টোকিও: টোকিও অলিম্পিক্সে ইতিহাস গড়েছে ভারতীয় দল। ৪১ বছর পর অলিম্পিক্সের মঞ্চে পদক জিতেছে তাঁরা। ১৯৮০ সালে মস্কো অলিম্পিক্সে শেষবার ভারতের হকি দল পদক জিতছিল। সেবার হকিতে সোনা জিতেছিল ভারত। এবারও সোনা জয়ের লক্ষ্যেই ছিল তাঁরা। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ বাদ দিয়ে সব দলের বিরুদ্ধেই দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে তাঁরা। কিন্তু সেমিতে এসে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে হার মানতে হয় মনপ্রীত, শ্রীজেশদের। যদিও টোকিও থেকে পুরোপুরি খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে না ভারতীয় হকি দলকে। বৃহস্পতিবার জার্মানিকে ৫-৪ ফলে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জেতে হরমনপ্রীতরা। 


ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মলনে এসে হরমনপ্রীত বলেন, 'সবাই নিজেদের সেরাটা দিয়ে পারফর্ম করেছে। প্রথম দিকে একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম আমরা। কিন্তু দ্রুত ছন্দ ফিরে পেয়েছি আমরা। এটা আমার দ্বিতীয় অলিম্পিক্স। কিন্তু দলের অনেকেই একেবারে নতুন মুখ। তাই সবার জন্যই এই মুহূর্ত ভীষণভাবে স্পেশ্যাল। এই জয় উপভোগ করতে চাই এখন।'


পাশে ছিলেন কোচ গ্রাহাম রিডও। ২০১৯ সালে ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে পথ চলা শুরু হয়েছিল এই অজি প্রাক্তন হকি প্লেয়ারের। খেলোয়াড় জীবেন একাধিক সাফল্য পেয়েছে। কোচ হিসেবেও সাফল্য এসেছে। কিন্তু ভারতের কোচ হয়ে এই পদক জয়কে কিছুটা এগিয়ে রাখতে চাইছেন রিড। তিনি বলেন, 'এবার অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কোভিডের জন্য জৈব বলয়ে থেকে অনুশীলন করতে হয়েছে। অনেক কিছু বিধিনিষেধ মানতে হয়েছে। কিন্তু তাতেও দলের মানসিক কাঠিন্য কোনওভাবেই নষ্ট হয়নি।' 


বেলজিয়ামে বিরুদ্ধে হারের পর দলকে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন? রিড বলেন, 'ছেলেদের শুধু বলেছিলাম যে দিনটা ভুলে যেতে। জান সোনা, রুপো হলে আরও ভাল লাগত। কিন্তু আমি শুধু বলেছিলাম যে ম্যাচে মনোনিবেশ করতে।'


এদিন জার্মানির বিরুদ্ধে জোড়়া গোল করেছিলেন সিমরনজিৎ। কিন্তু অলিম্পিক্সের জন্য প্রথমে যে দল ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই ১৬ সদস্যের দলে ছিলেন না এই মিডফিল্ডার। এদিন নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিতে গিয়ে সিমরনজিৎ বলেন, 'অলিম্পিক্সে খেলা সবার স্বপ্ন। দলে প্রথম না থেকে খারাপ লাগছিল। কিন্তু আমার কাছে দল সবার আগে। এদিন ২টো গোল করেছি। কিন্তু প্রত্যেকের অবদান অনস্বীকার্য। আমি শুধু ফিনিশিংটুকুই করেছি।'


আগামীকাল মেয়েদের ব্রোঞ্জ জয়ের ম্যাচ রয়েছে। গ্রেট ব্রিটেন রানি রামপলদের প্রতিপক্ষ। সেই ম্যাচ দেখতে যাবেন হরমনপ্রীতরা এবার। মহিলা দলও দেশের জন্য পদক নিয়ে আসুক, সেই প্রার্থনাই করছেন সবাই।