সিডনি: অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের বিরুদ্ধে ফের ক্রিকেট মাঠে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ উঠলেও, তাঁর পাশে দাঁড়ালেন কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। তাঁর দাবি, সিডনিতে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের তৃতীয় টেস্টের পঞ্চম দিন স্মিথের বিরুদ্ধে ভারতের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থের ক্রিজে গার্ড নেওয়ার জায়গাটি পা দিয়ে ঘষে ঘষে নষ্ট করে দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।


সিডনি টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও, পঞ্চম দিন পন্থের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সুবাদে ম্যাচ জয়ের আশা জাগিয়ে তোলে ভারতীয় দল। পন্থ ৯৭ রান করেন। এরই মধ্যে জলপানের বিরতির সময় স্টাম্প ক্যামেরায় দেখা যায়, ক্রিজে গিয়ে শ্যাডো প্র্যাকটিস করতে থাকেন স্মিথ। পন্থ যেখানে গার্ড নিচ্ছিলেন, সেই জায়গাটিতে পা ঘষতে দেখা যায় তাঁকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। তাঁরা স্মিথের বিরুদ্ধে ফের খেলার মাঠে অন্যায় আচরণ ও প্রতারণার অভিযোগ তোলেন।

ল্যাঙ্গার অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘স্টিভ স্মিথ সম্পর্কে যে সমস্ত ভিত্তিহীন ও হাস্যকর কথাবার্তা শুনছি, সেগুলি বিশ্বাস করতে পারছি না। যারা স্টিভ স্মিথকে চেনে তারা জানে, ও মাঝেমধ্যেই নানারকম কাণ্ড ঘটায় যা নিয়ে আলোচনা চলে। আমরা গত দু’বছর ধরেই এসব ব্যাপার নিয়ে হাসাহাসি করছি। আমি প্রকাশ্য এবং একান্ত আলাপচারিতার সময়ও বলেছি, ও অত্যন্ত চঞ্চল। স্টিভ স্মিথ ক্রিজে যা করেছে, তা ও বেশিরভাগ ম্যাচেই করে থাকে। ও খেলার কথাই ভাবছিল। যদি কেউ ভেবে থাকে, এক মিলি সেকেন্ডের জন্যও স্মিথ খারাপ কিছু করার চেষ্টা করছিল, তাহলে সেই ভাবনা ভুল। সিডনিতে যে উইকেটে খেলা হচ্ছিল, সেটা পুরোপুরি পাটা ছিল। ওই পিচ কংক্রিকেটর মতো শক্ত ছিল। এই ক্রিজে দাগ কাটা বা গার্ড মার্ক নষ্ট করতে হলে বুটের নীচে ১৫ ইঞ্চি লম্বা স্পাইক দরকার। তাছাড়া স্টিভ স্মিথ ক্রিজের ধারেকাছেও যায়নি। তাই ওর সম্পর্কে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা পুরোপুরি হাস্যকর।’

স্মিথ এর আগেও ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন অনৈতিক আচরণের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরে বেঙ্গালুরু টেস্টে ডিআরএস-এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে কোচ ও সতীর্থদের মতামত জানতে চেয়েছিলেন তিনি। এর জন্য তিনি প্রবল সমালোচিত হন। সেই সময় তিনি দাবি করেছিলেন, ‘মাথা কাজ করছিল না।’ এরপর ২০১৮ সালেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কেপটাউন টেস্টে বল-বিকৃতির দায়ে নির্বাসিত হন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। নির্বাসন কাটিয়ে তাঁরা মাঠে ফিরেছেন। ওয়ার্নার আর কোনও বিতর্কে না জড়ালেও, স্মিথের বিরুদ্ধে ফের প্রতারণার অভিযোগ উঠল।

ল্যাঙ্গারের অবশ্য দাবি, ‘নির্বাসন কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর থেকে মাঠে ও মাঠের বাইরে স্মিথের আচরণ প্রশংসনীয়। ওর হয়ে ওর ব্যাটই কথা বলছে। ইংল্যান্ডে ওকে যেভাবে গালমন্দ করা হয়েছে, সেটা আমি অন্য কারও ক্ষেত্রে দেখিনি। স্মিথ কিন্তু মেজাজ হারায়নি। ও শুধু হাসছিল এবং ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে।’