নয়াদিল্লি: আগামী ৫ অগাস্ট থেকে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শুরু হচ্ছে অলিম্পিকের আসর। চলবে ২১ অগাস্ট পর্যন্ত। এই ১৭-দিনের মেগা-ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে চলেছেন বিশ্বের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ক্রীড়াবিদ।


গেমসকে সফল করে তুলতে এখন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করছেন আয়োজকরা। বলা যেতে পারে, গত ২ বছর ধরেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি-পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্রীড়াবিদ থেকে শুরু করে সাপোর্ট স্টাফ এবং দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য সব রকমের ব্যবস্থা যাতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে থাকে, সেই দিকে সজাগ আয়োজকরা।

এই ব্যবস্থার বিপুল তালিকার মধ্যে এমন একটি জিনিস রয়েছে, যা সকলকে চমকে দেওয়ার মতো। জানা গিয়েছে, ক্রীড়াবিদ ও সাপোর্ট স্টাফদের ‘সুরক্ষার’ দিকটি মাথায় রেখে সাড়ে চার লক্ষ কন্ডোম এবং পৌনে দু’লক্ষ ল্যুবরিকেন্ট-এর প্যাকেটের বন্দোবস্ত করেছে অলিম্পিক গেমস আয়োজক কমিটি।

সূত্রের খবর, এর মধ্যে সাড়ে তিন লক্ষ কন্ডোম পুরুষ ক্রীড়াবিদ এবং বাকি ১ লক্ষ কন্ডোম মহিলা ক্রীড়াবিদদের জন্য রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কমিটির এক সদস্য জানান, যদি অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের সংখ্যার সঙ্গে কন্ডোমের সংখ্যাকে ভাগ করলে দেখা যাবে প্রতি ক্রীড়াবিদের জন্য গড়ে ৪২টি কন্ডোম বরাদ্দ করা হয়েছে।

অলিম্পিকে কন্ডোমের ব্যবস্থা রাখাটা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। এর আগেও বহু অলিম্পিক আসরে ক্রীড়াবিদ ও স্টাফদের জন্য কন্ডোমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে এত বিপুল পরিমাণে কখনই নয়। একটা পরিসংখ্যান দিলে চিত্রটা স্পষ্ট হবে।

২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকের সময় ৪৫ হাজার কন্ডোম বিনামূল্যে বিলি করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিকের সময় এই সংখ্যাটি ছিল প্রায় ৯০ হাজার। গত লন্ডন অলিম্পিকে প্রায় দেড় লক্ষ কন্ডোম বিলি করা হয়। এবার একেবারে তিনগুণ বেড়ে হল সাড়ে ৪ লক্ষ।

‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-এর এই বিপুল পরিমাণ কন্ডোম-বিলিকে ঘিরে অবশ্য কম বিতর্ক হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই গেমসকে ‘একটা বিশালকায় বেলেল্লাপনার গন্তব্যস্থল’ বলে কটাক্ষ করেছেন এক নামী ক্রীড়াবিদ। কিন্তু, বিশেষজ্ঞদের চিন্তার কারণ অন্য।

কিছুদিন আগেও, জিকা ভাইরাস ব্রাজিলে মারণ আকার ধারণ করেছিল। মশাবাহিত এই ভাইরাস যৌনসঙ্গমের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষকরে এটি ক্ষতি করে ওই যৌনসঙ্গেমের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর। চিকিৎসকদের মতে, এই ভাইরাসের ফলে শিশুরা মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, তাদের মস্তিষ্কের গঠন স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হয়।

তাই হয়ত, ক্রীড়াবিদদের ‘সুরক্ষার’ কথা ভেবে কন্ডোমের অভাব রাখতে চান না আয়োজকরা। যতই হোক, ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ বলে কথা!