ভোপাল: ১৫ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ ব্য়াঘ্র প্রকল্পের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাঘিনী ‘কলারওয়ালি’-র। এই খবরে শোকপ্রকাশ করেছেন সচিন তেন্ডুলকরও। ক্রিকেটের কিংবদন্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘এরকম একটি রাজকীয় বাঘিনী যখন বরাবরের মতো নীরব হয়ে যায়, তখন সেটা কতটা হৃদয়বিদারক, তা বন্যপ্রাণপ্রেমী ও এ বিষয়ে উৎসাহিত ব্যক্তিরা বুঝতে পারবেন। শান্তিতে বিশ্রাম নাও কলারওয়ালি’।


ভারতের অন্য়তম জনপ্রিয় বাঘিনী ‘কলারওয়ালি’। ১৫ বছরেরও বেশি সময় বেঁচে ছিল সে। জীবদ্দশায় সে ২৯টি শাবকের জন্ম দিয়েছে। তার মধ্যে ২৫টি শাবক বেঁচে আছে। এতগুলি শাবকের জন্ম দেওয়ার জন্য তাকে ‘সুপার মম’ আখ্যা দেওয়া হয়।


‘কলারওয়ালি’-কে ‘মাতরম’ হিসেবেও ডাকা হত। তাকে শেষবার দেখা গিয়েছিল সীতাঘাট অঞ্চলে। ১৪ জানুয়ারি তাকে দেখতে পান পর্যটকরা। সে তখন মাটিতে শুয়ে ঘুমোচ্ছিল। এরপর গত শনিবার সন্ধে ৬টা ১৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। তার বয়সজনিত কারণে শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ায় নজর রাখছিলেন চিকিৎসকরা। তবে তাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। কর্মাঝিরি রেঞ্জে তার মৃত্যু হয়।


এই বাঘিনীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সারা দেশের পশুপ্রেমীরা শোকাহত হয়ে পড়েছেন। বিখ্যাত চিত্রগ্রাহক বরুণ ঠক্কর বলেছেন, ‘কলারওয়ালিকে নিয়ে আমার অসংখ্য স্মৃতি আছে। ২০০৬-০৭ থেকে আমি তার ও তার আটটি শাবকের ছবি তুলতে পেরেছি। পেঞ্চে একটি যুগের অবসান হল। কলারওয়ালির জন্যই এই অভয়ারণ্যে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে এবং এটি দেশের এক নম্বর ব্যাঘ্র প্রকল্প হয়ে উঠেছে। কলারওয়ালির মৃত্যু আমার কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি।’


২০০৮ সালের মার্চে এই বাঘিনীকে রেডিও-কলার পরানো হয়। তবে কিছুদিন পরেই সেই রেডিও-কলার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০১০-এর জানুয়ারিতে ফের তাকে রেডিও-কলার পরানো হয়। এরপরেই এই বাঘিনী ‘কলারওয়ালি’ বা টি-১৫ টাইগ্রেস হিসেবে বিখ্যাত হয়ে ওঠে।


এই বাঘিনীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানও। তাঁর ট্যুইট, ‘সুপার টাইগ্রেস মম কলারওয়ালি মধ্যপ্রদেশের গর্ব। সে ২৯টি শাবকের মা। মধ্যপ্রদেশে বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিতে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলে পেঞ্চ অভয়ারণ্যের রানির শাবকদের গর্জন অনুরণিত হবে।’