কলকাতা: পাঁচ গোলে জয় ও পরপর দুটি গোলশূন্য ড্রয়ের পর ইস্টবেঙ্গল শিবিরে যে আত্মবিশ্বাসের পাহাড় তৈরি হয়েছে, সেই পাহাড়ই এখন তাদের ফর্মের উচ্চতায় তুলে রেখেছে। সেই উচ্চতায় থাকতে গেলে যে শুক্রবার ঘরের মাঠে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধেও পয়েন্ট পেতে হবে, তা খুব ভাল করেই জানে স্প্যানিশ কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতের দল। আর ওডিশা এফসি এমন একটা দল, যাদের কাছ থেকে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়া মোটেই সোজা কাজ নয়। সে ঘরের মাঠ হোক বা বাইরের মাঠ।
গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই যারা জিতেছে এবং গত ছ’টি ম্যাচে যারা অপরাজিত, সেই ওডিশা এফসি-ই এই মুহূর্তে চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে সবচেয়ে ভাল ফর্মে থাকা দল। লিগের আর কোনও দলই তাদের গত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জেতেনি। এমনকী শীর্ষে থাকা এফসি গোয়াও না। তাই তাদের হারানোও ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে মোটেই সহজ হবে না।
সাত নম্বরে থাকা ইস্টবেঙ্গল সেরা ছয়ের দরজায় দাঁড়িয়ে। এই ম্যাচে জিততে পারলে তারা সেরা ছয়ে চলেও আসবে। শুক্রবারের ম্যাচে এটাই তাদের উজ্জীবিত করে তোলার পক্ষে যথেষ্ট। নয় ম্যাচে দশ পয়েন্ট অর্জন করেছে তারা। গত চারটি ম্যাচে অপরাজিত তারা। গত তিন ম্যাচে একটিও গোল খায়নি। ক্রমশ নিজেদের ভাল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছেন ক্লেটন সিলভা, নাওরেম মহেশ সিংরা। এই অবস্থায় ওডিশার বিরুদ্ধে একটি পয়েন্টও যদি অর্জন করতে পারে তারা, তা হলে তাও আত্মবিশ্বাসের পাহাড়ের উচ্চতা সামান্য হলেও বাড়াবে।
এটিই এ বছরের শেষ ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের। বছরটা নিশ্চয়ই ভাল ভাবে শেষ করে বড়দিনের ছুটিতে যেতে চাইবে লাল-হলুদ বাহিনী। ওডিশাকে যদিও আগামী সাত দিনে আরও তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে। সেই তিনটি ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে এই ম্যাচ থেকেও তিন পয়েন্ট পেতে চাইবে তারা। কারণ, এই ম্যাচে জিতলে তারা শীর্ষে থাকা দুই দল এফসি গোয়া ও কেরালা ব্লাস্টার্সকে ছুঁয়ে ফেলতে পারবে। তাগিদ দুই দলেরই রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কাদের উদ্দেশ্য পূরণ হবে শেষ পর্যন্ত, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
জামশেদপুরের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্রয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ক্লেটন সিলভা ফর্মে ফেরেন। দলও জয়ে ফেরে। ব্রাজিলীয় তারকার জোড়া গোলে চলতি লিগের প্রথম জয় পায় তারা। বেঙ্গালুরুতে ফের ছন্দপতন হয় তাদের। ২-১-এ তাদের হারিয়ে লিগের প্রথম জয় পায় সুনীল ছেত্রীর দল। সে দিন হারার মতো না খেলেও হারতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। এর পরে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ৭৩ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থাকার পরে দু’মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টি গোল খেয়ে ১-২-এ হেরে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ফের ১-২-এ হারে লাল-হলুদ বাহিনী। এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ৮৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন ক্লেটন সিলভা। চেন্নাইনের বিরুদ্ধেও ৮৫ মিনিট পর্যন্ত এক গোলে এগিয়ে থাকার পর গোল খেয়ে জেতা ম্যাচ ১-১ ড্র করে লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু নর্থইস্টের বিরুদ্ধে তাদের ৫-০-য় জয় আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দেয় তাদের। কিন্তু পাঞ্জাব ও মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে তাদের পরপর দুই ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। নয় ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন লিগ টেবলের সাত নম্বরে রয়েছে। তথ্য় সংগ্রহ - আইএসএল মিডিয়া