ম্যাঞ্চেস্টার: বিশ্বকাপে ভারত বনাম পাকিস্তান মেগা ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে উঠেছে। আগামীকাল রবিবার ওল্ড ট্রাফোর্ডে সরফরাজ আহমেদের দলের বিরুদ্ধে নামছে বিরাট কোহলির দল। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের আগে আবেগে গা ভাসাতে নারাজ টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক। কোহলি বৃহত্তর লক্ষ্যের দিকে নজর রেখেই এগোতে চান। ম্যাচের আগের দিন তিনি বললেন, বিশ্বকাপের এই বহুপ্রতিক্ষিত ম্যাচেই টুর্নামেন্ট শেষ নয়।
ভারত-পাক ম্যাচের উত্তাপ সম্পর্কে সচেতন কোহলি। কিন্তু দলের চিন্তাভাবনা এই একটা ম্যাচ ঘিরে আচ্ছন্ন থাকবে, এমনটা হতে দিতে চাইছেন না তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে কোহলিকে অন্তত ছয় থেকে সাতবার এই ম্যাচ ঘিরে বাইরের চাপ, হাইপ, ম্যাচ কতটা কঠিন হতে পারে, এমন ধরনের প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কোনওরকম আবেগ দেখালেন না অধিনায়ক।
কোহলি বললেন, আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হবে এই ম্যাচ এবং শেষও হবে নির্দিষ্ট সময়ে। এই ম্যাচ জেতা বা হারা মানে সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। অধিনায়কের কাছে বিশ্বকাপ জেতাটাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য-আর সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কোহলি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নিজেদের অযথা কোনওরকম চাপে ফেলতে নারাজ তিনি। অধিনায়ক বলেছেন, আগামীকাল আমরা ভালো করতে পারি না বা না পারি, এখানেই সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে না। টুর্নামেন্টের এখনও অনেক বাকি। তাই বৃহত্তর লক্ষ্যের দিকেই মনোনিবেশ করতে হবে। অন্যদের তুলনায় কোনও একজন বেশি চাপ নিতে পারে না।
কোহলি বলেছেন, ১১ জনই দায়িত্ব ভাগ করে নেবে। আবহাওয়া কারুর হাতে নেই। কতটা খেলা হয় তা দেখতে হবে, যে কাজ করার দরকার, তা করতে আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আগামীকালের ম্যাচে কোহলি বনাম আমিরের টক্কর সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতের অধিনায়ক বললেন, টিআরপি-র জন্য আমি কিছু বলব না বা উত্তেজনাকর খবরের জন্যও কোনও মন্তব্য করব না। যে কোনও বোলারের বিরুদ্ধে খেলার সময় আমার লক্ষ্য থাকে লাল বা সাদা বলের ওপর। এ কথা ঠিক যে, আমি কোনও বোলারের দক্ষতাকে শ্রদ্ধা করি। কাগিসো রাবাডা সম্পর্কেও আমি একই কথা বলেছিলাম।
একইসঙ্গে কোহলি বলেছেন, ভালো বোলারদের ভালো করে পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলছেন, যে বোলাররা বিশ্বক্রিকেটে প্রভাব ফেলেছেন, তাঁদের শক্তি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু একইসঙ্গে যে কোনও বোলারের বিরুদ্ধে রান করার প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। এই ম্যাচের ফলাফল শুধুমাত্র আমির বা আমার পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে না।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোহলির বেশ কয়েকটি স্মরণীয় পারফরম্যান্স রয়েছে। কিন্তু মিরপুরে তাঁর ১৮৩ রানের ইনিংস নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি দলের অন্যান্যদের অবদানের কথাও উল্লেখ করেছেন। কোহলি বলেছেন, মিরপুরে রোহিতও খুব ভালো ব্যাটিং করেছিল। আমাদের একটা বড় পার্টনারশিপ হয়েছিল। এমএস (ধোনি) ও রায়না (সুরেশ) ম্যাচটা ফিনিস করেছিল। আর শুরুটা করেছিলেন সচিন পা জী(তেন্ডুলকর)।
কোহলি বলেছেন, আবেগ বা উচ্ছ্বাস নয়, আগামীকালের ম্যাচ নিয়ে তাঁদের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।


অধিনায়ক বলেছেন, ভালো খেলতে পারলে আমরা যে কোনও দলকে হারাতে পারি। বিপক্ষে কোন দল রয়েছে, তা ভেবে আমরা কোনও বদল করি না। খেলোয়াড়দের যে কোনও দলের বিরুদ্ধেই পেশাদার হওয়াটা জরুরি।

একইসঙ্গে কোহলি বলেছেন, আমাদের কাছে কোনও ম্য়াচই স্পেশ্যাল নয়।  বিপক্ষ কোন দল, তা না ভেবে প্রত্যেকটা ম্য়াচকে একই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখাটা আমাদের দায়িত্ব। এজন্যই বিশ্বক্রিকেটে আমরা প্রথমসারির দল।