KKR EXCLUSIVE: ৭ বছর পর ফাইনালে কেকেআর, মেন্টরের ভূমিকায় দেখা নেই উদ্বিগ্ন শাহরুখের

IPL FINAL: বাজিগরের জীবনে এখন আইপিএল ট্রফিও যেন তুচ্ছ। অনেক বড় ছেলের সুরক্ষা। টিমমালিক নয়, শাহরুখের সত্তা জুড়ে এখন শুধুই এক অসহায় বাবার আর্তি।

Continues below advertisement

কলকাতা: সাত বছর পর আইপিএল ফাইনালে উঠেছে দল। তাঁর তো এখন ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। হয় মুম্বই থেকে সটান পৌঁছে যাবেন মরুদেশে। হয়তো বা প্রাইভেট জেটে। তারপর টিমহোটেলে গিয়ে রাখবেন ঝাঁঝাল বক্তব্য। যার পরতে পরতে থাকবে কবীর খানের ছোঁয়া। যিনি ক্রিকেটারদের বলবেন, হার-জিত নিয়ে ভাবতে হবে না। মাঠে নেমে তিন ঘণ্টা শুধু খেলাটা উপভোগ করো।

Continues below advertisement

অথবা দলকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বেছে নেবেন আরও অভিনব কোনও রাস্তা। প্রত্যেক ক্রিকেটারের পরিবারের সদস্যদের দিয়ে তৈরি করাবেন কোনও ভিডিও। যেখানে কোনও ক্রিকেটারের স্ত্রী, কারও সন্তান ট্রফি যুদ্ধের শুভেচ্ছা জানাবেন। আর ভিডিওর শেষে থাকবে তাঁর নিজের কিছু কথা। মহারণের আগে গা গরম করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

কিন্তু কোথায় কী! শুক্রবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে আইপিএল ফাইনাল খেলতে নামছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। অথচ নাইট মালিক শাহরুখ খানের যেন কোনও অস্তিত্বই নেই। ক্রিকেট আর আইপিএল অন্ত প্রাণ মহাতারকা নিজেকে সম্পূর্ণ গুটিয়ে নিয়েছেন। ক্রিকেটারদের উৎসাহ দেওয়া তো দূর অস্ত, দলের কারও সঙ্গে গত দশদিনে যোগাযোগ করেছেন বলে খবর নেই।

মাদক কাণ্ডে পুত্র আরিয়ান খান গ্রেফতার হয়েছেন ৩ অক্টোবর। তারপর থেকে উদ্বেগের প্রহর গুনছেন কিংগ খান। বারবার আদালতে খারিজ হয়ে যাচ্ছে আরিয়ানের জামিনের আর্জি। আর দুশ্চিন্তার নতুন নতুন মোড়ক ঘিরে ফেলছে শাহরুখকে।

বাজিগরের জীবনে এখন আইপিএল ট্রফিও যেন তুচ্ছ। অনেক বড় ছেলের সুরক্ষা। টিমমালিক নয়, শাহরুখের সত্তা জুড়ে এখন শুধুই এক অসহায় বাবার আর্তি।

মরুদেশে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছে কেকেআর। ৭ ম্যাচের মধ্যে ৫টিতে জিতে প্লে অফে পৌঁছে গিয়েছিলেন অইন মর্গ্যানরা। এলিমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে হারিয়ে ও কোয়ালিফায়ার টু-তে দিল্লি ক্যাপিটালসকে পরাস্ত করে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে কেকেআর। ২০১৪ সালের পর আবার। কিন্তু দলের সঙ্গে কার্যত কোনও যোগাযোগই নেই শাহরুখের। আবু ধাবিতে কেকেআর শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সামান্য শুভেচ্ছাবার্তাও পাঠাননি মালিক।

অথচ ২০১২ ও ২০১৪ সালের ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। দুবারই কেকেআর ফাইনালে খেলতে নামার আগে মেন্টরের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শাহরুখ। ২০১২ সালে চেন্নাইয়ে ধোনিদের বিরুদ্ধে ফাইনালের আগে দলের ড্রেসিংরুমে গিয়ে ক্রিকেটারদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন শাহরুখ। আওড়েছিলেন চক দে ইন্ডিয়ার সংলাপ।

তারপর ২০১৪। আইপিএল ফাইনালে বেঙ্গালুরুতে পঞ্জাব কিংসের মুখোমুখি নাইটরা। ভিডিও তৈরি করে ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিয়েছিলেন শাহরুখ। তৃতীয় ট্রফির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কেকেআর শিবিরে অবশ্য বাজিগরের কোনও অস্তিত্বই যেন নেই।

আবু ধাবি থেকে নাইট শিবিরের একজন এবিপি লাইভকে বললেন, 'শাহরুখ খান দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার মতো অবস্থায় নেই। ছেলে আর্থার রোড জেলে, কোন বাবা আর এই অবস্থায় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়ে পড়ে থাকতে পারে! আমাদের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার বেঙ্কি মাইসোরই সব সামলাচ্ছেন। শাহরুখের মানসিক পরিস্থিতি সকলেই বুঝছে। আমরা কেউই ওঁকে বিব্রত করতে চাই না।'

চলতি মরসুমের আইপিএলের প্রথম পর্বে যখন শিবিরে হানা দিয়েছিল করোনা, মানসিক অস্থিরতার সেঅ সময় দলের সকলকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন কেকেআরের অন্যতম মালিক শাহরুখ। টুর্নামেন্ট স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরে শিবিরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তিনি ভিডিও কনফারেন্স করেছিলেন। দলের সকলকে বলেছিলেন, শুধুমাত্র নিজের ও নিজের পরিবারের কথা ভাবতে। বলেছিলেন, দল বা টুর্নামেন্ট নিয়ে পরে ভাবলেও চলবে। কিংগ খান সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছিসেন, "জান হ্যায় তো জাঁহা হ্যায়"।

আচমকা এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, তাঁর দল এখন শুধুই ক্রিকেট নিয়ে ভাবছে। ট্রফির স্বপ্ন দেখছে। আর তিনি, শাহরুখ খান ডুবে রয়েছেন ব্যক্তিগত উদ্বেগের গহ্বরে। অন্ধকূপ থেকে বেরনোর জন্য আলোর হদিশের অপেক্ষায়।

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola