প্রসেনজিৎ সাহা, ত্রিপুরা: দেশে নতুন করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ (Daily COVID Cases)। তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ছবি ধরা পড়ল আগরতলায় (Agartala News)। সেখানে মজুত করে রাখা মেয়াদোত্তীর্ণ কোভিড টিকার ভায়াল বা শিশি বালতিতে ভরে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দিতে দেখা গেল হাসপাতাল কর্মীদের। তা নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে ফেলে রাখার ফলেই টিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। সেগুলি ফেলে দেওয়ার ফলে কয়েক লক্ষ মানুষ টিকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন বলে দাবি করছেন তাঁরা। 


পড়ে থেকে টিকার মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ


আগরতলার ইন্দিরা গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের ঘটনা (Indira Gandhi Memorial Hospital)। বুধবার সকালে ওই হাসপাতালের কর্মীদেরই মেয়াদোত্তীর্ণ টিকার ভায়াল বালতিতে ভরে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে দেখা যায় (Expired COVID Vaccines)। এবিপি আনন্দের প্রতিনিধির ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই দৃশ্য। হাসপাতালের কোল্ডচেইন রুমে সেগুলি মজুত করে রাখা ছিল সেগুলি। কার্যকারিতার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়াতেই সেগুলি ফেলে দিতে হল বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে (Tripura News)। 


এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণে শান দিয়েছেন রাজ্য়ের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা  সুদীপ রায় বর্মন (Sudip Roy Barman)। তিনি জানিয়েছেন, গত ৪ জুন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে (Manik Saha) চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। আগাম সতর্ক করেছিলেন যে, প্রচুর পরিমাণ টিকার মেয়াদ পেরোতে চলেছে। তার আগে যেন দ্রুত সেগুলিকে কাজে লাগানো যায়। কিন্তু সুদীপের অভিযোগ, তাঁর আবেদনে কর্ণপাত করেনি ত্রিপুরা সরকার। বরং কোনও ভায়াল অপচয় হওয়ার মতো নেই, সব কাজে লাগানো হচ্ছে বলে দায়সারা উত্তর এসেছিল। তাই এ দিনের ঘটনা সামনে আসতেই ফের সরব হয়েছেন সুদীপ। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee : হাসিমারায় আদিবাসীদের নাচের ছন্দে পা, ধামসা-মাদলের তালে মাতলেল মমতা


সুদীপ জানিয়েছেন, সব জায়গাতেই প্রায় একই পরিস্থিতি। আগামী ১৭ জুন আরও এক ব্যাচ কোভিড টিকা নষ্ট করে দেওয়া হবে বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, পড়ে থেকে কোভিশিল্ট-সহ কমপক্ষে ৩০ হাজার টিকার ভায়াল নষ্ট হয়েছে এ যাবৎ। একটি ভায়াল থেকে ১০ জনকে টিকা দেওয়া যায়। অর্থাৎ সরকারি গাফিলতিতে রাজ্যের ৩ লক্ষ মানুষ করোনার টিকা থেকে বঞ্চিত হলেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। খুব শীঘ্রই এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। এ নিয়ে ত্রিপুরা সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে স্টেট ভ্যাকসিন ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি তিনি।


টিকাকরণ ঘিরে রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত বিরোধীদের


একই সঙ্গে টিকাকরণ নিয়েও রাজ্য়ের সঙ্গে সঙ্ঘাত বেঁধেছে সুদীপের। রাজ্যের মানুষকে বিনামূল্য়ে টিকা দেওয়ার দাবি তুলেছেন সুদীপ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে যে খবর মিলেছে, তাতে এক একটি টাকার জন্য় ২৫০ টাকা দাম রাখা হয়েছে। ত্রিপুরা সরকারের এই সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করছেন সুদীপ।