কলকাতা: যে রক্ষণ নিয়ে অনুশীলনে এত পরিশ্রম করেন তাঁরা, সেই রক্ষণই যে এ ভাবে ভেঙে পড়বে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে, তা ভাবতেই পারেননি ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। সে জন্য দলের ছেলেদের ওপর যে বেশ ক্ষুব্ধ তিনি, তা শনিবার হারের পর স্পষ্ট জানিয়ে দেন লাল-হলুদ শিবিরের কোচ।


শনিবার গুয়াহাটিতে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই দু’গোলে পিছিয়ে যায় লাল-হলুদ বাহিনী। দ্বিতীয়ার্ধে নন্দকুমার শেখর ও ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশী ফরোয়ার্ড ফেলিসিও ব্রাউন ব্যবধান কমালেও নর্থইস্ট ইউনাইটেডের অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার টমি জুরিককে ধরে রাখতে পারেননি তাঁদের সতীর্থ ডিফেন্ডাররা। নিজের দ্বিতীয় গোল করে দলকে চলতি লিগের তৃতীয় জয় এনে দেন তিনি। এই জয়ের ফলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় ছ’নম্বরে উঠে এল নর্থইস্ট। আর ছ’নম্বর হারের ফলে লিগ তালিকায় ন’নম্বরে নেমে গেল ইস্টবেঙ্গল এফসি।


এই হারের ফলে নিজের দলেরই খেলোয়াড়দের ওপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ স্প্যানিশ কোচ কুয়াদ্রাত বলেন, “আজ কোনও কিছু নিয়েই আমি খুশি হতে পারছি না। কোনও ম্যাচে তিন গোল খেলে সেই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট বের করে আনা খুবই কঠিন। আমাদের রক্ষণকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য অনেক কিছু করি আমরা। এটাই দলের একটা ইতিবাচক দিক ছিল। এই জন্যই দলের ছেলেদের ওপর আমি খুব রেগে গিয়েছি।


এত খারাপ শুরু হল ম্যাচটা! ওদের (নর্থইস্ট) সঙ্ঘবদ্ধ থেকে প্রতি আক্রমণে ওঠার পরিকল্পনা ছিল। আমরা শুরুতেই ওদের কাজটা সহজ করে দিলাম! ওরা যে এই পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামবে, তা আমাদের জানাই ছিল। কিন্তু এ ভাবে পরপর দু’গোল খাওয়া মোটেই উচিত হয়নি”।


আইএসএলে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড টমি জুরিক ও স্প্যানিশ মিডফিল্ডার নেস্টর আলবিয়াখই এ দিন গুয়াহাটির দলকে আট ম্যাচ পরে জয় এনে দেন। নন্দকুমার শেখর ও নবনিযুক্ত জার্মান ফরোয়ার্ড ফেলিসিও ব্রাউন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ব্যবধান কমালেও শেষ পর্যন্ত সমতা আনতে বা জেতাতে পারেননি তাঁরা। কলকাতা ডার্বি এক সপ্তাহ আগে হয়ে গেলেও এ দিন ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স দেখে মনে হয় ডার্বির ‘হ্যাঙওভার’ তাদের এখনও কাটেনি। বিশেষ করে তাদের রক্ষণ এ দিন অপ্রত্যাশিত ভাবে ব্যর্থ হয়।


দু’গোলের ধাক্কা সামলাতে পারবেন, এমন আশা থাকলেও প্রতিপক্ষ তৃতীয় গোল করে দেওয়ার পর তাঁর সব আশা শেষ হয়ে যায়, এমনই জানালেন কুয়াদ্রাত। ম্যাচের পর সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, “ম্যাচের শুরুতেই দু’গোল খেয়ে গেলে ম্যাচ কঠিন হওয়ারই কথা। হাফ টাইমে ছেলেদের বলি, আমরা যদি একটা গোল করতে পারি, তা হলে ম্যাচটা আমরা জিতব। তাতে দলের ছেলেরা উজ্জীবিত হয়। কৌশলে কিছু বদল করে তারা যখন ফের মাঠে নামে, তখন ওরা নিজেদের সেরাটুকু দেওয়ার অনেক চেষ্টা করে। যাতে ম্যাচটা জেতা যায়।


কিন্তু ৩-১ হয়ে যাওয়ার পর সব শেষ হয়ে যায়। ১৫ মিনিটের মধ্যে ২-০ হওয়াটা আমাদের বড় ধাক্কা দিলেও আমাদের হাতে তখন সময় ছিল। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে আমাদের ছেলেরা গোল করে ওদের কোণঠাসা করে দেবে। কিন্তু তৃতীয় গোলটা হওয়ার পর আর কিছু করার ছিল না। ওটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট”, মনে করেন আইএসএল জয়ী কোচ।                                                                                                                    ---- তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল মিডিয়া