কলকাতা: রিকি পন্টিং (Ricky Ponting) মানেই কলার তোলা ঔদ্ধত্য। কখনও চিউয়িং গাম চিবোতে চিবোতে, কখনও আগ্রাসী স্লেজিংয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে দেওয়ার কৌশল। কারণ, পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বাস করত যে, মাঠে নামার আগেই প্রতিপক্ষ শিবিরে হানা দাও। মানসিকভাবে ম্যাচের আগেই দুমড়ে মুচড়ে দাও প্রতিদ্বন্দ্বীদের।
অথচ এ কোন অস্ট্রেলিয়া! দলের অধিনায়কের নাম বিশ্বকাপজয়ী পন্টিং। কিন্তু কোথায় সেই ঔদ্ধত্য আর আগ্রাসন? বরং এ যেন কেমন নেতিয়ে পড়া মনোভাব। এই অস্ট্রেলিয়াকে দেখে চমকে উঠেছিলেন ভি ভি এস লক্ষ্মণ (VVS Laxman)। দিল্লিতে ফিরোজ শাহ কোটলায় ডাবল সেঞ্চুরি করার পর লক্ষ্মণ উপলব্ধি করেন যে, তিনি তো ঢের অজি দলকে সামলেছেন। কিন্তু এরকম নেতিয়ে পড়া অস্ট্রেলিয়া তো কখনও দেখেননি!
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বরাবরই 'মধুর' সম্পর্ক লক্ষ্মণের। অজিদের দেখলেই যেন জ্বলে উঠতেন। নিজের সেরাটা বার করে আনতেন বিশ্বের সেরা দলের বিরুদ্ধে।
সাল ২০০৮। ভারত সফরে এসেছে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া। আর কে নেই সেই দলে? ম্যাথু হেডেন, সাইমন কাটিচ, মাইকেল ক্লার্ক, শেন ওয়াটসন, ব্রেট লি, মিচেল জনসন। বেঙ্গালুরুতে চার টেস্ট ম্যাচের সিরিজের প্রথমটি ড্র। দ্বিতীয় টেস্টে জিতে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গিয়েছে অনিল কুম্বলের ভারত। তৃতীয় টেস্ট ফিরোজ শাহ কোটলায়।
আর সেই ম্যাচে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত। সেখান থেকে ইনিংসের হাল ধরেন গৌতম গম্ভীর ও লক্ষ্মণ। দুজনই ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ব্রেট লি, মিচেল জনসনদের বোলিং আক্রমণকে সেদিন সাধারণের স্তরে নামিয়ে এনেছিলেন লক্ষ্মণ। অপরাজিত ২০০ রান করার ফাঁকে মেরেছিলেন ২৩টি বাউন্ডারি। ৬১৩/৭ তুলে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছিল ভারত। সেই সঙ্গে কার্যত ঠিক হয়ে গিয়েছিল, আর যাই হোক, অলৌকিক কিছু না হলে সেই ম্যাচে ভারত হারবে না।
হারেওনি। ম্যাচ ড্র হয়েছিল। আর চতুর্থ টেস্টে জিতেছিল ভারত। সিরিজ জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে। সেই সিরিজের পর লক্ষ্মণ বলেছিলেন, 'সেই সিরিজের শুরু থেকেই রক্ষণের খোলসে নিজেদের ঢুকিয়ে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক বলছে ওরা আন্ডারডগ, তাতেই গোটা দল যেন নেতিয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে আমাদের অধিনায়ক অনিল কুম্বলে ভীষণ ইতিবাচক ছিল। ওদের অধিনায়ক পন্টিং তো নিজেদের দল নয়, আমাদের নিয়েই বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছিল।'
আরও পড়ুন: ডিআরএসে নো বল! আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ালেন হতবাক কোহলি