হোবার্ট: বৃষ্টির ভ্রুকুটি থাকলেও, শেষ পর্যন্ত ভার-পাকিস্তান ম্যাচ পুরোটাই খেলা হয়েছিল। কিন্তু মেলবোর্ন রক্ষা করলেও, হোবার্টে বাদ সাধল প্রকৃতি। কপাল পুড়ল দক্ষিণ আফ্রিকার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে কার্যত জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হল প্রোটিয়াদের। দুর্বল প্রতিপক্ষের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিতে বাধ্য হলেন তেম্বা বাভুমারা।
হোবার্টে বৃষ্টির জন্য টস হয় নির্ধারিত সময় পেরিয়ে। টস জিতে প্রথম ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জিম্বাবোয়ের অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন। কিন্তু টস ও দুই দলের জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার পর ফের বৃষ্টি নামে। পরে ম্যাচে ওভার সংখ্যা কমিয়ে ৯ ওভারের করা হয়। প্রথমে ব্যাট করে জিম্বাবোয়ে তোলে ৭৯/৫। ১৮ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করেন ওয়েসলি মাধেভেরে। দক্ষিণ আফ্রিকা বোলারদের মধ্যে ২০ রানে ২ উইকেট নেন লুনগি এনগিডি। অনরিক নোকিয়া ও ওয়েন পার্নেল একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো শুরু করেন কুইন্টন ডি'কক। প্রথম ওভারেই চারটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা-সহ ২৩ রান তোলেন তিনি। তবে পরের ওভারে ১ বল হওয়ার পর ফের বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ রাখতে হয়। ম্যাচ যখন শুরু হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭ ওভারে ৬৪ রান। হাল্কা বৃষ্টির মধ্যেও ম্যাচের ফয়সালা যাতে হয়, সেই চেষ্টায় খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন দুই আম্পায়ার। যদিও জিম্বাবোয়ে শিবির অসন্তোষ প্রকাশ করে। তাদের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ভেজা ও পিচ্ছিল মাঠে চোট পেয়েছেন বলে অভিযোগ জানাতে থাকেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ৩ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান যখন ৫১/০, বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ায় খেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। ১৮ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন ডিকক। জয়ের থেকে মাত্র ১৩ রান আগে থেমে যেতে বাধ্য হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিরাট অঙ্ক
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) পাক-বধের নায়ক তিনি। রবিবার তাঁর অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস দেখে গোটা বিশ্বে তাঁর নামে উঠছে জয়োধ্বনি। সেই বিরাট কোহলি অবশ্য জানিয়ে দিলেন, তিনি ক্রিজে গিয়ে বেশ চাপে ছিলেন। বরং ভয়ডরহীনভাবে ব্যাটিং করছিলেন সতীর্থ হার্দিক পাণ্ড্যই।
রবিবার মেলবোর্নে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। মাত্র ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে খেলা ঘুরিয়ে দেয় কোহলি-হার্দিকের জুটি। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৭৮ বলে ১১৩ রান যোগ করেন দুই তারকা। হার্দিক আউট হলেও ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন কোহলি।
ম্যাচের পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটের জন্য ক্রিকেট আড্ডায় বসেন কোহলি ও হার্দিক। সেখানে কোহলি বলেন, 'সত্যি কথা বলতে কী, আমি খুব চাপে ছিলাম। আমি এরকম পরিস্থিতিতে অনেক পড়েছি। জানি এই ধরনের ম্যাচে কী প্রত্যাশা থাকে। তবে উল্টোদিকে হার্দিক ভয়ডরহীনভাবে ক্রিকেট খেলছিল। আমরা আলোচনা করে নিয়েছিলাম যে, নওয়াজের এক ওভার বাকি রয়েছে। হার্দিক ঠিক করে নিয়েছিল ওই এক ওভারে তিন-চারটে ছক্কা মারার চেষ্টা করবে। তারপর আমরা উপলব্ধি করলাম যে, পাকিস্তান নওয়াজকে (মহম্মদ নওয়াজ) দিয়ে শেষ ওভারটা করাবে। কারণ ওরা চাইছিল ম্যাচটাকে আগে শেষ করে দিতে। তখন আমি বললাম যে, আমরা রউফকে (হ্যারিস রউফ) আক্রমণ করলে খেলার রাশ নিজেদের হাতে নিতে পারি। তাহলেই ওরা ভয় পেয়ে যাবে।'
শেষ পর্যন্ত রউফকেই আক্রমণ শুরু করেন কোহলি। জোড়া ছক্কা মেরে ভারতীয় শিবিরে বিশ্বাস তৈরি করে দেন যে, এই ম্যাচও জেতা সম্ভব।
আরও পড়ুন: কোহলির প্রশংসা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রান্ত পাকিস্তানের মহিলা ক্রিকেটার