সন্দীপ সরকার, কলকাতা: কথায় আছে, সকাল দেখে দিন কেমন যাবে বোঝা যায়। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স দুবারের সাক্ষাতে দুবারই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারানোর পর কি সেরকমই কোনও ইঙ্গিত পেতে শুরু করেছেন নাইট ভক্তরা? এক দশক পুরনো স্মৃতি ফেরালেন যে নাইটরা।


মুম্বই ইন্ডিয়ান্স মানেই কেকেআরের (KKR vs MI) কঠিন ঠাঁই। ইতিহাস বলছে, আইপিএলে (IPL 2024) কেকেআরকে যদি কোনও দল সবচেয়ে বেশি বেগ দিয়ে থাকে, তাহলে সেটা হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। একটা সময় যাদের কাছে টানা হারতে হারতে স্বয়ং কেকেআর মালিক শাহরুখ খান এতটাই হতোদ্যম হয়ে পড়েছিলেন যে, ড্রেসিংরুমে গিয়ে ক্রিকেটারদের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, যে শহর আমাকে বাদশা বলে ডাকে, তাদের অন্তত একবার হারাও।


তবে ২০১৪ সালে এক ব্যতিক্রমী কাণ্ড ঘটিয়েছিল কেকেআর। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে দুবারের সাক্ষাতে দুবারই হারিয়েছিলেন নাইটরা। মনে করিয়ে দেওয়া যাক, সেবার আইপিএল চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল কেকেআর। তিন বছরের মধ্যে তাদের দ্বিতীয় ট্রফি।


সেই শেষ। তারপর থেকে দেখতে দেখতে দশ বসন্ত পার। আর কোনওদিন আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়নি কেকেআর। তবে দশ বছরের সেই সুখস্মৃতি ফিরিয়ে ফের আইপিএলে দুবারের সাক্ষাতে দুবারই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারাল কেকেআর। ইডেন গার্ডেন্সে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের ১৮ রানে হারিয়ে চলতি আইপিএলে প্রথম দল হিসাবে প্লে অফে জায়গা পাকা করে নিলেন নাইটরা। এদিন মাঠে জুহি চাওলা, সুহানা-আব্রামরা থাকলেও আসেননি শাহরুখ। ম্যাচের দিকে নিশ্চয়ই নজর ছিল বাজিগরের। তাঁর দল মুম্বইকে দুবার হারানোর মতো কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলার পর শাহরুখ কি আরও বড় কোনও স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিলেন?


এক নয়, কাঁটা একাধিক। ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ। বাকি দুই ম্যাচ খেলতে হবে বাইরের মাঠে। প্লে অফ নিশ্চিত করার সেরা সুযোগ ছিল ইডেনেই। আর সেই ম্যাচে কি না তুমুল অনিশ্চয়তা তৈরি করে দিয়েছিল বৃষ্টি। পৌনে দু'ঘণ্টা পরে শুরু হল ম্যাচ। ওভার সংখ্যা কমে হল ১৬। আর সেই ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে হল কেকেআরকে। বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে, এরকম ক্ষেত্রে যেখানে সব দলই রান তাড়া করার ফর্মুলা নেয়, সেখানে নাইটদের প্রথমে ব্যাটিং। 


সেখানেই শেষ নয় বিপত্তির। ৭ বলের মধ্যে ফিরে গেলেন দুই ওপেনার। মরশুমে প্রথমবার। তবে বেঙ্কটেস আইয়ার, আন্দ্রে রাসেল, রিঙ্কু সিংহদের দাপটে শেষ পর্যন্ত কেকেআর তোলে ১৫৭/৭।


জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই খেই পেল না মুম্বই। ৬.৫ ওভারে ৬৫ রান তুলেছিলেন দুই ওপেনার ঈশান কিষাণ ও রোহিত শর্মা। তবে ৬ বলের ব্যবধানে বরুণ ও নারাইন দুই ওপেনারকে তুলে নেওয়ার পরই মুম্বইয়ের জারিজুরি শেষ। ১৭ বলে ৩২ রান করে তিলক বর্মা চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ঠ ছিল না। ১৩৯/৮ স্কোরে আটকে গেল মুম্বই। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বরুণ চক্রবর্তী।


১৮ রানে ম্যাচ জিতে প্লে অফে কেকেআর। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে প্রথম দুইয়ে থাকাও নিশ্চিত নাইটদের। সেক্ষেত্রে ফাইনালে ওঠার জন্যও দুবার সুযোগ পাবে কেকেআর।


ম্যাচের শেষে 'থ্যাঙ্ক ইউ কলকাতা' ব্যানার নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করলেন নাইট ক্রিকেটারেরা। হয়তো আরও বড় স্বপ্নের জাল বোনা শুরু হয়ে গেল ইডেনেও।


আরও পড়ুন: কথা বন্ধ রোহিত-হার্দিকের! হিটম্যান পরের আইপিএলে কি শাহরুখের দলে? ইডেন জন্ম দিল জল্পনার


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।