মুম্বই: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) নেতৃত্বও ছেড়ে দিয়েছেন। নিন্দুকেরা তাতেও বলাবলি করেন, এখনও চালিয়ে যাওয়া কি যুক্তিসঙ্গত?
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (MS Dhoni) দেখিয়ে দিলেন, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। বয়স, ফর্ম-সহ সমস্ত প্রশ্নকে হেলিকপ্টার শটে আরব সাগরে উড়িয়ে চেন্নাই সুপার কিংসকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জেতালেন এমএসডি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (MI) বিরুদ্ধে শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। জয়দেব উনাদকটের প্রথম বলে ফিরে যান ডোয়েন প্রিটোরিয়াস। পরের বলে ডোয়েন ব্র্যাভো এক রান নেওয়ার পর অঙ্কটা দাঁড়িয়েছিল, ম্যাচট জিততে শেষ ৪ বলে ১৬ রান করতে হবে সিএসকে-কে। স্ট্রাইকে ধোনি। অনেকেই ভেবেছিলেন যে, স্তিমিত সময়ের ধোনি পারবেন না। বরং টানা পরাজয়ের অভিশাপ কাটিয়ে জয়ের সরণিতে ফিরবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই।
পরের চার বলে ধোনি মারলেন ছক্কা, চার, দুই ও চার রান। ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে যেন সেই পুরনো ধোনির প্রতিফলন। যিনি ক্রিজে থাকা মানে হারার আগে না হারার মানসিকতা। অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার বিশ্বাস। ১৩ বলে ২৮ রানে অপরাজিত রইলেন ধোনি। সেই সঙ্গেই যেন অপরাজিত রইল কোটি কোটি ভক্তের স্বপ্ন। যে স্বপ্ন বলে, পারেন। ধোনি এখনও পারেন।
ম্যাচের শেষে চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক রবীন্দ্র জাডেজা বললেন, 'ধোনি গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিল, ও এখনও আছে। এখনও ম্যাচ জেতাতে পারে।'
চেন্নাইয়ের হয়ে বল হাতে আগুন ছোটালেন মুকেশ চৌধুরী। রাজস্থানের বাঁহাতি পেসারকে এবার দলে নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে শার্দুল ঠাকুরকে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, শার্দুলকে ছেড়ে দিয়ে কি ঠিক করল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের দল? তার ওপর চোট পেয়ে আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়ে সিএসকে শিবিরের উদ্বেগ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দীপক চাহার। যিনি সিএসকে জার্সিতে ম্যাচের পর ম্যাচ ধারাবাহিকতা দেখিয়ে জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছিলেন।
তবে তাঁদের অভাব বুঝতে দেননি মুকেশ। তিন উইকেট নিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মা ও ঈশান কিষাণের উইকেট তুলে মুম্বই ইনিংসের কোমর ভেঙে দেন। পরে বেবি এবি নামে বিখ্যাত হয়ে ওঠা ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকেও ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি পেসার। তাঁর বলের স্যুইং সামলাতে তখন হিমশিম খাচ্ছেন ব্যাটাররা।
রুখে দাঁড়ান সূর্যকুমার যাদব ও তিলক বর্মা। ২১ বলে ৩২ রান করে ফেরেন সূর্যকুমার। ৪৩ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিলক। এদিন একাধিক ক্যাচ ফেলেন চেন্নাইয়ের ক্রিকেটারেরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে মুম্বই তোলে ১৫৫/৭। জবাবে চেন্নাইয়ের শুরুটা ভাল হয়নি। কোনও রান না করে ফিরে যান রুতুরাজ গায়কোয়াড়। কিছুটা লড়াই করেন রবিন উথাপ্পা (২৫ বলে ৩০ রান) ও অম্বাতি রায়ডু (৩৫ বলে ৪০ রান)। শেষ দিকে প্রিটোরিয়াস ২৩ বলে ২২ রান করেন। শেষ চার বলে যখন ১৬ রান বাকি, সকলে ধরেই নিয়েছে চেন্নাই হারতে চলেছে, তখনই ফের ব্যাট হাতে ধোনির রুদ্রমূর্তি। জেতালেন ম্যাচও। ১৫৬/৭ তুলে তিন উইকেটে জয়ী সিএসকে।