সারা বিশ্বেই এখন চলছে চ্যাটজিপিটি নিয়ে উত্তেজনা চলছে। যাঁরা ইতিমধ্যে এটি ব্যবহার করেছেন, তাঁরা এর কার্যকারিতায় রীতিমতো বিস্মিত ও অভিভূত। কিন্তু সেই বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতে মানুষের মনে তৈরি হচ্ছে শঙ্কা। সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এ কলাম লিখেছেন হেনরি উইলিয়ামস নামের এক কপিরাইটার। তাঁর লেখার শিরোনাম হচ্ছে, ‘আই অ্যাম আ কপিরাইটার, অ্যান্ড আই অ্যাম প্রিটি শিওর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স উইল টেইক মাই জব;’ অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাঁর কাজ কেড়ে নেবে, এই বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। 


কেন এমন মনে হল হেনরি উইলিয়ামসের?


সম্প্রতি তিনি চ্যাটজিপিটিতে লেখেন, ‘হোয়াট ইজ পেমেন্ট গেটওয়ে’ বা ‘পেমেন্ট গেটওয়ে কী’। তাঁর বক্তব্য হল, উত্তরে চ্যাটজিপিটি যে প্রবন্ধ লিখে দিল, তা দেখে চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। প্রবন্ধের বক্তব্য কিন্তু চিত্তাকর্ষক ছিল। ব্যাকরণ ও বাক্যগঠন একদম যথাযথ, যদিও লেখার মধ্যে যান্ত্রিকতার ছাপ আছে। তবে তা ঠিক করার পর সেই যান্ত্রিকতাও দূর করা যায়।   


আর এই পরিস্থিতিতে দেখে আঁতকে উঠেছেন হেনরি উইলিয়ামস। যে লেখা লিখে তিনি ৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত আয় করেন, সেই লেখা চ্যাটজিপিটি ৩০ সেকেন্ডে লিখে দিল। এর সীমাবদ্ধতা আছে, শব্দবহুল বাক্য লেখার প্রবণতার সঙ্গে অনেক সময় ভুল তথ্য দেওয়ার প্রবণতাও তার আছে। কিন্তু কোম্পানি যদি দেখে এই প্রযুক্তির সাহায্যে ২০ জনের কাজ ১০ বা ৫ জন দিয়ে করানো সম্ভব, তাহলে এই প্রযুক্তি গ্রহণ করতে তারা দ্বিধা করবে না, এটাই পুঁজির ধর্ম। 


আরও পড়ুন, চ্যাটজিপিটি নিয়ে চিন্তায় ঘুম ছুটেছে বিশ্বের ! ভারতে কী হবে ? কী ভাবছে TCS


হেনরি বলছেন, ভবিষ্যতে তাঁর মতো লেখক ও সম্পাদকের চাহিদা একেবারে ফুরিয়ে যাবে না, তবে অনেকটাই কমে যাবে। তখন মানুষের কাজ হবে চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে হাজার হাজার কপি তৈরি করা এবং সেগুলোর সত্যাসত্য নিরূপণ করা। কারণ, আগেই বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি কিছু সময় ভুল তথ্য দেয়। মানুষের কাজ হবে সেগুলো সংশোধন ও অনুমোদন করা। তাঁর শঙ্কার জায়গা হলো, এই পরিস্থিতিই–বা কত দিন থাকবে। চ্যাটজিপিটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তা আরও ক্ষুরধার হবে। ফলে একসময় তার কার্যক্ষমতা আরও বাড়বে এবং প্রায় শতভাগ নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারবে, সেই দিনও বোধ হয় খুব দেরি নেই।