টোকিও: কিংবদন্তিরা মনে হয় এরকমই হন।
তাঁকে নিয়ে গোটা দেশে উৎসব চলছে। ভারতের একমাত্র মহিলা হিসাবে অলিম্পিক্সে জোড়া পদক এসেছে তাঁর ঝুলিতে। প্রধানমন্ত্রী থেকে রাষ্ট্রপতি, সকলে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অথচ আবেগে ভেসে যাচ্ছেন না পি ভি সিন্ধু। বরং তিনি সংশয়ে। ব্রোঞ্জ জয়ের জন্য খুশি হবেন, নাকি দুঃখিত হবেন কারণ, ফাইনালে উঠতে পারেননি। সোনা বা রুপো জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।
সোনার স্বপ্ন নিয়ে অলিম্পিক্সে এলেও ব্রোঞ্জে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাঁকে। রবিবার ম্যাচের পর সিন্ধু বলেছেন, 'বহু বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করছি। কিন্তু এখন আমার মনে বিভিন্ন ধরনের আবেগ কাজ করছে। ব্রোঞ্জ জিতে খুশি হব নাকি সোনা জেতার সুযোগ হারানোয় দুঃখিত, সেটা নিজেই বুঝতে পারছি না। তবে এখন আবেগকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। পদক পেয়ে সত্যিই খুশি। দেশকে গর্বিত করতে পেরে খুশি।'
টোকিও অলিম্পিক্সে মেয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছে। টিভির সামনে মেয়ের মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে ছুঁড়ে দেওয়ার ছবিটা দেখার পরই আবেগে ভাসলেন পিভি সিন্ধুর বাবা রমনা সিন্ধু। সোনা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হলেও টোকিও থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে না ভারতের তারকা শাটলারকে।
সিন্ধুর বাবা রমনা সিন্ধু বলেন, 'আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি কৃতজ্ঞ মিডিয়ার কাছেও। গতকালই মেয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। ওকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছিলাম। ভীষণ গর্ব হচ্ছে যে প্রথম ভারতীয় মহিলা অ্যাথলিট হিসেবে ২টো অলিম্পিক্স পদক জিতল সিন্ধু।' সিন্ধুর বাবা আরও বলেন, 'ওর চোখে গতকাল জল ছিল ম্যাচের পর। কিন্তু আমি ওকে বলেছিলাম যে সেই ম্যাচ ভুলে যেন রবিবারের ম্যাচের দিকে ফোকাস করে ও। কারণ পদক জয়ের সম্ভাবনা যে তখনও বাকি ছিল।'
রিও অলিম্পিক্সে রুপোজয়ী সিন্ধু এবারও অলিম্পিক্সের শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন। তবে সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ায় তাঁর সোনা বা রুপোর পদক জয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গিয়েছিল। রবিবার ছিল ব্রোঞ্জের ম্যাচ। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই সেমিফাইনালের পরাজিতরা। হে বিং জিয়াওয়ের বিরুদ্ধে সিন্ধু প্রথম গেম জিতে নেন মাত্র ২৩ মিনিটে। ২১-১৩ ব্যবধানে। দ্বিতীয় গেমে চিনা প্রতিপক্ষ কিছুটা লড়াই করলেও শেষরক্ষা হয়নি। দ্বিতীয় গেমও জিতে নেন সিন্ধু। দ্বিতীয় গেমের ব্যবধান সিন্ধুর পক্ষে ২১-১৫।
সিন্ধুর বাবা বলেন, 'ও বরাবরই আগ্রাসী। এদিনও ওর খেলায় আগ্রাসন ধরা পড়েছিল। আমি ম্যাচের আগেই বলেছিলাম যে কিছু শট যেন ও বারবার খেলে। আমরা সবাই ভীষণ খুশি। আমি আশাবাদী আগামী অলিম্পিক্সেও সিন্ধুকে কোর্টে দেখা যাবে।' মেয়ের এত ভাল পারফর্ম, বাবা মায়ের কাছে কিছু আবদার এসেছে এখনও সিন্ধুর বাবা বলছেন, 'এখনও পর্যন্ত যদিও কোনও আবদার করেনি মেয়ে।' মেয়ের সাফল্যে বেজায় খুশি সিন্ধুর মা বলছেন, 'সোনা জিততে পারেনি ও। কিন্তু আমার কাছে ব্রোঞ্জ জয়ও অনেক বড় কৃতিত্বের। আলাদা কিছুই নয়।'