আমদাবাদ: আইপিএলের (IPL 2022) প্রথম মরসুমেই খেতাব ঘরে তুলেছিল রাজস্থান রয়্যালস (Rajasthan Royals)। সেবার প্রয়াত শেন ওয়ার্নের (Shane Warne) নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রাজস্থান (Rajasthan Royals)। কিন্তু এরপর ১৪ বছর কেটে গিয়েছে। আসেনি সাফল্য। সঞ্জু স্যামসনের হাত ধরে এবার সেই অধরা মাধুরী আরও একবার ছোঁয়ার সুযোগ। আরও একবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পালা রাজস্থানের। আজ গুজরাতের বিরুদ্ধে হাল্লা বোল করার হাতছানি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজস্থান রয়্যালসের রোড টু ফাইনাল -


জস বাটলারের দাপুটে ব্যাটিংয়ে কেল্লাফতে 


টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই রাজস্থান শিবিরের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট ছিল জস বাটলারের ব্যাটিং। প্রথম ম্যাচ থেকেই মারকাটারি ব্যাটিংয় প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করেছেন তিনি। রাজস্থান তাঁদের টুর্নামেন্টের অভিযান শুরু করেছিল ২ টো জয় দিয়ে। প্রথম ম্যাচে জয় আসে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাটলারের সেঞ্চুরি ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ২৩ রানে হারিয়ে দেয় রাজস্থান রয়্যালস। 


এরপর যদিও প্রথম হার রাজস্থানের আসে আরসিবির বিরুদ্ধে। কিন্তু লখনউয়ের বিরুদ্ধে আবার জয়ের সরণিতে ফিরে আসে স্যামসন বাহিনী। সেই ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে জয়ের রাস্তা দেখান যুজবেন্দ্র চাহাল। পয়েন্ট টেবিলে প্রথম তিনে জায়গা করে নেয় রাজস্থান। কিন্তু এরপরের  ম্য়াচে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ৩৬ রানে হার। তবে এর পর টানা ৩ ম্যাচ জয় ছিনিয়ে নেয় রাজস্থান শিবির। 


প্রথমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে, এরপর দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ও আরসিবির বিরুদ্ধে জয় পায় রাজস্থান শিবির। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও কলকাতার বিরুদ্ধে হারতে হয় তাঁদের। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে যদিও জয় এসেছিল। এই পরিস্থিতিতে আর তিন ম্যাচ বাকি ছিল রাজস্থানের। 


দিল্লির বিরুদ্ধে হারতে হয় সঞ্জুদের। শেষ ২ ম্যাচ ছিল লখনউ ও চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে। শেষ ২ ম্যাচেই জয় ছিনিয়ে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে থেকে প্লে অফে চলে যায় রাজস্থান। 


প্লে অফে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হার


গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারতে হয় রাজস্তানকে। ১৮৮/৬ তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans) দরকার ছিল ১৬ রান। বল ছিল প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর হাতে। যিনি তার আগে পর্যন্ত ৩ ওভারে মাত্র ২২ রান খরচ করেছিলেন। গুজরাত শিবিরে সকলের চোখেমুখে উৎকণ্ঠা। পরের তিন বলে তিনটি ছক্কা মেরে ম্যাচের রং পাল্টে দিলেন ডেভিড মিলার। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের জন্য ক্রিকেটবিশ্ব যাঁকে চেনে কিলার মিলার নামে। তিন বল বাকি থাকতে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে ফেলল গুজরাত। 


বাটলারের সেঞ্চুরিতে ফাইনালে রাজস্থান


রজত পাতিদারের অর্ধশতরানের ওপর ভর করে প্রথমে বোর্ডে ১৫৭ রান তুলে নিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। লক্ষ্যমাত্রা ছিল মাত্র ১৫৮। বোলাররা তাঁদের কাজ করে রেখেছিলেন দারুণভাবে। বাকিটা দরকার ছিল ব্যাটারদের জ্বলে ওঠার। আর সেই কাজটা প্রায় একাই করে ফেললেন জস বাটলার। আইপিএলের শুরু থেকেই একের পর এক মারকাটারি ইনিংস। তিন তিনটে সেঞ্চুরি আগেই করে রেখেছিলেন। কিন্তু মাঝপথে তাঁর ব্য়াট হঠাৎ করেই কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল। সমর্থক, অনুরাগীরাও হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, ওস্তাদের মার শেষ রাতে। ঠিক তেমনই হল। এদিন ১০টি বাউন্ডারি ও ৬টি ছক্কার সাহায্যে ৬০ বলে অপরাজিত ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার। যশস্বী জয়সওয়াল ২১ ও সঞ্জু স্যামসন ২৩ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ১৮.১ ওভারে ৩ উিকেট হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় রাজস্থান। হর্ষল পটেলকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ফাইনালে তোলেন বাটলার।