কলকাতা: দুবাই থেকে 'মারো মুঝে মারো' খ্যাত মোমিন সাকিবের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার। বিরাট কোহলির জন্য পাকিস্তানে হয়েছে প্রার্থনা! চোট কাটিয়ে মাঠে নামতে পারবেন মহম্মদ রিজওয়ান? খেলার দুনিয়ার সব খবরের ঝলক।


কোন অঙ্কে ফাইনালে যেতে পারে ভারত


ভারতের পরের দুটো ম্যাচ শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। আগামীকাল, বুধবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ রয়েছে রোহিত শর্মাদের। তারপর বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচ ভারতের। দুটো ম্যাচই ভারতকে জিততে হবে। যদি ভারত দুটো ম্যাচই জেতে তবে আফগানিস্তান ছিটকে যাবে টুর্নামেন্ট থেকে। কারণ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তারা হেরে বসে আছে। সেক্ষেত্রে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে দুটি দল ফাইনালে যাবে। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। সেই ম্যাচে যারা জিতবে, ফাইনালে যাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে।


কতটা গুরুত্বপূর্ণ নেট রান রেট


এই মুহূর্তে ভারতকে ২টো ম্যাচ হারাতেই হবে প্রতিপক্ষকে। অন্য়দিকে পাকিস্তান যদি শ্রীলঙ্কাকে হারায় তবে দাসুন শানাকারাও ছিটকে যাবেন টুর্নামেন্ট থেকে। কিন্তু যদি শ্রীলঙ্কা তাদের শেষ ম্যাচ জিতে যায়, তবে এখানে নেট রান রেটের অঙ্ক চলে আসবে। সেক্ষেত্রে ভারতকে তাঁদের আগামী ২টি ম্যাচ বিশাল ব্যবধানে জিততে হবে। তবেই তারা ফাইনালে পৌঁছতে পারবে।


রিজওয়ানকে নিয়ে উদ্বেগ


ভারতের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের (Asia Cup) সুপার ফোরের ম্যাচ জিতেও স্বস্তিতে নেই পাকিস্তান (Ind vs Pak)। চোটের জন্য দলের সবচেয়ে ছন্দে থাকা ক্রিকেটারের এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলিতে খেলা নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।


ভারতের বিরুদ্ধে জিতেও মারাত্মক চাপে বাবর আজমরা। চোট-আতঙ্ক যেন তাঁদের পিছু ছাড়ছে না। ভারতের বিরুদ্ধে খেলা শেষ হওয়ার পরেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল দলের ওপেনার মহম্মদ রিজওয়ানকে। যিনি এদিন ম্যাচ জেতানো দুরন্ত ইনিংস খেলেছেন।


ভারতের ইনিংস চলার সময়ে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়েই চোট পেয়েছিলেন রিজওয়ান। ভারতের প্রথম ইনিংস চলার সময়ে মহম্মদ হাসনাইনের একটি বাউন্সার ধরতে গিয়ে চোট পান রিজওয়ান। লাফিয়ে উঠে মাটিতে পড়ার সময় তাঁর ডান পায়ে চোট লাগে। সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণায় মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকেন রিজওয়ান। ছুটে আসেন দলের ফিজিয়ো। বেশ কিছুক্ষণ রিজওয়ানের চোট পরীক্ষা করে দেখেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রিজওয়ান ফের খেলতে শুরু করেন। কিন্তু তাঁকে দেখে স্পষ্ট মনে হচ্ছিল, দৌড়তে সমস্যা হচ্ছে তাঁর। তবে সেই চোট নিয়েই তিনি অসাধারণ ব্যাট করেন। ৭১ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষ হতেই চোটের স্ক্যান করাতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় তাঁকে।


অর্শদীপকে নিয়ে বিতর্ক


একটা ক্যাচ মিস, আর তাতেই এই মুহূর্তে গোটা দেশের কাছে যেন খলনায়ক হয়ে গিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গতকাল খেলতে নেমে আঠারোতম ওভারে আসিফ আলির ক্যাচ ফেলে দেন অর্শদীপ সিংহ (Arshdeep Singh)। কোথাও যেন সেটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। তিনি যখন ক্যাচ মিস করেছিলেন, তখন আসিফ শূন্য রানে ছিলেন। সেই আসিফ ৮ বলে ১৬ রান করে যান। ইনিংসের শেষ ওভারে আসিফের উইকেট নিজেই তুলে নিয়েছিলেন অর্শদীপ। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নেয় পাকিস্তান।


ম্যাচের পর থেকেই বিদ্রুপের শিকার হন তরুণ পেসার অর্শদীপ। তাঁর সঙ্গে খলিস্তানিদের যোগ রয়েছে বলে কটাক্ষ করা হয় তাঁকে। কেউ কেউ তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট-সহ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মঞ্চে তাঁকে কটূক্তি করেন। তরুণ সিমারের বিরুদ্ধে খলিস্তানি যোগের অভিযোগ তুলে নিজেদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটান তাঁরা।


এরই মাঝে উইকিপিডিয়াতে একটি প্রবন্ধে লেখা হয় যে, অর্শদীপ নিজেকে খলিস্তানি বলে দাবি করেছেন। পরে অবশ্য সেই পোস্ট মুছে দেওয়া হয়। এর নেপথ্যে অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেরের হাত রয়েছে বলে তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতা এম এস শীর্ষা। হিংসা ছড়াচ্ছেন জুবের, এই মর্মে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছেন শীর্ষা। বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, শিখদের হেনস্থা করার জন্যই ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে ট্যুইট করা হচ্ছে।


বিরাট সাক্ষাৎ


বছর তিন আগের কথা। ২০১৯ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। ভারতের কাছে পাকিস্তান (Ind vs Pak) পরাজিত হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠেছিল এক যুবকের করুণ আর্তি। 'মারো, মুঝে মারো...'


