কলকাতা: বিশ্বকাপে (ODI World Cup) জোড়া জয় দিয়ে শুরু। তারপর আমদাবাদের সেই ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ভারত। একপেশেভাবে হেরে গেল পাকিস্তান। তারপরই যেন বিপর্যয়ের শুরু পাকিস্তানের। পরপর চার ম্যাচে হার। শেষ ম্যাচে ইডেনে ইংল্যান্ডের কাছেও পরাজয়। সব মিলিয়ে ৯ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান।


আর তারপর থেকেই প্রাক্তন ক্রিকেটারদের তোপের মুখে বাবর আজ়মরা। পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক শোয়েব মালিক তো সাফ বলে দিচ্ছেন, ভারতকে দেখে শেখা উচিত পাকিস্তানের। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকেও তুলোধনা করেছেন সানিয়া মির্জার স্বামী। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে শোয়েব বলেছেন, 'এই বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে দেখুন। সব বিভাগে সমান শক্তিশালী। আমি শুধু ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিংয়ের কথা বলছি না। ভারতকে চোট-আঘাত সমস্যাও সামলাতে হয়েছে। তবে ওদের প্ল্যান বি তৈরি ছিল। রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী হওয়াটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।'


শোয়েব আরও বলেছেন, 'সব ফর্ম্যাটে রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী হওয়া দরকার। তাদের সমানভাবে সুযোগ দেওয়া দরকার। যাতে সুযোগ এলেই সকলে প্রস্তুত থাকে। আমরা দল পুনর্গঠন শুরু করি। কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্ত অবিচল থাকতে পারি না। আমাদের সিদ্ধান্ত আঁকড়ে থাকতে পারি না। ভারতকে দেখে আমাদের শেখা উচিত।'


সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়েছে অধিনায়ক বাবর আজমকে (Babar Azam)। তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হয়ত দেশে ফেরার পর নিজের অধিনায়কত্বও হারাতে পারেন বাবর। তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও পাক অধিনায়কের পাশে দাঁড়াচ্ছেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের কোচ মিকি আর্থার। 


গতকাল ইংল্যান্ড ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে মিকি জানান, ''আমরা একটা ভীষণ শক্তিশালী দল। প্রত্য়েকে প্রত্যেকের পাশে থাকার চেষ্টা করি সবসময়। আমি বাবরের সঙ্গেই আছি। ও একজন তরুণ ক্রিকেটার। প্রতিদিন শিখছে। আমরা জানি ও একজন বিশ্বমানের ব্যাটার। কিন্তু নেতৃত্বটা একদম আলাদা। ওকে সময় দেওয়া উচিত। কোনও ভুলই অন্যায় নয়, যদি সেই ভুল থেকে কেউ শিক্ষা নেয়। বাবর ভুল সিদ্ধান্ত নিলে সেখান থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। দলগতভাবেই আমাদের অনেক ভুল হয়েছে এই বিশ্বকাপে। কিন্তু সেখান থেকেও শিক্ষা নিয়েছে সবাই।''


শনিবার বাবর আজ়ম টস হারতেই সব সম্ভাবনারও সলিলসমাধি। প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ৩৩৭/৯ তুলল। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যা রেকর্ড। এর আগে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৩৩৪/৯। ট্রেন্ট ব্রিজে সেই ম্যাচে হেরে গিয়েছিল ইংল্যান্ডই। ইডেনে ইংল্যান্ড ইনিংসের শেষে যখন পাকিস্তানের সামনে সেমিফাইনালে যাওয়ার অঙ্ক কষা হল, অনেকে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।


নিউজ়িল্যান্ডকে নেট রান রেটে ছাপিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কনফার্ম করতে ৬.৪ ওভারে ৩৩৮ তুলতে হতো পাকিস্তানকে!  ৪০ বলে ৩৩৮ রান তুলতে হতো বাবর আজ়মদের (Babar Azam)। ৪০টি বলে টানা ছক্কা মারলেও যা সম্ভব ছিল না। সেক্ষেত্রে ২৪০ রান উঠত বোর্ডে। ৯৮ রানে ম্যাচ হারত পাকিস্তান (Pak vs Eng)। পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ৯৩ রানের ব্যবধানে হারল। ৪৩.৩ ওভারে মাত্র ২৪৪ রানে অল আউট হয়ে গেল তারা। ৪৫ বলে ৫১ রান করে একমাত্র লড়াই করলেন আঘা সলমন। বাবর আজ়ম (৪৫ বলে ৩৮ রান), মহম্মদ রিজ়ওয়ানদের (৫১ বলে ৩৬ রান) দেখে মনেই হয়নি মাঠে নামার ইচ্ছে রয়েছে বলে। বরং শেষ দিকে চালিয়ে খেলে হ্যারিস রউফ (২৩ বলে ৩৫ রান) ও মহম্মদ ওয়াসিম (১৪ বলে ১৬ অপরাজিত) দর্শকদের কিছুটা বিনোদন দিলেন।


আরও পড়ুন: ইডেনে হাফসেঞ্চুরি, ইংল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে বিশ্বকাপে এই রেকর্ড গড়লেন রুট


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial