সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ম্যাচ শুরু হতে তখনও দু'ঘণ্টারও বেশি সময় বাকি। ইডেন গার্ডেন্স (Eden Gardens) চত্বরে সবুজ ঝড়। কারও পরনের জার্সিতে, কারও হাতে ধরা পতাকায়, কারও গালে তুলির টানে, কারও আবার মাথার টুপিতে। তবে এ সবুজ পাকিস্তানের নয়। এ সবুজ বাংলাদেশের (Pak vs Ban)। ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে নয়, এই উন্মাদনার উৎস পদ্মাপারে। ইডেনে সমর্থকদের ম্যাচে পাকিস্তানকে অন্তত ১০ উইকেটে হারানোর পরিস্থিতি বাংলাদেশের। শাপে বর হয়েছে ভিসা জটিলতায় আম পাকিস্তানীদের ভারতে আসা বানচাল হয়ে যাওয়া।
তবু মঙ্গলবার ম্যাচের প্রর্থমার্ধে ইডেন গার্ডেন্সের রিংটোনটা সেট করে দিল পাকিস্তানই (ODI World Cup)। আরও নিখুঁতভাবে বললে, পাক পেসাররা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আগুন ছোটালেন। কাকে ছেড়ে কার কথা লেখা হবে। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে বলা হয় পাকিস্তানের নতুন প্রজন্মের পেস বোলিংয়ের সেরা মুখ। কেন, তা এদিন বোঝালেন বাঁহাতি পেসার। নিজের প্রথম স্পেলে প্রথম ২ ওভারে পরপর জোড়া উইকেট। বাংলাদেশ ইনিংসকে শয্য়াশায়ী করে দেওয়ার সেই শুরু।
তারপর সেই শয্যাকেই শরশয্য়া বানিয়ে তুললেন মহম্মদ ওয়াসিম, হ্যারিস রউফরা। নাসিম শাহ চোট পেয়ে ছিটকে না গেলে ডানহাতি পেসার ওয়াসিমের প্রথম একাদশে খেলারই কথা নয়। এমনকী, টুর্নামেন্টের প্রথমার্ধে তাঁকে বসিয়ে রেখে হাসান আলিকে খেলাচ্ছিল পাকিস্তান। ওয়াসিম যখন দলে সুযোগ পেয়েছেন, সেমিফাইনালের দৌড় থেকে কার্যত ছিটকে গিয়েছে পাকিস্তান। আর সেই ক্ষত ভুলিয়ে একের পর এক বিধ্বংসী স্পেল করে চলেছেন ডানহাতি পেসার। নিয়মিতভাবে ঘণ্টায় ১৪০-১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল করেন। বল দুদিকে স্যুইং করান। আর মঙ্গলবার তার সঙ্গে মিশিয়ে দিলেন রিভার্স স্যুইংয়ের বিষ। যা দেখে মুগ্ধ রিভার্স স্যুইংয়ের অন্যতম ধারক ও বাহক, কিংবদন্তি ওয়াকার ইউনিসও। পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার সরফরাজ নওয়াজের হাত ধরে যে বিরল শিল্পের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল বিশ্ব।
পাক পেস বোলিংয়ের গোলাগুলির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করল বাংলাদেশ ব্যাটিং। ২৯ বল বাকি থাকতে, ৪৫.১ ওভারে, মাত্র ২০৪ রানে অল আউট হয়ে গেল বাংলাদেশ। তাও সেই স্কোরেও পৌঁছনো হতো না, যদি না ফের ঢাল হয়ে উঠতেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৭০ বল করে ৫৬ রান করে ফের বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান বলেছিলেন, রিয়াদ ভাইয়ের (দলে মাহমুদুল্লাহর ডাকনাম) আরও আগে ব্যাট করা উচিত। এদিন সাত নম্বরে নয়, মাহমুদুল্লাহ নেমেছিলেন পাঁচ নম্বরে। আফ্রিদির যে বলে তিনি বোল্ড হলেন, বিশ্বের কোনও ব্যাটারই তার মোকাবিলা করতে পারতেন না।
আর লড়াই করলেন লিটন দাস ও শাকিব আল হাসান। ৪৫ রান করে লিটন যে শট খেলে আউট হলেন, তারপর আক্ষেপে তাঁর সারারাত ঘুম এলে হয়! শাকিব পাল্টা আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন। আউট হলেন ৪৩ রান করে।
আগের ম্যাচে ২২৯ করে ইডেনে ম্যাচ জিতেছেন ডাচরা। মঙ্গলবার কি সেরকম কোনও নজির গড়তে পারবেন বঙ্গ পেসাররা?
আরও পড়ুন: ODI World Cup Exclusive: জন্মদিনে ইডেনে নিজের ছবি দেওয়া কেক কাটবেন কোহলি, স্মারক-আতসবাজিতে নায়ক বরণ
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন