নয়াদিল্লি:  এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্রিকেট দলের নির্বাচক কমিটিকে তীব্র আক্রমণ ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারের। প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিকে তিনি 'মিকি মাউস সিলেকসন কমিটি' বলেও বিদ্রুপ করলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন এই উইকেটরক্ষক।


একটি সংবাদপত্রকে ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, 'আমরা একটা মিকি মাউস সিলেকসন কমিটি পেয়েছি'।

ভারতীয় দলের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান দিলীপ বেঙ্গসরকারের ক্রিকেট অকাডেমি সফরের জন্য পুনেতে এসেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। সেখানেই ওই সংবাদপত্রের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেন তিনি।

ভারতের হয়ে ১৯৬১ থেকে ১৯৭৬-এর মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার ৪৬ টেস্টে ও ৫ টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন। তিনি বর্তমান নির্বাচকদের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, বর্তমান নির্বাচকদের আন্তর্জাতিক ম্যাচের পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতাই নেই।

প্রাক্তন উইকেটরক্ষক বলেছেন, 'এই নির্বাচকরা যোগ্যতা অর্জন করল কীভাবে? ওদের সব মিলিয়ে ১০-১২ টেস্ট খেলেছে। বিশ্বকাপের সময় তো আমি একজন নির্বাচককে চিনতেই পারিনি। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, তিনি কে। কারণ, তিনি ভারতীয় দলের ব্লেজার পরেছিলেন। প্রশ্নের উত্তরে জানান যে, তিনি একজন নির্বাচক'।

বিশ্বকাপের সময় তিনি নির্বাচকদের  অনুষ্কা শর্মাকে চা এগিয়ে দিতেও দেখেছেন বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ইঞ্জিনিয়ার।

পাল্টা অনুষ্কা বলেছেন, ‘আমার সবসময় মনে হয়েছে, মিথ্যা ও বিকৃত খবর প্রচারিত হলে নীরব থাকাই সেরা পন্থা। বলা হয়, বারবার একই মিথ্যা বলে গেলে সেটা সত্যের মতো মনে হয়। আমার সঙ্গে সেটাই হচ্ছে। তবে আজ আমার নীরবতা শেষ হল। আমার তৎকালীন প্রেমিক ও বর্তমানে স্বামী বিরাট কোহলির পারফরম্যান্সের জন্য যখন আমাকে দায়ী করা হয়েছিল, তখনও আমি নীরব ছিলাম। আমি গোপন বৈঠকে হাজির থেকে দল গঠনে প্রভাব খাটিয়েছি বলে যে অভিযোগ উঠেছিল, সেক্ষেত্রেও নীরবতা অবলম্বন করেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে বিদেশ সফরে স্বামীর সঙ্গে আইনবিরুদ্ধভাবে বেশি সময় থাকা, বোর্ডের পক্ষ থেকে আমার টিকিট ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার মিথ্যা খবর রটেছিল। সর্বশেষ বলা হচ্ছে, বিশ্বকাপের সময় নির্বাচকরা আমাকে চা দিয়েছিলেন। এই খবর দেখে আমি নীরবতা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মিথ্যা, কুরুচিকর মন্তব্যের নিন্দা করছি। আমার নীরবতাকে দুর্বলতা ভাবা উচিত নয়। আমি মর্যাদার সঙ্গে কাজ করে চলেছি। কোনওদিন আপস করিনি। আর তথ্যের খাতিরে জানিয়ে দিতে চাই, আমি কফি খাই।’

বর্তমান নির্বাচক কমিটির প্রধান প্রসাদ ( ৬ টেস্ট, ১৭ একদিনের ম্যাচ)। এছাড়াও বাকি সদস্যরা হলেন প্রাক্তন ভারতীয় দলের খেলোয়াড় দেবাং গাঁধী (৪ টেস্ট, ৩ একদিনের ম্যাচ), শরনদীর সিংহ (৩ টেস্ট, পাঁচ একদিনের ম্যাচ), যতীন পরাঞ্জপে (৪ একদিনের ম্যাচ) এবং গগন খোডা (দুই একদিনের ম্যাচ)।

ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, বেঙ্গসরকারের মতো ব্যক্তিত্বর কারুর নির্বাচক কমিটিতে থাকা উচিত।

বোর্ডের পূর্বতন প্রশাসকদের কমিটি (সিওএ)-কেও একহাত নিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যয় বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিওএ জমানার অবসান ঘটেছে। ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, 'আমার মতে সিওএ সম্পূর্ণ সময়ের অপচয় ছিল। আমি জেনেছি যে, তাঁদের একজন তো সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়েছেন। এরসঙ্গে আমার মনে হয়, তাঁরা বিভিন্ন বৈঠকে যোগদানের জন্যও অনেক টাকা নিয়েছেন। এটা আমার মতো হনিমুনের মতো ছিল। এখন সেই হনিমুন শেষ হয়েছে'।

ইঞ্জিনিয়ারের মতে সৌরভ বিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ভালো হবে। তিনি বলেছেন, 'সৌরভ দাপুটে খেলোয়াড় ছিলেন, অধিনায়ক হিসেবে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমার আশা, বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবেও একই ধরনের কাজ করবেন'।