জামশেদপুর: আইএসএলে (ISL) ফের পয়েন্ট নষ্ট করল এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohunbagan)। ইস্পাতনগরী থেকে এক পয়েন্টের বেশি নিয়ে ফিরতে পারছে না তারা। লিগ টেবলের দশ নম্বরে থাকা দল জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধেও জিততে পারল না তারা। চলতি লিগের তৃতীয় গোলশূন্য ম্যাচ খেলে আপাতত ১৭ ম্যাচ থেকে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ থেকে চার নম্বরে উঠে এল সবুজ-মেরুন বাহিনী। জামশেদপুর রয়ে গেল দশেই।


বৃহস্পতিবার দুই দলই দিশাহীন ফুটবল খেলে। অসংখ্য ভুল পাস করেন দু’পক্ষের ফুটবলাররাই। ম্যাচের শেষ দিকে দুই দলই একে অপরের বিরুদ্ধে সাতটি করে গোলে শট নিলেও একটিও জালে জড়াতে পারেনি দুই গোলকিপারের জন্য। জামশেদপুরের টি পি রেহনেশ ও এটিকে মোহনবাগানের বিশাল কায়েথ সাতটি করে সেভ করায় দুই দলকেই এ দিন এক পয়েন্ট করে নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়।


হুগো বুমৌস খেলেননি। সম্ভবত ফের হ্যামস্ট্রিং সমস্যা ভোগাচ্ছে তাঁকে। প্রথম এগারোয় ছিলেন না লিস্টন কোলাসোও। তাঁর জায়গায় নামেন কিয়ান নাসিরি। বুমৌসের জায়গায় গত ম্যাচের মতোই ছিলেন ফেদরিকো গায়েগো। সেই ৪-২-৩-১ ছকেই দল সাজান হুয়ান ফেরান্দো। অন্যদিকে জামশেদপুর দল সাজায় ৪-৪-১-১-এ, ঋত্বিক দাস ও রাফায়েলো ক্রিভেলারোকে সামনে রেখে।এটিকে মোহনবাগানের পরের দুই ম্যাচ পয়েন্ট টেবিলে ওপরের দিকে থাকা দুই দল হায়দরাবাদ এফসি ও কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে।


এ দিন ম্যাচের প্রথম আধ ঘণ্টায় এটিকে মোহনবাগানকে একেবারেই চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। জামশেদপুর এফসি-ও অযথা ঝুঁকি নিতে রাজি ছিল না। ফলে ম্যাচ তেমন আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেনি। দুই দলেরই মিসপাসের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য। এই আধ ঘণ্টায় সবুজ-মেরুন শিবিরের একটি মাত্র শট গোলমুখী ছিল। কিন্তু জামশেদপুর একটিও গোলমুখী শট নিতে পারেনি।


তবে শেষ ১৫ মিনিটে একাধিক শট (৪) গোলে রাখে তারা। রেহনেশ এদিন জামশেদপুরকে একাধিক গোল খাওয়ার হাত থেকে বাঁচালেও বরিস সিংহ ও ড্যানিয়েল চিমা দু’টি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে দলকে অবধারিত গোল এনে দিতে পারেননি। ৪৪ মিনিটের মাথায় ক্রিভেলারোর জায়গায় হ্যারি সয়্যার নামার পর ইস্পাতনগরীর দলের চেহারা বদলে যায় এবং আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে তারা। 


পেট্রাটসের জোড়া গোলমুখী শট ছাড়াও গ্ল্যান মার্টিন্স, আশিস ও প্রীতম একটি করে গোলে শট নেন প্রথম ৪৫ মিনিটে। কিন্তু একটি থেকেও গোল আদায় করতে পারেননি তাঁরা। দ্বিতীয়ার্ধে কার্ল ম্যাকহিউকে তুলে নিয়ে ডিফেন্ডার স্লাভকো দামজানোভিচকে নামান ফেরান্দো। দ্বিতীয়ার্ধের তিন মিনিটের মাথাতেই বরিসের মাইনাস পেয়ে বক্সের বাইরে থাকা জে এমানুয়েল থমাস বা জেট যে দূরপাল্লার গোলমুখী শট নেন, তা সবুজ-মেরুন গোলকিপার বিশাল কয়েথ না আটকালে বিপদে পড়ত এটিকে মোহনবাগান। ফিরতি বলে গোলের সামনে থেকে শট নেন সয়্যার, যা ফের বাঁচান বিশাল।


আক্রমণে ধারা বাড়াতে ৬০ মিনিটের মাথায় লিস্টন কোলাসোকে মাঠে নামান তাঁদের কোচ ফেরান্দো। সবুজ-মেরুন শিবিরের ছন্নছাড়া আক্রমণের মধ্যে ৬৬ মিনিটের মাথায় কিয়ানের পা থেকে বল পেয়ে বক্সের মাথা থেকে গোলে শট নেন গায়েগো, যা রেহনেশ ফের রুখে দিয়ে আরও একবার দলকে বাঁচান।


কোলাসোর গোলের সুযোগ নষ্ট করার রোগ এদিনও সারেনি। ৮২ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠেন তিনি। কিন্তু বক্সে পৌঁছনোর আগেই গোলে দূরপাল্লার দুর্বল শট নেন, যা প্রতিপক্ষের গোলকিপারের হাতে লেগে বেরিয়ে যায়। কর্নারে ব্রেন্ডান হ্যামিল ছ’গজের বক্সের মাথা থেকে হেড করলেও তা গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।


কোলাসোর কাউন্টার অ্যাটাকের ঠিক আগে জামশেদপুর ডিফেন্ডার প্রতীক চৌধুরির একটি আক্রমণ গোল লাইনের ঠিক সামনে থেকে সেভ করেন বিশাল। নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে ছ’গজের বক্সের সামনে থেকে নেওয়া চিমার শট ফের রুখে দেন বিশাল। ছ’মিনিট বাড়তি সময়ে পেয়েও কোনও দল তা কাজে লাগাতে পারেনি। এটিকে মোহনবাগান এই সময়ে জোড়া আক্রমণ শানিয়েও তিন পয়েন্ট লাভ করতে পারেনি। এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।



আরও পড়ুন: সচিন-নীরজের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হৃষিতা, হাওড়ার কন্যার লক্ষ্য মহিলাদের আইপিএল