সন্দীপ সরকার, ত্রিপুরা : দীর্ঘ ৫ দশকের প্রতিপক্ষ হলেও এবারই প্রথম জোট করে বিধানসভা ভোটে লড়ছে বাম (Left) ও কংগ্রেস (Congress)। ক্ষমতাসীন বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক মঞ্চে একসঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে তারা। এবার তাদের বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় বোমাবাজির রাজনীতির সংস্কৃতি আমদানির অভিযোগ তুললেন মানিক সাহা (Manik Saha)।


উত্তর-পূর্বের রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ভোট দেওয়ার আগে বলেছেন, 'বোমার কালচার বামেদের। বোমার কালচার কংগ্রেসের। কোনওরকম প্ররোচনায় পা দেবেন না। প্রশাসন সবদিকে নজর রাখছে। এই মুহূর্তে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নির্বাচন কমিশনের অধীনে, তারা বিষয়টির দিকে নজর রাখছে বলেই প্রত্যাশা করি।'


বোমাবাজি সিপিএম কর্মীর বাড়িতে


ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে ত্রিপুরায় অশান্তি। গতকাল রাতে বিশালগড়ে দুই বাম কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয়।  অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে। রাতেই এসডিপিও-র নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। চলে ধরপাকড়। বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। 


বড়দোয়ালি কেন্দ্রে লড়ছেন মানিক সাহা


ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বড়দোয়ালি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের আশিস সাহা। আগরতলা কেন্দ্র থেকে লড়ছেন কংগ্রেসের সুদীপ রায় বর্মন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিন্হা দাঁড়িয়েছেন কৈলাশহর কেন্দ্রে। বনমালিপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী লড়ছেন দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম বিধানসভা আসনে।


ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০টির মধ্যে ২৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। রামনগর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ত্রিপুরার রাজ্য সভাপতি পীযূষকান্তি বিশ্বাসের ছেলে পূজন বিশ্বাস। কংগ্রেস ছাড়ার পরে ত্রিপুরা রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোৎকিশোর দেব বর্মন এবার কিং মেকার হওয়ার দৌড়ে। কারণ, আদিবাসী অধ্যুষিত অন্তত ২০টি বিধানসভায় খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে তাঁর দল তিপ্রামথা। 




২ মার্চ ভোটের ফল ঘোষণা


ত্রিপুরা বিধানসভার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিভিন্ন দলের মোট ২৫৯ জন প্রার্থী। ভোটার সংখ্যা ২৮ লক্ষ ১৪ হাজার ভোটার। মোট বুথের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৩৭। এর মধ্যে স্পর্শকাতর ও অতিস্পর্শকাতর মিলিয়ে বুথের রয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০টি। ভোট নিরাপত্তায় নামানো হয়েছে ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ২ মার্চ ভোটের ফল ঘোষণা। ২০১৮-র নির্বাচনে ত্রিপুরায় চমকপ্রদ ফল করে ২ দশকের বাম শাসনকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু, প্রবল অন্তর্বিরোধের জেরে শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদলে, লড়াইয়ে নেমেছে তারা। 


আরও পড়ুন- দলবদল ধ্রুবক বঙ্গ রাজনীতিতে, তবে বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগে প্রশ্নের মুখে সংস্কৃতি