টম মুডি থেকে শুরু করে মাইকেন ভন, প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা প্রশ্ন তুলছেন, রবীন্দ্র জাডেজা কি আদৌ মাঠে না নামতে পারার মতো চোট পেয়েছিলেন? যদি পেয়ে থাকেন, তাহলে মাঠে সঙ্গে সঙ্গে কোনও চিকিৎসককে নামতে হল না কেন? কী করেই বা তিনি চোট পেয়েও বাকি চার বলে ব্যাটিং করলেন, দুটি বাউন্ডারি মারলেন!
ঘটনাটি ভারতীয় ইনিংসের শেষ ওভারের। অস্ট্রেলিয়ার ফাস্টবোলার মিচেল স্টার্কের বাউন্সার জাডেজার ব্যাটের উপরিভাগে লেগে হেলমেটে আছড়ে পড়ে। স্টার্ক এমনিতেই আগুনে গতিতে বল করেন। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বজয়ের নায়ককে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্টবোলার মনে করা হয়। তাঁর বলের গতি এতটাই বেশি ছিল যে, জাডেজার হেলমেটে লাগার পর বলটি উড়ে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। যদিও সেখানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলে যাওয়া মোজেস অনরিকস ফিল্ডিং করছিলেন এবং তিনি ক্যাচটি ধরতে পারেননি। বেঁচে যান জাডেজা। সেই ওভারে স্টার্ককে পরপর দুই বলে দুটি বাউন্ডারিও মারেন তিনি।
ভারতীয় ইনিংসের শেষে জানা যায়, কনকাশনের শিকার জাডেজা। যার অর্থ, মাথায় আঘাত লাগায় তিনি কিছুটা ধোঁয়াটে দেখছেন। ফিল হিউজের মৃত্যুর পর থেকে কনকাশন নিয়ে কড়াকড়ি করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। এখন আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী, কেউ মাথায় আঘাত পেয়ে কনকাশনের শিকার হলে, তাঁর পরিবর্তে অন্য ক্রিকেটার মাঠে নামতে পারবেন। শুধু তাই নয়, পরিবর্ত ক্রিকেটার চোট পাওয়া প্লেয়ারের পরিবর্তে ব্যাটিং ও বোলিংও করতে পারবেন।
জাডেজার কনকাশন সাব হিসাবে শুক্রবার মাঠে নামেন যুজবেন্দ্র চাহাল। জাডেজার পরিবর্তে তিনি ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ২৫ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচের সেরা হন চাহালই। তবে, বিতর্ক শুরু হয় চাহালের খেলা নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের শুরুতে চাহালের খেলার কথা ঘোষণা হতেই অজি কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে দেখা যায় ম্যাটচ রেফারি ডেভিড বুনের সঙ্গে উত্তেজিতভাবে কথা বলছেন। যদিও কনকাশন সাব নিয়মকে অগ্রাহ্য করতে পারেননি বুন।
বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। মাইকেন ভন ট্যুইট করেন, ‘জাডেজার কনকাশন হয়েছে কি না পরীক্ষা করে কোনও ফিজিও বা চিকিৎসক এলেন না। পরে তো মনে হল ওর পায়ে চোট লেগেছে। তারপর দেখলাম ভারত কনকাশন সাব নিয়েছে। সন্দেহ হচ্ছে।’ টম মুডি লেখেন, ‘জাডেজার পরিবর্তে চাহালের খেলা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে বলার আছে, কেন জাডেজা চোট পাওয়ার পর কোনও ডাক্তার বা ফিজিওকে দেখা গেল না। সেটাই তো নিয়ম, তাই না?’
তবে ভারতীয় শিবিরের সমর্থনে সুর চড়িয়েছেন আকাশ চোপড়া, রোহন গাওস্কররা। আকাশ লিখেছেন, ‘কনকাশনকে কখনওই হাল্কাভাবে দেখা উচিত নয়।’ প্রজ্ঞান ওঝার খোঁচা, ‘এই পরিবর্তন অস্ট্রেলিয়া শিবিরের নিশ্চয়ই ভাল লাগেনি।’