গোরক্ষপুর: উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের ২২ বছরের বিশাল নিশাদ। প্রথম লাইনটি পড়ে অনেকেই ভাববেন যে কে তিনি। কিন্তু আইপিএলের নিলামে পঞ্জাব কিংস ৩০ লক্ষ টাকায় দলে নিয়েছে এই তরুণ স্পিনারকে। তবে আর পাঁচজনের থেকে বিশালের গল্পটা কিন্তু একেবারেই আলাদা। বাবার সঙ্গে দিনমজুরের কাজ করতেন। সেখান থেকেই আইপিএলের মঞ্চে আগামী মরশুমে দেখা যাবে বিশালকে।
বিশালের কোচ কল্যাণ সিংহ। সর্বভারতীয় এক সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারের সময় বিশালের কোচ বলছেন, ''তিন বছর আগে আমি গোরক্ষপুরে কয়েকজন ছেলেকে টেনিস বল দিয়ে খেলতে দেখেছিলাম। আমার নজর পড়েছিল বিশালের ওপর। ও দুর্দান্ত স্পিন বোলিং করছিল। আমিই এরপর ওকে বলি যে সনস্ক্রুতি ক্রিকেট অ্য়াকাডেমিতে ভর্তি হওয়ার জন্য। এখান থেকেই বিশালের ক্রিকেট খেলা শুরু।''
কল্যাণ সিংহ আরও জানিয়েছেন সেই সাক্ষাৎকারে যে, ''আমি কথা বলে জানতে পারি যে বিশাল অত্যন্ত গরীব পরিবারের। ওর বাবা উমেশ নিশাদ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বিশালও বাবার সঙ্গে মজদুর হিসেব কাজ করেছে। ওর বাবাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম যে ছেলেকে ক্রিকেট খেলার জন্য অ্য়াকাডেমিতে পাঠাতে, তখন ওর বাবা আমাকে প্রশ্ন করেছিল যে ক্রিকেট কী ফেরত দেবে তাঁদের।''
বিশালের বাবাকে কল্যাণ সিংহ নিজেই জানিয়েছিলেন যে একটা বছর সময় দিতে। ঠিক সেটাই হয়েছ। বিশাল এক বছরের মধ্যেই নিজের প্রতিভার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত মজদুরি ছেড়ে পুরোপুরি ক্রিকেটেই মন দিয়েছিলেন বিশাল। অবশেষে ভাগ্য সহায় হল আইপিএলেও। আগামী মরশুমে পঞ্জাব কিংসে জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে তরুণ এই স্পিনারকে।
অনুপ্রেরণা জোগাবে কার্তিক শর্মার গল্পও
চেন্নাই সুপার কিংস এবার দলে নিয়েছে রাজস্থানের ১৯ বছর বয়সি উইকেট কিপার ব্য়াটার কার্তিক শর্মাকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে রাজস্থানের জার্সিতে গত কয়েক মরশুমে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছন কার্তিক। এমনকী ব্যাট হাতে পেল্লাই ছক্কা হাঁকাতে পারেন এই তরুণ। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন কার্তিকের পরিবারকে দু-বেলার খাবার জোটাতে হিমশিম খেতে হত। কার্তিকের বাবা মনোজ শর্মা নিজেও ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবের রূপ নেয়নি। তবে এরপর থেকেই ছেলেকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে নিজের সবটুকু দিয়েছেন। যার সঙ্গী ছিলেন কার্তিকের মা-ও। অনেকগুলো চাকরি করেছেন মনোজ অর্থ উপার্জনের জন্য। কার্তিকের ক্রিকেট খেলার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে ও ক্যাম্পে যাতে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন কার্তিক, তার জন্য় নিজের গয়না সব বিক্রি করে দিয়েছিলেন কার্তিকের মা। ছেলের জন্য় মনোজও তাঁর সোনার চেইন বিক্রি করেছিলেন।