কলকাতা: অর্থ কখনও খেলাধুলোর স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, মনে করেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি গিয়েছিলেন মোহনবাগান ক্লাবে। এদিনই অমর একাদশের মূর্তি উন্মোচিত হল ক্লাবে। সেখানে সৌরভ বলেন, “যে কোনও খেলাতেই খেলোয়াড়ের জায়গা সবার আগে। অনেকেই বলেন, খেলতে গেলে পয়সা লাগে। কিন্তু (সুনীল) গাওস্কর, কপিলদের সময়েও তো পয়সা ছিল না। খেলা কি আটকে থেকেছে? আমিও প্রথম প্রথম রঞ্জি ম্যাচ খেলার সময় ৪০০ টাকা পেতাম। ক্রিকেটার হওয়ার পথে তা কোনও দিনই বাধা হয়নি। আসল ব্যাপার হল হৃদয় এবং জেদ। নিজের ইচ্ছা, পায়ে বল এবং মাঠ থাকলেই ফুটবলার হওয়া যায়। অর্থ সেখানে কোনও বাধা হতে পারে না।”


পাশাপাশি সৌরভ বলেন, ভারতের খেলাধুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের নয়, আরও বেশি করে এগিয়ে আসতে হবে খেলোয়াড়দের। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে যুক্ত করতে হবে ক্লাবে। 


বৃহস্পতিবার মোহনবাগান তাঁবুতে ১৯১১-র আইএফএ শিল্ডজয়ী ১১ জন ফুটবলারের (যাঁরা অমর একাদশ নামে পরিচিত) মূর্তি উন্মোচন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সৌরভ। সেখানে নিজের খেলা দেখা, খেলাধুলোর মান এবং প্রশাসনিক বিষয়-সহ বিভিন্ন দিকের কথা তুলে ধরলেন তিনি।


সৌরভ বলেন, “খেলাধুলো তখনই এগোবে যদি প্রাক্তন খেলোয়াড়েরা তার সঙ্গে যুক্ত থাকেন।” মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্তকে অনুরোধও করেন ক্লাবের প্রাক্তন খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে ভারতের বড় খেলাধুলোগুলিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শীর্ষ পদে রয়েছেন প্রাক্তন খেলোয়াড়েরা। ক্রিকেটে রয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী রজার বিনি, ফুটবলে কল্যাণ চৌবে, অ্যাথলেটিক্সে আদিল সুমারিওয়ালা, হকিতে দিলীপ টিরকে, অলিম্পিক্স সংস্থায় পি টি ঊষা প্রমুখ। সৌরভ চান, এই তালিকা আরও দীর্ঘ হোক।


কার্যত নিস্তরঙ্গ অনুষ্ঠান হঠাৎ করেই হয়ে উঠল আইএসএল বনাম ময়দানী ফুটবলের দ্বৈরথে। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বাংলার ফুটবলের উন্নতিতে ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান মহমেডানের সামগ্রিক উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করলেন। তার বক্তব্যে উঠে এল আইএসএলে মোহনবাগান বনাম মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচের রেফারিংয়ের প্রসঙ্গ। এই জঘন্য রেফারিংয়ের প্রতিবাদে আইএসএল ছেড়ে বেরিয়ে এসে কলকাতার ময়দানে ফুটবল ফেরানোর ডাক দিলেন। আইএসএলে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে না বলেও তোপ দাগেন তিনি।


মোহনবাগানের তরফে এ দিন সৌরভ এবং রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন সদস্য কার্ড। সৌরভ বলেন, “আমি এই ক্লাবের সঙ্গে দু’ভাবে যুক্ত। ছোটবেলায় বাবার কার্ড নিয়ে এসে র‌্যাম্পার্টে বসে চুটিয়ে খেলা দেখেছি। বিদেশ (বসু), মানস (ভট্টাচার্য), প্রসূন (বন্দ্যোপাধ্যায়) কোথায় খেলত এখনও বলে দিতে পারি। এত বার এসে খেলা দেখছি। আসলে ছোটবেলায় বেশি ফুটবল দেখেছি। ক্রিকেটে আসা অনেক পরে। দেখে ভাল লাগছে যে ১৯১১ সালের ফুটবলারদের সম্মান দিচ্ছে মোহনবাগান। সেই সময় থেকেই সবাই ভেবেছে আমরাও খেলতে পারি।”


আরও পড়ুন: ৩ জন একসঙ্গে খেললেই ভয় পাবে প্রতিপক্ষ! কেকেআর সমর্থকদের জন্য আশার কথা শোনালেন গম্ভীর


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে