কলকাতা: মাঠে তাঁরা ছিলেন অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। বাংলার হয়ে একসঙ্গে বহু ম্যাচ খেলেছেন। দলকে জিতিয়েছেন। ক্রিকেট মাঠের সেই দুই সহযোদ্ধাই পরে রাজনীতির ময়দানে একে অপরের প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে পড়েন। একজন নাম লেখান তৃণমূল কংগ্রেসে। অন্যজন বিজেপিতে। বিধানসভা ভোটে দুজনই জেতেন। দুই ক্রিকেটার-বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি ও অশোক দিন্দা অবশ্য দুর্গাপুজোয় রাজনৈতিক ভেদাভেদ শিকেয় তুলে একসঙ্গে সময় কাটালেন। আবাসনের পুজো দেখলেন। ভোগ খেলেন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে ধরা পড়ল বিরল সৌভ্রাতৃত্বের ছবি।
মনোজ ও দিন্দা দুজনই থাকেন বাইপাসের ধারের একটি অভিজাত আবাসনে। ক্রিকেট খেলার সময়ই দুই বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করে ফ্ল্যাট কেনেন একই আবাসনে। দুই ক্রিকেটারের পারিবারিক বন্ধুত্বও রয়েছে। মনোজ ও তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা এবং দিন্দা ও তাঁর স্ত্রী শ্রেয়সী মিলে ইউরোপ বেড়াতে গিয়েছিলেন। একে অপরের জন্মদিন সেলিব্রেশন হোক বা কোনও অনুষ্ঠান, দুই জুটিকে এক ফ্রেমেই দেখা যেত।
ক্রিকেট মাঠের বাইরেও অবশ্য দুজনের পারিবারিক বন্ধুত্ব অটুট। রাজনীতি সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি। বিধানসভা ভোটে শিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন মনোজ। আর ময়নার বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন দিন্দা। ভোটে জেতার পর মনোজ রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আর দিন্দা হয়ে ওঠেন বিরোধী শিবিরের অন্যতম মুখ। তবে ভোটের প্রচারে কেউ কারও বিরুদ্ধে একটি শব্দও খরচ করেননি। মুখোমুখি হয়তো লড়াই করেননি। তবু...।
এবিপি লাইভকে মনোজ ও দিন্দা দুজনই জানিয়েছিলেন, রাজনীতিতে নাম লেখানো মানুষের পাশে থাকার উদ্দেশ্যে। সেখানে ব্যক্তিগত বৈরিতার জায়গাই নেই। দুজনই জানিয়েছিলেন যে, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, একে অপরের বিরুদ্ধে একটি শব্দও খরচ করবেন না।
বিরল সেই সৌজন্যের ছবি এখনও অটুট। দুর্গাপুজোয় দুই ক্রিকেটার একসঙ্গে আবাসনের পুজোয় সময় কাটালেন। ভোগ খেলেন। দুই তারকার স্ত্রী সুস্মিতা ও শ্রেয়সীও একসঙ্গে সময় কাটালেন। সন্ধি পুজোও দেখেন দুজনে।
রাজনীতির ময়দানে কার্যত দৃষ্টান্ত তৈরি করে চলেছেন বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা দুই ক্রিকেটার।