করাচি: গত সপ্তাহেই তিন ধরনের ফরম্যাটেই পাক দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সরফরাজ আহমেদকে। একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) টি ২০ ও টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিয়েছে যথাক্রমে বাবর আজম ও আজহার আলিকে। আসন্ন সিরিজের স্কোয়াডেও জায়গা পাননি সরফরাজ। এই ঘটনার পর জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে যে, ৩২ বছরের সরফরাজ অবসর গ্রহণের ঘোষণা করতে পারেন। যদিও এই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন সরফরাজের স্ত্রী। তাঁর স্বামীর প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে নিজের দৃঢ়বিশ্বাসের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সরফরাজের স্ত্রী খুশবত এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, এখনই ও কেন অবসর নেবে? ওর বয়স তো মাত্র ৩২। ধোনির বয়স কত? তিনি কি তাঁর এই বয়সে অবসর নিয়েছেন? আমার স্বামীর দুরন্ত কামব্যাক হবে। ও লড়াকু, ঠিকই ফিরে আসবে আবার।
খুশবত বলেছেন, চলতি ঘটনাক্রমে তিনি বা তাঁর স্বামী-কেউই হতাশ নন। এটা পিসিবি-র সিদ্ধান্ত এবং তাঁরা এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করেন। সরফরাজকে যে সরিয়ে দেওয়া হবে, তা তাঁরা তিনদিন আগে জানতেন। সরফরাজের সামনে সমস্ত রাস্তা বন্ধ, এমনটা মোটেই ভাবছেন না বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। বরং এখন সরফরাজ অনেক ভারমুক্তভাবে খেলতে পারবেন বলে মনে করছেন খুশভত।
এদিকে, এভাবে সরফরাজকে অধিনায়ক পদ থেকে অপসারিত করার জন্য পিসিবি-র জোর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটারদের একাংশ। পাক দলের বেশিরভাগ প্রাক্তন অধিনায়ক ও খেলোয়াড়ের সরফরাজের অপসারণকে অন্যায় বলে অভিহিত করেছেন। ওই প্রাক্তন খেলোয়াড়রা নিশানা করেছেন হেড কোচ তথা মুখ্য নির্বাচক মিসবা উল হক এবং বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিসকেও। সরফরাজের অপসারণের পিছনে মিসবা ও ওয়াকার কলকাঠি নেড়েছেন বলেও তাঁদের দাবি।
জাভেজ মিঁয়াদাদ বলেছেন, গত দুই বছরে অধিনায়ক হিসেবে অনেকটাই অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন সরফরাজ। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে ফর্মে ফেরার জন্য সময় দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।
মিঁয়াদাদ বলেছেন, আজহারকে টেস্ট দলের অধিনায়ক করাটা ঠিক আছে।কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে বাবর আজমকে অধিনায়ক হিসেবে চাইলে বোর্ডের উচিত ছিল তাঁকে গড়ে তোলা। টি ২০ ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের বোঝা বাবরের খেলায় প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মিঁয়াদাদ।
প্রাক্তন হেড কোচ তথা মুখ্য নির্বাচক মহসিন খান বলেছেন, সরফরাজের হাত ধরেই পাকিস্তান টি ২০ ক্রিকেটের এক নম্বরে পৌঁছে গিয়েছিল। অপসারিত অধিনায়ককে লড়াকু বলে অভিহিত করে মহসিন বলেছেন, তাঁকে তড়িঘড়ি অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বাবরের কেরিয়ারে প্রভাব পড়তে পারে।
প্রাক্তন পাক অধিনায়ক রশিদ লতিফ আবার একধাপ এগিয়ে বলেছেন, বাবরকে টি ২০ দলের অধিনায়ক করে বোর্ড ভুল করেছে। তিনি বলেছেন, বাবর স্বার্থপর খেলোয়াড়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও সদ্য ন্যাশনাল টি ২০ চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা তা দেখেছি। সরফরাজ স্বার্থপর নয় এবং দলের জন্য নিজের ব্যাটিং পজিশন বারেবারেই ও ছেড়ে দিয়েছে। তাকে এভাবে সরিয়ে দেওয়াটা একেবারেই ঠিক হয়নি।