প্রসেনজিৎ সাহা, আগরতলা: দাম্পত্য জীবনের শুরু করেছিলেন সবেই। একমাসও কাটেনি, শোকের পাহাড় নেমে এসেছে জীবনে। সেই ধাক্কা সামলে স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকে নিয়ে ত্রিপুরা সফরে বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সেখানে শোকগ্রস্ত রিঙ্কুকে নিয়ে শান্তিকালী আশ্রমে পৌঁছলেন তিনি। সেখানে স্ত্রীর কষ্ট লাঘবের প্রার্থনা করলেন দিলীপ। (Dilip Ghosh)

Continues below advertisement

সম্প্রতি ছেলে প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয় দাশগুপ্তকে হারিয়েছেন রিঙ্কু।  রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয়, একমাত্র সন্তানও। ছেলেকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা চলছে বিজেপি-র মহিলা মোর্চার নেত্রী রিঙ্কুর। সেই আবহে ত্রিপুরা সফরে স্বামীর সঙ্গী হন তিনি। সেখানে পৌঁছে আগরতলায় শান্তিকালী আশ্রমে যান। (Rinku Majumdar)

আগরতলার আশ্রমে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান প্রাপ্ত, স্বামী চিত্ত মহারাজের কাছে আশীর্বাদ নিতে পৌঁছন দিলীপ ও রিঙ্কু। সেখানে নিজের জন্য নয়, স্ত্রীর জন্যই আশীর্বাদ চান দিলীপ। সদ্য পুত্রহারা রিঙ্কু যেন শান্তিতে বাকি জীবনটা কাটাতে পারেন, প্রার্থনা করেন দিলীপ। তিনি বলেন, “আশীর্বাদ করুন। (স্ত্রীকে দেখিয়ে) জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছে ও। একমাত্র সন্তান ছিল। কিছুদিন আগে মারা গিয়েছে।”

Continues below advertisement

সেই সময় হাতজোড় করে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রিঙ্কু বলে ওঠেন, “আজ আটদিন।” এর পর দিলীপ বলেন, “আপনার কাছে ছুটে এসেছি। আশীর্বাদ করুন যাতে বাকি জীবনটা শান্তিতে চলে। পারিবারিক জীবনে যেন দায়িত্ব পালন করতে পারি, রাষ্ট্রের প্রতি যেন দায়িত্ব পালন করতে পারি।” ত্রিপুরা পৌঁছেই সটান যে তাঁরা আশ্রমে পৌঁছে গিয়েছেন, পাশ থেকে সেকথা বলতে শোনা যায় একজনকে। 

দিলীপ ও রিঙ্কুর বিয়ের একমাস কাটার আগেই, সম্প্রতি নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয়ের দেহ উদ্ধার হয়। পেশায় তথ্য়প্রযুক্তি কর্মী সৃঞ্জয়ের অগ্ন্যাশয়ে সমস্যা ছিল বলে ধার পড়ে ময়নাতদন্তে। ছেলের ঠান্ডা শরীরে পাশে বিধ্বস্ত চেহারার রিঙ্কুর পাশে সেই সময় ঠায় ছিলেন দিলীপ। তিনিও যে গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত, সেকথাও জানান। দিলীপ জানিয়েছিলেন, সৃঞ্জয়ের সঙ্গে অনেকদিনের পরিচয় ছিল তাঁর। একসঙ্গে খেলা দেখতে গিয়েছেন। সৃঞ্জয়ের উপর মায়া পড়ে গিয়েছিল তাঁরও। রিঙ্কুর ছেলের মৃত্য়ুতে তিনি কতটা ধাক্কা খেয়েছেন, তা বোঝা গিয়েছিল দিলীপের মন্তব্যেও। তাঁর বক্তব্য ছিল, “পুত্রসুখ হল না, কিন্তু পুত্রশোক হয়ে গেল।”

সেই থেকে কার্যত আড়ালেই ছিলেন রিঙ্কু। আগের মতো সংবাদমাধ্যমের সামনে দেখা যায়নি তাঁকে। সকাল সকাল ইকো পার্কে দিলীপের পাশেও দেখা যাচ্ছিল না। তবে ত্রিপুরার আশ্রমে একসঙ্গে দেখা গেল তাঁদের।