প্য়ারিস: অলিম্পিক্সের মঞ্চে বক্সিংয়ের ওয়েল্টেরওয়েট ইভেন্টের শেষ ষোলোর ম্য়াচে নেমেছিলেন ইতালি ও আলজেরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু খেলা হল মাত্র ৪৬ সেকেন্ড। খেলা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন ইতালির প্রতিদ্বন্দ্বী। ম্য়াচে জয়ী ঘোষিত হন আলজেরিয়ান বক্সার ইমানে খেলিফ। তিনি হারিয়ে দেন ইতালির অ্য়াঞ্জেলা কারিনিকে। কিন্তু এই ম্য়াচটি ঘিরেই অলিম্পিক্সে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এদিন মহিলাদের ৬৬ কেজি বিভাগে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন দু বক্সার। সেখানেই শুরুতেই ধাক্কা খান ইতালির কারিনি। আজেরিয়ার বক্সার এতটাই আক্রমণাত্মক ছিলেন যে দাঁড়াতেই পারছিলেন না ইতালির অ্যাঞ্জেলা কারিনি। ৩০ সেকেন্ডে একবার হেডগার্ড ঠিক করেন বিরতি নিয়ে। এরপর রিংয়ে ফিরে ৪৫ সেকেন্ডের মাথায় ফের বেরিয়ে যান। এরপর আর ফিরতে পারেননি। চোখের জলে বাউট ছাড়েন কারিনি। এমনকী তিনি হাতও মেলাননি আলজেরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে। এরপরই আসল কারণ প্রকাশ্যে আসে। আলজেরিয়ার ইমানে খেলিফ গত বছর লিঙ্গ পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। XY ক্রোমোজোমের অ্যাথলিট হওয়ায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সোনার ম্যাচের আগেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। প্যারিস অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছিলেন খেলিফ। কিন্তু এই ম্য়াচে কারিনির হারের পরই অনেকেই অলিম্পিক্স কমিটিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। কেন পুরুষের বৈশিষ্ঠ্য থাকা একজনকে মহিলাদের ইভেন্টের জন্য খেলার অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ম্য়াচ হারের পর কারিনি বলেন, ''আমি ম্য়াচ শেষ করতে পারিনি। আমি নাকে ভীষণ ব্যথা অনুভব করছিলাম। একজন মহিলা হিসেবে আমি এই ম্য়াচে আর খেলতে চাইনি। আমি আশা করব আমার দেশ, আমার বাবা আমাকে ভুল বুঝবে না। আমি নিজের জন্য খেলাটা থামিয়ে দিয়েছিলাম।'' খেলিফের উদ্দেশে কারিনি বলেন, ''আমি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। কারও দিকে আঙুল তোলা আমার লক্ষ্য নয়। আমি কারও দিকে আঙুল তুলতে আসিনি এখানে।'' অন্যদিকে খেলিফ বলেন, ''আমার একটাই লক্ষ্য সোনা জেতা। প্রত্যেকের সঙ্গেই লড়াই করেই সোনা জিততে চাই।''
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে তুমুল বিতর্ক হচ্ছে। হ্যাসট্যাগ 'শেম' ট্রেন্ডিংয়ে চলছে। আপাতত জল কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: ব্যাডমিন্টনে হতাশা, কোয়ার্টার ফাইনালে এগিয়ে থেকেও হেরে বিদায় সাত্ত্বিক-চিরাগের