কলকাতা: ঈশান পোড়েলের বোলিংয়ে মুগ্ধ বাংলার কোচ অরুণলাল। তিনি মনে করছেন, ঈশান খুব দ্রুত উঠে এসেছেন এবং এখন বড় মঞ্চের জন্য প্রস্তুত। অরুণ মনে করেন, যেভাবে বোলিং করছেন বাংলার এই পেসার, তাতে ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেও ঝামেলায় ফেলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম তারকা বোলার ঈশানের বয়স এখন ২১। সোমবার ইডেনে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে কর্ণাটকের দ্বিতীয় ইনিংসে দুরন্ত ইনস্যুইঙ্গারে ঈশান তুলে নিয়েছিলেন কেএল রাহুলকে। তাঁর ইনস্যুইং ডেলিভারি রাহুলের প্যাডে আছড়ে পড়েছিল। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই কর্ণাটকের ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম যে আঘাত ঈশান হেনেছিলেন, তার থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। গতকাল ৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কর্ণাটকের দিনের শেষে রান ছিল ৩ উইকেটে ৯৮। আজ তাদের ১৭৭ রানে অল আউট করে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে উঠেছে বাংলা। এদিন আরও একটি উইকেট নিয়েছেন ঈশান।
বাংলার কোচ তৃতীয় দিনের খেলার শেষে বলেছেন, ও এখন দারুণ ছন্দে রয়েছে। ও যেভাবে বোলিং করছে, তাতে কেএল রাহুল বা বিরাট কোহলির মতো ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারে। ও এখন এমনই বোলিং করছে। ও একটা নির্দিষ্ট চ্যানেলে বোলিং করছে। ওকে লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে বল করতে দেখাই যায় না। ব্যাটসম্যানের সারাক্ষণ পরীক্ষা নিয়ে চলেছে। ও খুব বেশি রানও দিচ্ছে না। এতেও চাপ বাড়ছে। এই মুহূর্তে কেএল রাহুল ফর্মের তুঙ্গে রয়েছে। ওকে রান করতে সবাই দেখেছে। ও চমত্কার, দুরন্ত। ওকে এভাবে দ্রুত ফেরানোটা একটা বড় কৃতিত্ব।
এবারের রঞ্জি মরশুমে ঈশানের বোলিং সবার নজর কেড়েছে। এ প্রসঙ্গে অরুণ লিগ পর্যায়ে অন্ধ্রের বিরুদ্ধে ঈশানের ৫০ রানে চার উইকেট নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। ওই ম্যাচে ভারতীয় দলের খেলোয়াড় হনুমা বিহারীকে ২৩ রানে আউট করেছিলেন তিনি।
বাংলার কোচ বলেছেন, যে বলে হনুমাকে ও আউট করেছিল, তা লেংখে পড়ে আচমকা লাফিয়েছিল। আমার মনে হয় ও প্রস্তুত, এই পর্যায়ে প্রায় ও পৌঁছে গিয়েছে।
নিউজিল্যান্ডে ভারত এ দলের সফরের পর রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে ঈশানের বোলিং দাপটে (৩৯ রানে পাঁচ উইকেট) কর্ণাটকের প্রথম ইনিংস ১২২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল।
কোচ বলেছেন, আমি ওর বড় বড় ব্যাটসম্যানদের আউট করার ক্ষমতা সম্পর্কে জানি। আমরা ওকে একনাগাড়ে পাঁচ-ছয় ওভার বোলিং করাচ্ছি।
বাংলার এই দীর্ঘদেহী পেসার আগে বেশ চোট-আঘাতের সমস্যায় ভুগতেন। এখন ফিটনেস নিয়ে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। এরফলে উইকেট বাড়তি পেস ও বাউন্স আদায় করে নিচ্ছেন, যা ব্যাটসম্যানদের আদৌ স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না।
লাল বলের এই পারফরম্যান্স এবার আইপিএলে সাদা বলে করে দেখানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন বাংলার কোচ। এবার আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে খেলবেন ঈশান।
অরুণলাল বলেছেন, আইপিএলে খেললে প্রচুর অভিজ্ঞতা, মানসিক দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস অর্জন করা যায়। আন্তর্জাতিক মানের ব্যাটসম্যানদের আউট করলে, ম্যাচ জেতালে- তা খুবই বড় ব্যাপার। কোনও প্লেয়ারের ক্ষেত্রে অন্য একটা মাত্রা যোগ হয়।
অরুণলাল মনে করছেন, ওকে স্লোয়ার ও ইয়র্কার ডেলিভারির নিয়ে কাজ করতে হবে। আমি মনে করি , ও পারবে। ওর উচ্চতা রয়েছে। ওর হাই-আর্ম ডেলিভারি এর পক্ষে উপযুক্ত। যখন থেকে শুরু করে, তারপর থেকে ওর ইয়র্কার খুবই মারাত্মক। আমি মনে করি, সাদা বলের ক্রিকেটেও ও দলের কাছে সম্পদ হয়ে উঠবে।