সেদিনের সেই পাকিস্তান সমর্থক হাজির সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতেও। এশিয়া কাপে (Asia Cup) প্রিয় দলের হয়ে গলা ফাটাতে। তবে শুধু পাকিস্তান নয়, বিরাট কোহলিরও (Virat Kohli) বড় ভক্ত। এশিয়া কাপে বিরাটের ব্যাটে রান ফেরায় যেন স্বস্তি পেয়েছেন পাক তরুণ!


আসুন আলাপ করিয়ে দেওয়া যাক। মোমিন সাকিব (Momin Saqib)। বছর পঁচিশের পাক যুবক বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালের একটি ভিডিওতে। ভারতের কাছে পাকিস্তানের হারের পর আবেগ গোপন করতে পারেননি। ক্যামেরার সামনেই বলে দিয়েছিলেন, 'আমরা ম্যাচ হেরে কান্নাকাটি করছি, আর ক্রিকেটারেরা আইসক্রিম খাচ্ছে? মারো, মুঝে মারো।' সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিল সেই ভিডিও। মিমের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। সেই থেকে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হলেই দুই দেশের ক্রিকেটভক্তরা ওই ভিডিও ব্যবহার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।


'মারো মুঝে মারো' তো তোলপাড় ফেলেছিল, ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলার পর জীবন কতটা পাল্টেছে? দুবাই থেকে জুম কলে এবিপি লাইভকে মোমিন বললেন, 'ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। অনেক লোক আমাকে চিনেছে ওই ভিডিওর পর থেকে। প্রচুর বন্ধু হয়েছে। তবে জীবনে পরিবর্তন আসেনি। সেই সময় লন্ডনে পড়াশোনা করছিলাম। কোর্স সম্পূর্ণ করি। লন্ডনের কিংস কলেজে চাকরি করি। তবে জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ভারতেও প্রচুর বন্ধু হয়ে যায় ওই ভিডিওর পরে।'


পাকিস্তানের সমর্থক হলেও বিরাটের ব্যাটিংয়ের ভক্ত মোমিন। বলছেন, 'কোহলি যাতে ছন্দে ফেরেন, গোটা পাকিস্তানে তা নিয়ে প্রার্থনা হয়েছে। পাকিস্তানে কোহলির প্রচুর ভক্ত। পাকিস্তানের সকলে কোহলির ব্যাটে রান দেখতে চেয়েছিল। দুই দেশের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌজন্যের বিরাট উদারহণ এটা। আমরা চাই বাবর আজমও রানে ফিরুক। আর ভাল ক্রিকেট দেখুক সকলে।'


সৌরভের বার্তা


সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর। শিক্ষক দিবস (Teachers' Day) হিসাবে গোটা দেশে পালিত হয় দিনটি। আর সেই দিনই কি না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) মুখে গ্রেগ চ্যাপেলের (Greg Chappell) কথা!


সাল ২০০৩। অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে ভারত। অজিভূমে সফল হতেই হবে, এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ছুটেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তির কাছে। ব্যাটিং নিয়ে পরামর্শ নিতে। গ্রেগ চ্যাপেলের ক্লাস করে সৌরভ এতটাই উপকৃত হন যে, অজি বোলারদের সেই সিরিজে রীতিমতো শাসন করেন। তারপর সৌরভের কথাতেই গ্রেগকে ভারতের জাতীয় দলের কোচ করে আনা। কিন্তু সেখানে উলটপুরাণ।


ছাত্র সৌরভের সঙ্গে বনিবনা হয়নি গুরু গ্রেগের। সৌরভকে জাতীয় দল থেকে ছেঁটেও ফেলা হয়। পরে অবশ্য জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছিলেন সৌরভ। চাকরি গিয়েছিল গুরু গ্রেগের। সৌরভ-গ্রেগ অধ্যায় ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম তিক্ত পর্ব হয়ে রয়ে গিয়েছে।


সোমবার শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন সৌরভ। সেখানে তিনি শিক্ষক দিবসের জন্য শুভেচ্ছা জানান গুরু গ্রেগকেও। যা দেখে তাঁর ভক্তরা অবাক। অনেকেই বলাবলি করতে শুরু করেন যে, গ্রেগকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন সৌরভ। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।


আরও পড়ুন: কোহলির ছন্দে ফেরার প্রার্থনা করেছে গোটা পাকিস্তান, বলছেন 'মারো মুঝে মারো' খ্যাত মোমিন