দুবাই: প্রায় দীর্ঘ তিন বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতরান নেই ব্যাটে। সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির (Virat Kohli) উপর দিয়ে। তবে এতদিন পর্যন্ত সেই নিয়ে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তিনি। তবে পরিস্থিতি ভাল ভাল লোককেও মুশকিলে ফেলে দেয়। বিরাট কোহলিই তার প্রমাণ। কোহলির কঠিন মানসিকতার দোহাই দেন সকলেই। তবে সেই কোহলিই কি না, মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় নাজেহাল। নিজেই সেই বিষয়ে মুখ খুললেন তিনি।


ইংল্যান্ড সিরিজের পর থেকে প্রায় এক মাস ক্রিকেটের বাইরেই ছিলেন কোহলি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবোয়ে, উভয় সিরিজেই তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। এশিয়া কাপে (Asia Cup 2022) আবার জাতীয় দলে কামব্যাক করছেন কোহলি। সব নজর তাঁর দিকেই। কিন্তু কোহলি নিজেই জানাচ্ছেন এশিয়া কাপের আগের একমাস ছুটিতে তিনি ব্যাটে হাত পর্যন্ত দেননি। তিনি বলেন, 'আমার বলতে লজ্জা নেই, যে আমি মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত ছিলাম। ১০ বছরে প্রথমবার আমি একমাস ব্যাটই স্পর্শ করিনি। আমি উপলব্ধি করেছি যে সাম্প্রতিক সময়ে আমি মানসিকভাবে মজবুত হওয়ার, আগ্রাসী হওয়ার ভান করছিলাম। নিজেকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে সব ঠিক আছে। কিন্তু শরীর দিচ্ছিল না। মানসিকভাবেও বারবার উপলব্ধি হচ্ছিল যে এবার একটু থেমে কিছুটা বিরতি নেওয়ার প্রয়োজন।'


 






কোহলির মতে মানসিকভাবে সমস্যা হলেও, বাকিরা দুর্বল ভাববে এই চিন্তা করে অনেকেই এটা স্বীকার করতে চান না। 'গোটা বিষয়টা যে কারুরই হতে পারে, খুবই স্বাভাবিক এটা হওয়া। তবে আমরা এই নিয়ে কথা বলি না, দ্বিধা করি। আমরা চাই না কেউ আমাদের মানসিকভাবে দুর্বল মনে করুক। সত্যি বলতে এই মজবুত হওয়ার ভান করাটা, দুর্বল হওয়ার থেকে অনেক বেশি কষ্টকর। আমাকে মানসিকভাবে মজবুত একজন ব্যক্তি হিসাবেই সকলে মনে করেন। তবে সবারই তো একটা সীমা থাকে। সেটা বুঝতে না পারলে বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সময়টা আমায় অনেক কিছু শিখিয়েছে, যেগুলি আমি কোনওদিনও মানতেই চাইতাম না।' দাবি কোহলির। 


বাড়তি জোর


বিরাট আরও জানান যে তিনি ম্যাচের আগে কঠোর পরিশ্রম করে দলকে জেতাতে সবসময় বদ্ধপরিকর, তবে মানসিক সমস্যার জেরে তিনি কোনওকিছুই স্বাভাবিকভাবে করতে পারছিলেন না। জোর জবরদস্তি সব করছিলেন তিনি। কোহলি কিন্তু একা নন, মানসিক সমস্যার কথা অনেক অ্যাথলিটই খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেছেন। ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস তো বেশ কিছু সময় এর জেরেই ক্রিকেটের বাইরেও ছিলেন। কোহলি, স্টোকসদের এই স্বীকারোক্তি হয়তো ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলাবে। তবে আপাতত দীর্ঘ বিরতির পর সমস্ত নজর কোহলির ব্যাটের দিকে। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট জ্বলে উঠে কি না, এখন সেটাই দেখার।


আরও পড়ুন: 'বাইরের লোকে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না', অফফর্মের বিরাটের পাশে দাঁড়ালেন রাহুল