সৌমিত্র রায়, কলকাতা: অদম্য জেদের কাছে হার মানে সমস্ত প্রতিকূলতা। খুলে যায় এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা। শীতের কলকাতায় এসে এই বার্তা দিলেন ২০২১-এর প্যারালিম্পিক্সে পদকজয়ীরা। একটি বেসরকারি সংস্থার আমন্ত্রণে শহরে ঘুরে গেলেন ৯ জন প্যারা অলিম্পিয়ান।


কারও আবার ভরসা হুইল চেয়ার, কারও ভরসা কৃত্রিম অঙ্গ। তবু কোনও প্রতিকূলতাই দমাতে পারেনি তাঁদের। তাই তাঁরা আজ শুধু দেশ নয়, বিশ্বের কাজে নজির। কলকাতায় ঘুরে গেলেন ২০২১-এর প্যারালিম্পিক্সের পদক জয়ীরা। ১৯ জন পদকজয়ীর মধ্যে এসেছিলেন ৯ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ভাবিনা পটেল, মনোজ সরকার, সুমিত আন্টিল, দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়া।


হুইল চেয়ারে বসেই এবার বাজিমাত করেছেন ভাবিনা। প্যারালিম্পিক্সে টেবল টেনিসে জিতেছেন রুপো। কৃত্রিম পা নিয়ে জ্যাভলিনে সোনা জিতেছেন সুমিত আন্টিল। ইচ্ছাশক্তি আর জেদই যে জয় ছিনিয়ে আনতে পারেন বুঝিয়ে দিয়েছেন এঁরা সবাই। 


এবারের প্যারালিম্পিক্সে পদক তালিকায় ২৪ নম্বরে শেষ করে ভারত। টোকিও অলিম্পিক্সে ৭টি পদক জিতেছিল ভারত। দুর্দান্ত সাফল্য প্রশংসা কুড়িয়েছিল দেশবাসীর। কিন্তু প্যারালিম্পিক্সে সেই সাফল্যকেও ছাপিয়ে যান ভাবিনা, সুমিত, দেবেন্দ্ররা। টোকিওয় পাঁচটি সোনা, আটটি রুপো ও ৬টি ব্রোঞ্জ সহ ১৯টি পদক জেতেন ভারতীয় প্যারা অ্যাথলিটরা।


১৯৬৮ সালে প্রথমবার প্যারালিম্পিক্সে অংশ নিয়েছিল ভারত। কিন্তু এত বড়় সাফল্য কোনওবারই পায়নি ভারতীয় দল। রিও প্যারালিম্পিক্স পর্যন্ত ভারতের ঝুলিতে ছিল ১২টি পদক। এবার অভাবনীয় সাফল্য আসে। টোকিও প্যারালিম্পিক্সে শেষ দিনেও ভারতের পদক জয় অব্যাহত থাকে। শেষ দিন ব্যাডমিন্টনে সোনা জিতলেন কৃষ্ণা নাগর। ব্যাডমিন্টনের পুরুষদের সিঙ্গলসে হংকংয়ের প্রতিপক্ষর বিরুদ্ধে ২১-১৭, ১৬-২১, ২১-১৭ ফলে বাজিমাত করেন তিনি।  প্যারালিম্পিক্সে পঞ্চম সোনার পদক জিতল ভারত। সবমিলিয়ে ১৯টি পদকজয় ভারতের। 


প্যারালিম্পিক্সের এই সাফল্য নিঃসন্দেহে তরুণ অ্যাথলিটদের অনুপ্রাণিত করবে। বিশেষ করে বিশেষভাবে সক্ষম অ্যাথলিটদের কাছে ভাবিনা, দেবেন্দ্ররা অনুপ্রেরণা। ক্রীড়ামহলের আশা, ভবিষ্যতে প্যারালিম্পিক্সে আরও সাফল্য পাবে ভারত।