মারগাও: গড়ের মাঠের প্রাচীন প্রবাদ, বড় ম্যাচ জয়ের পরের ম্যাচে আটকে যায় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। তবে নিউ নর্ম্যালে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। এখন এটিকে মোহনবাগানের সবচেয়ে বড় ভরসা রয় কৃষ্ণ। আর বাংলার প্রবাদ তো আছেই, ‘রাখে হরি মারে কে?’ সেই কৃষ্ণর একমাত্র গোলেই চলতি আইএসএল-এ জয়ের হ্যাটট্রিক করল এটিকে মোহনবাগান। কৃষ্ণ পরপর তিন ম্যাচেই গোল করলেন। তিনি প্রতি ম্যাচেই নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন। কৃষ্ণর শেষমুহূর্তের গোলে আজ ওড়িশা এফ সি-কে হারিয়ে ৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে এটিকে মোহনবাগান।


আজ অবশ্য প্রত্যাশিত ছন্দে খেলতে পারেনি অ্যান্টনিও লোপেজ হাবাসের দল। প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হয়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধেও গোল হচ্ছিল না। সবাই ধরে নিয়েছিলেন, ম্যাচ ড্র হবে। কিন্তু কৃষ্ণ হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না। সংযোজিত সময়ের পঞ্চম মিনিটে তিনি গোল করে ম্যাচের রং বদলে দেন।

চলতি আইএসএল-এর উদ্বোধনী ম্যাচে কৃষ্ণর একমাত্র গোলেই কেরালা ব্লাস্টার্সকে হারিয়ে দেয় এটিকে মোহনবাগান। এরপর কৃষ্ণ আর মনবীরের গোলে আইএসএলের প্রথম ডার্বিতে এসসি ইস্টবঙ্গলকে ২-০ গোলে হারায় এটিকে মোহনবাগান৷ গ্যালারির গর্জন ছিল না৷ তবুও করোনা আবহে ভারতীয় ফুটবলে রচিত হল নতুন ইতিহাস৷

প্রথম ম্যাচে জয় দিয়ে অভিযান শুরু করলেও এই ম্যাচে তিনটি পরিবর্তন করেন হাবাস৷ ম্যাচের আট মিনিটেই চমৎকার সুযোগ পেয়েছিলেন অ্যান্থনি পিলকিংটন৷ কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ না দেওয়ায় শট নেওয়ার মুহূর্তে পা আটকে যাওয়ায় তিনি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি৷ এরপর প্রবীর দাসের দুরন্ত ক্রসকে প্রতিহত করেন লাল হলুদ গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদার৷ দেবজিৎ একের পর এক বাগান আক্রমণ প্রতিহত করেন৷ প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের পাসিং ফুটবল চাপে রেখেছিল মোহনবাগানকে৷ কিন্তু তারা রক্ষণ অটুট রাখে৷

খেলার ২২ মিনিটে বাগানের হ্যাভিয়ের ফার্নান্ডেজকে ট্যাকেল করার জন্য রেফারি বলবন্তকে হলুদ কার্ড দেখান৷ ৩৬ মিনিটে হার্নান্ডেজের জোরাল শট অসম্ভব দক্ষতায় আটকে দেন দেবজিৎ৷ প্রথমার্ধ গোলশূন্যই ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ৪৯ মিনিটে হাভি হার্নান্ডেজের বাড়ানো বল লাল হলুদ জালে জড়িয়ে দেন কৃষ্ণ৷ এরপর খেলায় ঝাঁঝ ফেরায় ইস্টবেঙ্গল৷ ৮১ মিনিটে পিলকিংটনের  শট আটকে দেন অরিন্দম৷ ৮৫ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে দলের দ্বিতীয় গোল করেন এটিকে মোহনবাগানের মনবীর।

এবারের আইএসএল শুরু হওয়ার আগে একটিও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পর প্রস্তুতির কোনও অভাবই দেখা যায়নি গতবারের চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে। গতবার যেখানে শেষ করেছিলেন, এবার সেখান থেকেই শুরু করেছেন কৃষ্ণরা। তাঁদের খেলা চ্যাম্পিয়ন দলের মতোই দেখতে লাগছে। এবারও তাঁরাই ট্রফি জয়ের অন্যতম দাবিদার।