আমদাবাদ : আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারায়ণ ও গত রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝলসে ওঠা শার্দুল ঠাকুরকে যখন হ্যাটট্রিকের সুবাদে পরপর সাজঘরে ফেরালেন রশিদ খান, তখন কার্যত গর্জন উঠছে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। গতবারের আইপিএল (IPL) গুজরাত টাইটান্সের ধ্বনিতে মুখরিত আমদাবাদ। মাঠে ও মাঠের খেলায় টিভি, অনলাইনে নজর রাখা কেউই হয়তো ভাবতে পারেননি, ওই জায়গা ম্যাচ বের করতে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
বলা ভাল, রিঙ্কু সিংহ (Rinku Singh) যখন শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কার মধ্যে প্রথমটি গ্যালারিতে ফেললেন, তখনও প্রত্যাশার পারদ তৈরি হয়নি। তার পর অবশ্য পরপর রিঙ্কুর ছক্কার সঙ্গে বাড়তে থেকেছে প্রত্যাশার পারদ। আর পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কায় কেকেআরের জয় নিশ্চিত করার পর কার্যত এক আশ্চর্য নীরবতা নেমে এসেছিল গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজির ঘরের মাঠে। লাখখানেক সমর্থকের গলা ছাপিয়ে তখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটারদের আওয়াজ আছড়ে পড়ছে। আর ড্রেসিংরুমে ফিরে তা যেন পরিণত হল গর্জনে।
ড্রেসিংরুমে ফিরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফরা গর্জে উঠলেন, 'বুকে হাত রেখে গেয়ে ওঠো, কেকেআরের হয়ে খেলা মানেই সবকিছু। ইডেন গার্ডেন্স থেকে সব জায়গায়, আমার-তোমার থেকে অনেক বেশি কিছু। রক্তে আমাদের বেগুনি, মাঠে নামি কেকেআরের জন্য।' গর্জে ওঠার পরই টিম হার্ডেলের সেলিব্রেশনের মাঝেই ওঠে রিঙ্কু সিংহের নামে জয়ধ্বনিও। খেলার মাঝে রবি শাস্ত্রী ধারাভাষ্যের মাঝে বলছিলেন, এই ম্যাচে জিতলে কিন্তু এবারে অনেকদূর যাবে কেকেআর। এবার দেখার তাঁর কথা সত্যি হয় কি না।
তবে মোমেন্টাম বা জয়ের ধারার সুবাদে গুজরাতকে হারানো যে কলকাতার ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে অনেকটা আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে, তেমনটাই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। এবারে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ডার্কওয়ার্থ লুইসে হারতে হলেও ইডেন গার্ডেন্সে ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে হারায় কেকেআর (KKR)। তারপর এভাবে রিঙ্কু সিংহের অবিশ্বাস্য ইনিংসে কার্যত মহাকাব্যিক জয়। গতবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন গুজরাত শিবির এবারের অভিযানে জোড়া জয়ের পরই খেলতে নেমেছিল যে ম্যাচে। স্কোরবোর্ডে তুলেছিল ২০০-র বেশি রান। গুজারাতের কার্যত হাতের আগলে চলে আসা ম্যাচ থেকে কার্যত জয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে কেকেআর। আইপিএলে কেকেআরের ইতিহাসে ২০০-র বেশি রান তাড়া করে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার জয়ের পরে আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন কেকেআরের ক্রিকেটাররা। বলা ভাল, আইপিএলের মঞ্চে তুলতে শুরু করেছেন ক্রিকেট-গর্জন।