নয়াদিল্লি: অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাটিং বিক্রম ঋষভ পন্থকে আলোচনার শিরোনামে নিয়ে এসেছে।এর আগেই  উইকেটকিপিংয়ে ত্রুটির জন্য সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল এই তরুণ ক্রিকেটারকে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ঝলমলে সেঞ্চুরি ও শেষ তথা নির্ণায়ক টেস্টে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে ঋষভ বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি লম্বা দৌড়ের ঘোড়া।  অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে ফিরে তাঁর সিনিয়র ঋদ্ধিমান সাহা বলছেন, উইকেটকিপিংয়ে যে ত্রুটি রয়েছে, তা শুধরে উঠছেন ঋষভ। আর উইকেটকিপিং নিয়ে অযথা ঋষভের সমালোচনা একেবারেই না-পসন্দ ঋদ্ধির। তিনি বলেছেন, কেউ প্রথম শ্রেণীতেই বীজগণিত শিখে যায় না।


ভারতের টেস্ট দলে ঋদ্ধিই প্রথম পছন্দের উইকেটরক্ষক।  অস্ট্রেলিয়ায় পন্থের দুরন্ত পারফরম্যান্স তাঁর জন্য ভারতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এমন তত্ত্বকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ ঋদ্ধি।  তিনি বলেছেন, আমার সঙ্গে পন্থের খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। প্রথম একাদশে যেই-ই থাকুক না কেন, আমরা একে অপরকে সাহায্য করি। ওর সঙ্গে আমার কোনও ধরনের সংঘাত নেই।

ঋদ্ধি বলেছেন, কে এক নম্বর, কে দুই নম্বর, এভাবে আমি মোটেই দেখি না। যে ভালো করবে দল তাকেই সুযোগ দেবে। আমি আমার কাজটা করতে পারি। কিন্তু দলে বাছাইটা আমার হাতে নেই। তা নির্ভর করছে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর।

পাশাপাশি ঋদ্ধি ২৩ বছরের পন্থের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেছেন। পন্থের অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংসে ভর করে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টেস্ট সিরিজ ২-১ জিতে নেয় ভারত।

কিপিং গ্লাভস হাতে পন্থের পারফরম্যান্স প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়ে। এ ব্যাপারে ঋদ্ধি বলেছেন, কেউ তো আর প্রথম শ্রেণীতে বীজগণিত শেখে না। ধাপে ধাপেই এগোতে হয়। ও নিজের সেরাটাই দিচ্ছি এবং অবশ্যই উন্নতি করবে। ও এখন অনেক পরিণত ও উন্নতি করেছে। দীর্ঘমেয়াদে তা ভারতীয় দলের জন্যই ভালো হবে। ওর পছন্দের টি ২০ ও একদিনের ফরম্যাটে দলে জায়গা হারানোর পরও ও যেভাবে ওর সদিচ্ছা দেখিয়েছে, তা প্রকৃত অর্থেই ব্যতিক্রমী।

ব্রিসবেনে নায়কোচিত ইনিংসের পর ফের ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে তুলনা শুরু হয়েছে পন্থের। এ ব্যাপারে ঋদ্ধি বলেছেন, ধোনি ধোনিই থাকবে। প্রত্যেকেরই নিজস্বতা রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলেছিলেন ঋদ্ধি। ওই টেস্টে দুই ইনিংসে ঋদ্ধির রান যথাক্রমে ৯ ও ৪। ওই টেস্টেই দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। বাকি তিনটি টেস্টে ঋদ্ধি আর খেলেননি।

৩৬ বছরের ঋদ্ধি বলেছেন, খারাপ সময় সবারই আসে। পেশাদার খেলোয়াড়কে এই ওঠা-পড়া মেনে নিতে হয়। আমি রান পাইনি, তাই পন্থ সুযোহ পায়। এটা খুবই সহজ ব্যাপার। আমি সব সময়ই আমার দক্ষতার উন্নতির দিকেই মনোনিবেশ করেছি। এখনও এই মানসিকতার ব্যতিক্রম হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই সিরিজ জয়কে বিশ্বকাপ জয়ের থেকে কোনও অর্থে কম বলতে নারাজ ঋদ্ধি। দলের একাধিক প্রথমসারির খেলোয়াড় চোট পাওয়ার পরও যেভাবে পুলিশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা উল্লেখ করেই এ কথা বলেছেন তিনি।

ঋদ্ধি বলেছেন, আমি না খেললেও প্রত্যেক মহুর্ত উপভোগ করেছি।

তিনি আরও বলেছেন, এই পরিস্থিতি না এলে রিজার্ভ বেঞ্চের এত গভীরতা থাকার কথা দলের হয়ত জানার সুযোগ হত না।

অস্ট্রেলিয়া সফরের পর এবার আসন্ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের দিকে নজর ঋদ্ধির।