সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিনি প্রবেশ করেছেন সবে বছর তিনেক। তবে তিনি যে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া, তা শুরুতেই প্রমাণ করেছেন শুভমন গিল (Shubman Gill)। ধারাবাহিকতার জন্য ওয়ান ডে ক্রিকেটে (ODI World Cup) আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। বিশ্বকাপেও যিনি পঞ্চাশ ব্যাটিং গড় রেখে রান করে চলেছেন। দেখে কে বলবে যে, বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার মুখে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি! যে কারণে বিশ্বকাপে ভারতের (Team India) প্রথম দুই ম্যাচে খেলতে পারেননি। তবে ফিরে এসেই ফের ব্যাট হাতে মুন্সিয়ানা দেখিয়ে চলেছেন। বলাবলি শুরু হয়ে গিয়েছে, বিরাট কোহলির পর তিনিই ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা আকর্ষণ হয়ে উঠতে চলেছেন...
প্রসঙ্গটা শুনে ফোনেই যেন জিভ কেটে ফেললেন লখবিন্দর গিল। সাফ জানিয়ে দিলেন, কী যে বলেন! শুভমন সবে কেরিয়ার শুরু করেছে। কোহলির পথে হাঁটতে গেলে অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে।
আলাপ করিয়ে দেওয়া যাক। লখবিন্দর সম্পর্কে শুভমনের বাবা। প্রথম কোচও। ক্রিকেট অন্ত প্রাণ। ছেলেকে ক্রিকেটার গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেই স্বপ্নপূরণের জন্য ভিটেবাড়ি ছাড়তেও দুবার ভাবেননি। চাষের জমিতে শুভমনের জন্য পিচ বানিয়েছিলেন লখবিন্দর নিজে। সেখানেই শুরু হয় ছোট্ট বালকের ক্রিকেট চর্চা। সব বল এমনভাবেই ব্যাটের মাঝখান দিয়ে খেলতে ছোট্ট শুভমন যে, বাবা লখবিন্দর নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন, এ ছেলে অনেক দূর যাবে। দরকার শুধু সঠিক পরিচর্যা। পাঞ্জাবের মোহালিতে প্যারাগন সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে সুখবিন্দর সিংহ টিঙ্কুর ক্রিকেট অ্যাকাডেমি। সেখানে মাত্র আট বছর বয়সে গিয়েছিলেন শুভমন। বাবা লখবিন্দর সিংহ গিলের হাত ধরে। ছেলেকে ক্রিকেটার গড়ে তোলার স্বপ্ন সফল করতে ফিরোজপুরের চক খেহরেওয়ালা গ্রাম থেকে ২০০৭ সালে চণ্ডীগড়ে চলে আসেন লখবিন্দর। বাকিটা ইতিহাস।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে লখবিন্দর এখন আমদাবাদে। পরিবারের সকলকে নিয়ে টিম ইন্ডিয়ার জন্য গলা ফাটাতে গিয়েছেন। সেখান থেকেই মোবাইল ফোনে বলছিলেন, 'শুভমন সৌভাগ্যবান। কেরিয়ারের শুরুতেই বিরাটকে সতীর্থ হিসাবে পেয়েছে। সামনে থেকে এরকম একজন কিংবদন্তিকে দেখে শিখছে। ভীষণ আগলে রাখে শুভমনকে।'
লখবিন্দর জানালেন, কঠিন পরিস্থিতিতেও কীরকম পাশে ছিলেন কোহলি। বলছিলেন, 'সব ক্রিকেটারের জীবনেই ওঠা-পড়া থাকে। শুভমন রান না পেলে ওকে মানসিকভাবে ভীষণ সমর্থন জোগায় কোহলি। ব্যাটিং নিয়েও ওদের কথা হয়। কীভাবে বড় ইনিংস খেলবে, কোন বোলারের বিরুদ্ধে কীভাবে খেলা উচিত, সব ব্যাপারেই পরামর্শ দেয়।' যোগ করলেন, 'বিরাট মাঠের বাইরেও শুভমনের বন্ধুর মতো। গল্প করে, আড্ডা দেয়।'
আমদাবাদে ফাইনালের আগে কোহলির সঙ্গে দেখা করেছেন লখবিন্দর। সঙ্গে ছিলেন শুভমনের মা-ও। দুজনের সঙ্গেই কুশল বিনিময় করেছেন বিরাট। লখবিন্দর বলছিলেন, 'বিশ্বকাপের মাঝে, তার ওপর ফাইনালের আগে ক্রিকেটারদের একটু মনোনিবেশ করতে দেওয়া উচিত। তাই বেশি সময় নিইনি। শুধু হাই-হ্যালোই হয়েছে।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন
https://t.me/abpanandaofficial
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।