নয়াদিল্লি: ভারতের প্রাক্তন ওপেনিং ব্যাটসম্যান গৌতম গম্ভীর মনে করেন, হয় পাকিস্তানের সঙ্গে সবরকম ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করুক ভারতীয় বোর্ড না হলে সর্বস্তরে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। ‘শর্তসাপেক্ষ নিষেধাজ্ঞা’ বলে কিছুই হয় না।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা চালায়  জইশ-ই-মহম্মদ। ওই হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি নিয়ে সরব হন গম্ভীর। সেই দাবি তে ফের একবার সোচ্চার হয়ে প্রাক্তন ব্যাটসম্যান দাবি করেন, বোর্ডকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং তার পরিণতি যাই হোক না কেন, তার সম্মুখীন হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
গম্ভীর বলেন, এরকম শর্তসাপেক্ষ নিষেধাজ্ঞা বলে কিছু হয় না। এই জাতীয় দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থান অর্থহীন। হয় আপনি সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন, না হলে কোনও প্রকার নিষেধাজ্ঞা না জারি করে সব খেলা খেলবেন। পুলওয়ামায় যা ঘটেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। গম্ভীর স্বীকার করেন, এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা বন্ধ করলেও, ভারতের পক্ষে আইসিসি প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানকে না খেলা চাপের। কিন্তু প্রয়োজনে তা-ই করতে হবে।
গম্ভীরকে প্রশ্ন করা হয়, যদি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হয়, তাহলেও কি ভারত সেই ম্যাচ ছেড়ে দেবে? উত্তরে তিনি বলেন, ভারতের উচিত ফাইনাল ম্যাচ না খেলা। দুপয়েন্ট নয়, দেশ আগে। তাতে ট্রফি যদিও বা হাতছাড়া হয়, দেশবাসী তা মেনে নিতে প্রস্তুত।
প্রাক্তন ক্রিকেটার যোগ করেন, অনেকে বলে থাকেন, রাজনীতি ও খেলাকে একসঙ্গে মেশানো ঠিক নয়। কিন্তু, আমি বলতে চাই, একটা ক্রিকেট ম্যাচের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু।
সম্প্রতি, দিল্লিতে হওয়া শ্যুটিং বিশ্বকাপের জন্য পাকিস্তানি শ্যুটারদের ভিসার আবেদন খারিজ করায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) রোষের মুখে পড়তে হয় ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে। ভারতের সঙ্গে বড় প্রতিযোগিতা আয়োজন সম্পর্কিত আলোচনা বাতিল করে আইওসি। একইসঙ্গে, অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফেডারেশনকেও নির্দেশ দেওয়া হয় সমস্ত কথাবার্তা বন্ধ রাখতে। একইভাবে, ভারত থেকে এশিয়া জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা সরিয়ে নেয় বিশ্ব কুস্তি সংস্থা।
যদিও, এসবকে গুরুত্ব দিতে নারাজ গম্ভীর। তিনি জানিয়ে দেন, ভারতের চরম অবস্থানের ফলে যদি দেশকে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব ক্রীড়া আঙ্গিনায় বয়কটের মুখে পড়তে হয়, তাহলেও তাতে কিছু এসে যায় না। দেশের এই অনুভূতি যে কোনও খেলা, বলিউড, কলা  ও সংস্কৃতির চেয়ে বড়।