে সপ্তম আইপিএলের প্রথমার্ধ আয়োজিত হয়েছিল মরুদেশে। সেবার আবু ধাবির রিৎজ কার্লটন হোটেলে ছিল কেকেআর। প্রথম ২০টি ম্যাচের পর টুর্নামেন্টের বাকি অংশ হয়েছিল ভারতে। সেবার প্রথমবারের জন্য আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। সেই থেকে কেকেআর শিবির আবু ধাবির ওই হোটেলকে পয়মন্ত মনে করে। এবারও সেই হোটেলেই বেস ক্যাম্প করবে কেকেআর।
তবে ভারত থেকে সরাসরি আবু ধাবি গেলে ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিন মানতেই হবে। সেক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের ঠিক আগে ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে। যেটা এড়ানোর জন্য দুবাই হয়ে মরুদেশে প্রবেশ করতে চায় কেকেআর। তাতে মাত্র এক সপ্তাহের কোয়ারেন্টিন পর্ব কাটালেই জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করা যাবে।
নাইট শিবিরের একজন বলছিলেন, 'গত আইপিএলের সময় আমরা সরাসরি আবু ধাবি পৌঁছেছিলাম। সেখানে কঠোর কোয়ারেন্টিনের বেড়াজালে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তাই এবার দুবাই হয়ে মরুদেশে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।'
কেকেআর শিবির সূত্রে খবর, ২৫ ও ২৬ অগাস্ট ভারতীয় সমস্ত ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফ মুম্বইয়ে জমায়েত হবেন। সেখানে ২৬ অগাস্ট ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে প্রত্যেকের আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষার বন্দোবস্ত করছে। ২৬ অগাস্ট রাতেই সেই পরীক্ষার ফল হাতে এসে যাবে। তারপর ২৭ তারিখ চার্টার্ড বিমানে করে মুম্বই থেকে দুবাই উড়ে যাবে দল।
তিন ক্রিকেটারের চোট নিয়ে সামান্য অস্বস্তি রয়েছে নাইট শিবিরে। ব্যাটসম্যান শুভমন গিল, পেসার কমলেশ নাগরকোটি ও স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর চোট সমস্যা রয়েছে। তিনজনই আপাতত বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাবিলিটেশন করছেন। সেখান থেকেই সরাসরি মুম্বই গিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
কেকেআরের বিদেশি ক্রিকেটারেরা সরাসরি দুবাই পৌঁছবেন। সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলের মতো অনেকে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন। কেকেআর কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামও সিপিএলে রয়েছেন। তাঁরা সেখান থেকেই দুবাই পৌঁছবেন।
৭ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আইপিএলে সাত নম্বরে রয়েছে শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দল। প্লে অফে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে বাকি ৭ ম্যাচের মধ্যে অন্তত ৫টি জিততেই হবে। মরুদেশে ভাগ্যবদলের অপেক্ষায় নাইট শিবির।